Ajker Patrika

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট: ৪ মাস পর চালু হবে স্পিডবোট চলাচল 

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৪৬
বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট: ৪ মাস পর চালু হবে স্পিডবোট চলাচল 

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে গত চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে স্পিডবোট চলাচল। দীর্ঘ চার মাস ধরে বেকার পড়ে থাকায় স্পিডবোট চালক এবং মালিকেরা বেকার সময় পাড় করছেন। খুব শীঘ্রই স্পিডবোট চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন বাংলাবাজার ঘাট স্পিডবোট মালিক সমিতি। স্পিডবোট চালু করার জন্য সার্বিক প্রক্রিয়া চলছে এবং এরই মধ্যেই অনিবন্ধিত স্পিডবোটের নিবন্ধন দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে প্রায় ২ শতাধিক স্পিডবোটে, ৮৭ টি লঞ্চ এবং ১৬ থেকে ১৮টি ফেরি রয়েছে। তবে বেপরোয়া গতি, চালকদের উগ্রতা, নিয়ম না মেনে চলাচল করায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যাও বহু রয়েছে। সর্বশেষ গত ৩ মে লকডাউনে চলাচলের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও শিমুলিয়া ঘাট থেকে ৩১ জন যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় একটি স্পিডবোট। ভোর ছয়টার দিকে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটের কাছে এসে নদীর পাড়ে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যায় বোটের ২৬ যাত্রী। চলাচলের অনুমতি না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল স্পিডবোট চলাচল। এরই মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার ওই স্পিডবোট চালকের ডোপ টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ হলে নৌরুটের অন্যান্য চালকদের ডোপ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই দুর্ঘটনায় স্পিডবোট চালক শাহ আলম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। 

এদিকে বাংলাবাজার স্পিডবোট মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, স্পিডবোট চালু করার জন্য সকল প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই নৌরুটের ১৩৪টি স্পিডবোটের রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর। রেজিস্ট্রেশনকৃত স্পিডবোটের মধ্যে শিমুলিয়া ঘাটের ৩১ টি, মাঝিকান্দি ঘাটের ২৪টি এবং বাংলাবাজার ঘাটের ৭৯টি বোট রয়েছে। এবং একই সঙ্গে গত ১৯ আগস্ট সদরঘাটের প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক কার্যালয়ের আয়োজনে শিমুলিয়াতে স্পিডবোট চালকদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় ওই দিন ১৩৪ জন চালক উত্তীর্ণ হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চালকদের সনদও দেওয়া হবে শীঘ্রই। এ ছাড়া চলাচলের জন্য রুট পারমিট, সার্ভে সনদ প্রাপ্তির কার্যক্রম চলছে। নিয়ম অনুযায়ী শীঘ্রই এগুলো সম্পন্ন হবে। 

শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর স্পিডবোট চালকদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনা হয়েছে। তবে স্পিডবোটের কোনো রেজিস্ট্রেশন না থাকা। চালকদের লাইসেন্স না থাকাসহ নানা কারণেই স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে। তবে স্পিডবোটের রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট, সার্ভে সনদ প্রদান এবং চালকদের পরীক্ষা নিয়ে যাচাই-বাছাই এর কাজ চলছে বলে জানা গেছে। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আবারও স্পিডবোট চলাচল শুরু হতে পারে। 

বাংলাবাজার স্পিডবোট মালিক সমিতি সূত্রে আরও জানা গেছে, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারী চালকেরাই এই নৌরুটে স্পিডবোট চালাবে। বাংলাবাজার ঘাটের চালকদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। পজিটিভ যারা ছিল তাদের সঙ্গে সঙ্গেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সকল প্রক্রিয়া শেষে আগামী মাস পরেই স্পিডবোট চালু হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। 

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান, ‘স্পিডবোট চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে বোটের রেজিস্ট্রেশন, চালকদের প্রশিক্ষণ সনদসহ সকল কার্যক্রম চলছে বলে জেনেছি। সার্বিক কাজ শেষ হলে হয়তো দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু হতে পারে।’ 

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত ৩ মে দুর্ঘটনার পর থেকে সকল স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে এই নৌরুটে। মূলত স্পিডবোটের কোনো রেজিস্ট্রেশন, চালকদের সনদ কিছুই এত দিন ছিল না। তবে রেজিস্ট্রেশন এবং চালকদের পরীক্ষা নিয়ে সনদ দেওয়ার কাজ চলছে। এর আগে বাংলাবাজার ঘাটের চালকদের আমরা ডোপ টেস্ট করিয়েছিলাম। স্পিডবোট চালু হওয়ার আগে আবারও ডোপ টেস্ট করা হবে।’ 

উল্লেখ্য, নৌরুটে স্পিডবোটের পাশাপাশি স্রোতের তীব্রতার কারণে বন্ধ রয়েছে সকল ফেরি চলাচল। শুধুমাত্র সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত