Ajker Patrika

প্রাইভেট কারে সাবেক স্বামী ও বন্ধুরা মিলে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৭: ৩৫
প্রাইভেট কারে সাবেক স্বামী ও বন্ধুরা মিলে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

প্রাইভেট কারে জোরপূর্বক তুলে মানিকগঞ্জ থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আসার পথে সাবেক স্বামীসহ চার বন্ধু মিলে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ সাবেক স্বামী ও তাঁর তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হয়নি।   

মামলায় আসামি হিসেবে সাবেক স্বামী মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার টুটিয়াম গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে আল-মামুন রশিদ (৩৮), বরিশাল বিমানবন্দর থানার গনপাড়া গ্রামের আব্দুল হাসেম মাঝির ছেলে আব্দুর রব মুন্না (৪৫), হাসু (৩৪) ও রিয়াজ (৩৫) নামের চারজনের নাম রয়েছে। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ওই গৃহবধূর (৪৫) সঙ্গে ২০১৮ সালে দৌলতপুর উপজেলার টুটিয়াম গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে আল-মামুন রশিদের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এর আগে ২০১১ সালে এক সেনাসদস্যের সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় তাঁর বিয়ে হয়। ওই সেনাসদস্য আরেকটি বিয়ে করায় কিছুদিন পর তাঁদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর আল-মামুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে প্রায় তাঁকে মারধর করা হতো। এ ঘটনায় গত বছর (২০২১ সাল) গৃহবধূ মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর গত বছর ১৫ নভেম্বর ওই গৃহবধূকে তালাক দেন আল-মামুন রশিদ। এরপর বিভিন্নভাবে তাঁকে হুমকিও দিতে থাকেন।   

গত শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে গৃহবধূ বাবার বাড়ি থেকে মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার সিনজুরী গ্রামে ফুফুর বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘিওর পাঁচ রাস্তার কাছে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছালে একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কার থেকে সাবেক স্বামী আল-মামুনসহ গাড়িতে থাকা তাঁর তিন বন্ধু মিলে তাকে জোর করে মুখ চেপে প্রাইভেট কারের পেছনে তুলে নেন। এ সময় রিয়াজ নামের এক যুবক গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর গৃহবধূকে জোরপূর্বক কোমল পানীয়র সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু পান করালে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর চলন্ত প্রাইভেট কারে পালাক্রমে আল-মামুন, আব্দুর রব মুন্না ও হাসু তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ফাঁকা ভিটায় হাত-পা বেঁধে তাঁকে ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন। 

পুলিশ রাতে বাহাদুরপুর কালুর মোড় এলাকা থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে গৃহবধূ রোববার (১৩ মার্চ) বিকেলে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় উল্লেখিত চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।   

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘খবর পেয়ে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতেই গৃহবধূকে উদ্ধার করি। পরদিন রোববার গৃহবধূ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নম্বর-১৫) গ্রহণ করে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠাই। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকেরা ধর্ষণ-সংক্রান্ত কোনো বিষয় জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। সোমবার বিকেলে গৃহবধূকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত