Ajker Patrika

ঝুঁকি জেনেও মোটরসাইকেলে দূরপাল্লার যাত্রা 

নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
Thumbnail image

ঈদ যাত্রায় বাস, ট্রেনের টিকিটের সংকটে দূরপাল্লার যাত্রায় মোটরসাইকেলের মতো ঝুঁকিপূর্ণ যান বেছে নিচ্ছে ঘরমুখী মানুষ। গাবতলী বাস টার্মিনাল কিংবা আমিন বাজার ব্রিজের মুখে দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল চালকদের যাত্রী ডাকতে দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন থেকেই। যেসব যাত্রী বাসের টিকিট পাচ্ছেন না তারাই মূলত মোটরসাইকেলে করে দূরপাল্লার যাত্রা করছেন। 

রোববার গাবতলি বাস টার্মিনালের সামনের বটতলায় এমন কয়েকজন ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা হয় যাত্রী পরিচয়ে ৷ দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, ফরিদপুর ও যশোরের যাত্রী খুঁজছেন এখানকার মোটরসাইকেল চালকেরা। দিনাজপুর যাওয়ার মতো কোন মোটরসাইকেল আছে কী—না জানতে চাইলে আশিক আহমেদ নামে এক চালক এগিয়ে আসেন। দিনাজপুরের জন্য ভাড়া চাইলেন ১ হাজার টাকা। আটশ টাকা বললেও তিনি রাজী হলেন না। 

কথা শেষ না হতেই শাহজাহান হোসেন নামে এক চালক আগ বাড়িয়ে বললেন, ‘ভাড়া বেশি চায় নাই ভাই। রাস্তায় পুলিশ ধরলে এর ডবল দিতে হইব। দিনাজপুরে অনেকেই ১ হাজার ৫০০, ২ হাজার টাকাতেও যায়। আপনে চাইলে যাইতে পারেন, লস হইব না।’ 

আশিক আবার বললেন, ‘আমি তেল খরচটা চেয়েছি শুধু। যেহেতু ওই পথেই আমি যাব তাই।’ 

এর মধ্যেই শাহজাহান হোসেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পেয়ে গেছেন। ১ হাজার ৩০০ টাকা ভাড়া মিটিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে তারা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন। যাত্রা করার আগে একে অপরের সম্পর্কে ভালো করে নাম, ধাম ও অন্যান্য পরিচয় জেনে নিলেন। যেন রাস্তায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে বোঝা না যায়, তারা ভাড়ায় যাচ্ছেন। মোটরসাইকেল যাত্রাটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় কি—না এমন প্রশ্নের জবাবে যশোরগামী এই যাত্রী বললেন, ‘বাইকে করে ঈদের সময় দূরপাল্লার যাত্রাটা একটু রিস্কি। কিন্তু ভালো কোন বাসের টিকিট পেলাম না৷ আবার সময় মতো পৌঁছাতে হবে। সবকিছু বিবেচনা করে বাইকে যাওয়াটাই ভালো মনে হলো। যদিও ভাড়া একটু বেশি। তারপরও আশা করি ভালোভাবেই যেতে পারব।’ 

কাছাকাছি হওয়ায় এই সড়কে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার যাত্রীই বেশি। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে দুজন যাত্রী ভাড়া মিটমাট করে একজন রওনা হলেন বগুড়া আর অন্যজন সিরাজগঞ্জ। বগুড়ার যাত্রীকে ভাড়া বাবদ গুনতে হয়েছে ৯০০ টাকা আর সিরাজগঞ্জের যাত্রী ভাড়া মিটিয়েছেন ৭০০ টাকা। 

এদিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের অবস্থা স্বাভাবিক, যাত্রীদের চাপ কম। তারপরও নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। মো. আকাশ হোসেন নামে এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়ার বাসগুলোর টিকিট নেই। একটা এসি বাসের সিট ফাঁকা আছে কিন্তু টিকিটের দাম চায় ১ হাজার ৫০০ টাকা। অন্য সময় যা ৯০০ টাকা। এত বাড়তি দামে আমার পক্ষে টিকিট সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। অল্প দামের টিকিট খুঁজেছি।’ 

কাউন্টারগুলোতে কুষ্টিয়াগামী নন এসি বাসগুলোর ইঞ্জিন কভারের জন্য ৬৫০ টাকা দাবি করা হচ্ছে। যাত্রীদের অনুরোধেও এই টাকা কমানো হচ্ছে না। 

তবে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার গাড়িগুলো সময় মতো ছেড়ে যাচ্ছে ৷ শিডিউল বিপর্যয়ের নেই বললেই চলে। বেশ কয়েকটি কাউন্টারে কথা হলে তারা এমনটি জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত