Ajker Patrika

নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে ৬ দাবি শ্রমিক সংগঠনগুলোর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৮: ১৪
Thumbnail image

দেশের অধিকাংশ শ্রমিক জীবিকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের মৃত্যু কিংবা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণের ঘটনাও নতুন নয়। দুর্ঘটনার শিকার এসব শ্রমিক ক্ষতিপূরণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এমন অবস্থায় শ্রমিকের মিছিল, ধর্মঘটের অধিকারও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। 

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক শ্রমিক স্মৃতি দিবস উপলক্ষে আইইউএফ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ওয়ার্কার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ আয়োজনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা জানান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। 

সভার শুরুতেই ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন আইইউএফ এশিয়া-প্যাসিফিক ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, দেশের শিল্পমালিকেরা বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ অনিরাপদ কর্মপরিবেশ বজায় রেখে অধিক মুনাফা পাওয়ার দিকেই বেশি মনোযোগী। তাজরিন ফ্যাশন, রানা প্লাজা, ট্যাম্পাকো, হাসেম ফুডসে শিশুসহ শ্রমিকদের মর্মান্তিক জীবনহানি অনিরাপদ কর্মস্থলের ধারাবাহিক পরিণতির কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। বর্তমানে কিছু কারখানার নিরাপত্তা কিছুটা বাড়লেও অধিকাংশ কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নেই। তারা আইন লঙ্ঘন করে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করছে। 

সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, সুন্দর জীবন ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন। কিন্তু এই শ্রমিকেরা তাঁদের কাজের যথাযথ দাম পান না, শ্রদ্ধাও পান না। এখানে জীবন গেলেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না। 

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ আইন যথেষ্ট নয় ৷ কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত পরিবেশ অত্যন্ত ভয়াবহ। শ্রমিকের নিরাপদ কর্মপরিবেশ জরুরি। সম্প্রতি শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকারও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আইএলও শোভন কাজের কথা বলছে। শোভন কাজ মানে শোভন মজুরি, শোভন কর্মঘণ্টা, শোভন পরিবেশ। 

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শ্রমিকদের কাছে গিয়ে মাঠে কাজ করতে হবে। শ্রমিকদের পক্ষে আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে। মালিকেরা পুলিশ, সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা, মামলা করবেই। শ্রমিকদের এরা প্রতিনিয়ত শোষণ করছে। আমাদের এক হতে হবে। এ দেশে শ্রমিক-কৃষকের সংখ্যা বেশি। নিজেদের ন্যায্য অধিকারের জন্য আজ মিছিল, ধর্মঘট নিষিদ্ধ করছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে সামনে আমাদের দাবিগুলো আদায় করতে পারব।’ 

সভায় কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক হত্যা বন্ধ করতে সরকার ও মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছয়টি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো—কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক হত্যাকাণ্ড ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইএলও রোডম্যাপ বাস্তবায়ন, পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক আইএলওর মৌলিক কনভেনশন ১৫৫ প্রতিপালন আইন প্রণয়ন, নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিতে ত্রিপক্ষীয় তদারকি কমিটি গঠন, প্রশিক্ষিত পরিদর্শক দ্বারা নিয়মিত কারখানার ঝুঁকি মূল্যায়ন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ প্রদানে ব্যর্থ ও আইন ভঙ্গকারী নিয়োগকর্তাদের জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা এবং আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আইন তৈরি করা। 

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ছরোয়ার, শ্রমিক নেতা শামীম ইমাম, আব্দুল মান্নান, মো. কামরুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম, মো. রেজাউল হক, মো. সোহাগ মিয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত