Ajker Patrika

‘টাকা দিয়ে টেনশন কিনলাম’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ০০: ১৫
‘টাকা দিয়ে টেনশন কিনলাম’

কিস্তি কীভাবে দেব বুঝতে পারতেছি না। কষ্টে বুকটা ফাইট্টা যাইতাছে। আজকে তিনটা দিন, খাওয়া নাই, দাওয়া নাই, খালি টেনশন আর টেনশন। টাকা দিয়ে কি আমি টেনশন কিনলাম, এটাই মনে হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১ এর সামনে আজকের পত্রিকাকে এসব কথা বলছিলেন মালয়েশিয়াগামী মো. আবু সাঈদ শিকদার।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোয় অনিয়মের কারণে ৪ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের জন্য আবার দেশটির শ্রমবাজার খোলে। তখন আবারও চক্র সক্রিয় হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। তাদের কোটা পূরণ হয়েছে। যাঁরা এরই মধ্যে অনুমোদন ও ভিসা পেয়েছেন ৩১ মের (আজ শুক্রবার রাত ১২টা) মধ্যে তাঁদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে হবে। 

দুই মাসের বেশি আগে মালয়েশিয়া সরকার সময় বেঁধে দিলেও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সরকার বেঁধে দেওয়া খরচের কয়েক গুণ টাকা নিলেও তাদের অবহেলায় বহু মানুষ এখন বিপদে পড়েছেন। সময় আর হাতে না থাকায় উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই এখন বিমানবন্দরে ভিড় করছেন মানুষ। টিকিট না পেয়ে প্রায় ৩১ হাজার বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারছেন না। 

পটুয়াখালী সদর থেকে আসা মো. আবু সাঈদ শিকদার এমনই একজন। অনেক দিন আগেই মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করেন। এরপর পরিচিত এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ভিসা পান। শুরুতে এক লাখ টাকা দেন। পরে আরও ৪ লাখ টাকাসহ মোট ৫ লাখ টাকা দেন তিনি। সব কাজ শেষে তাঁকে টিকিট দেওয়ার কথা থাকলেও এজেন্সি থেকে তা আর দেওয়া হয়নি।

টিকিটের বিষয়ে আবু সাঈদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিন দিন ধরে বিমানবন্দরের ভেতরেই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেছি। খাওয়া নাই, ঘুম নাই, শুধু ঘুরতেছি। অনেকে টিকিট নিয়ে আসে। আমার সঙ্গের কারোর ২টায়, কারোর ৫ টায় ফ্লাইট। কিন্তু আমার কখন তা জানি না। একেক সময় একেক কথা বলে। গত তিন দিন এভাবেই চলছে। 

তিনি বলেন, ‘আজ সর্বশেষ বিকেল ৫টার কথা বলে, তা-ও হয়নি। এরপর সন্ধ্যা ৭টার কথা বলল, তা-ও হয়নি। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেছি। অপেক্ষা আর শেষ হচ্ছে না। এভাবেই চলছে।’

সাঈদ বলেন, ‘পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছি। সুদের ওপর, আর কিছু টাকা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের কাছ থেকে ধারদেনা করেছি। কিছুদিন পর দিয়ে দেব। এখন জানি না, না গেলে এই টাকাগুলো কীভাবে শোধ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত