Ajker Patrika

পাকা সড়কে ইটভাটার মাটি, দুর্ভোগে ৭ ইউনিয়নের মানুষ 

অনিক সিকদার, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)
Thumbnail image

সামান্য বৃষ্টিতেই পাকা সড়কগুলো যেন কাদামাটির সড়কে পরিণত হয়। বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি পরিবহনের জন্য এসব রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সেসব মাটি সড়কে পড়ে স্তূপ জমে যায়। যা সামান্য বৃষ্টিতেই কাদায় পরিণত হচ্ছে। এতে পিচ্ছিল সড়কে যখন–তখন উল্টে যাচ্ছে যান। ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

গত কয়েক মাস ধরে এ চিত্র রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির সাত ইউনিয়নের। আজ সোমবার ভোরের বৃষ্টিতেও ইসলামপুর, বহরপুর, নবাবপুর, নারুয়া, জঙ্গল, জামালপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি রাস্তা কাদায় পরিণত হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে জনসাধারণ।

দীর্ঘদিন ধরে জেলায় শতাধিক ইটভাটার মাটি ট্রাকে পরিবহন করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ইটভাটার মালিকেরা জনদুর্ভোগকে পাত্তা না দিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিন দেখা যায়, বালিয়াকান্দি–নারুয়া, বালিয়াকান্দি–সোনাপুর, বালিয়াকান্দি–রাজবাড়ী সড়কে আজ কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাস্তায় চলাচলকারী মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, অটোভ্যান, ইজিবাইকসহ পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। প্রতিটি ইটভাটার সমানে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা পানিতে ভিজে পিচ্ছিলে পরিণত হয়েছে। এতে যানগুলো স্বাভাবিক গতিতে যেতে পারছে না।

পাটকিয়াবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক উত্তম কুমার গোস্বামী বলেন, ‘বালিয়াকান্দিতে ১২টি ইটভাটার সামনের সড়কগুলো বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ।’

রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রুমি আক্তার বলেন, ‘বৃষ্টি এলেই আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। শুনেছি ভাটার মালিকেরা প্রভাবশালী হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না প্রশাসন। অথচ সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।’

স্থানীয় আকমল মিয়া বলেন, বালিয়াকান্দির বিভিন্ন ইট ভাটার সামনে মাঝে মাঝেই হালকা বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এতে সড়ক দিয়ে হেঁটে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্য চলে আসছে। কিছুদিন আগেও বেশ কয়েকটি ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ নানা যান উল্টে গিয়েছিল। এতে চালকেরা আহত হন।

স্থানীয় অমৃত মালাকার বলেন, পিচ্ছিল সড়কে যখন–তখন যান উল্টে যাচ্ছে। তবে এত কিছুর পরও প্রশাসন কার্যকরী ভূমিকা রাখছে না। এতে সহজে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন ভাটা ব্যবসায়ী ও মাটি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সদর ইউনিয়নের জাবোরকোলে অতিরিক্ত কাঁদার জন্য গাড়ি ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন চালক ও পাশেই একটি পিকআপ না এগোতে পেরে অবস্থান করছে।বালিয়াকান্দি টিএমবি ব্রিকস ইটভাটার মালিক মোফাজ্জেল হোসেন মিঠু বলেন, ‘ভোরের বৃষ্টিতে ইটভাটায় কাঁদা জমে যায়। সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। আমি নিজ উদ্যোগে আমার নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে রাস্তায় কাঁদা অপসারণ করে বালু দিয়েছি।’

সবাই এমন কাজ করছেন কিনা–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না।’

জানতে চাইলে বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বালিয়াকান্দির বিভিন্ন রাস্তা এখন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া জনসাধারণের ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় সতর্ক হয়ে চলার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইটভাটার মালিকদের অনেকবার সতর্ক করেছি। কোনো কোনো মাটি ব্যবসায়ীকে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছ। তবে এই সমস্যা যেন না ঘটে সে জন্য আমরা দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত