Ajker Patrika

ত্রেখাইল্লা খালের মুখ ভরাট জলাবদ্ধতার শঙ্কায় কৃষক

  • বর্ষায় জলাবদ্ধতা বাড়বে। কৃষিকাজে চরম সমস্যার সৃষ্টি হবে: কৃষক
  • দু-একজন প্রতিবাদ করে মামলা খেয়েছে, দাবি স্থানীয়দের।
  • সব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ইউএনও
রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
বিলুপ্তির পথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ত্রেখাইল্লা খাল। এর গতিপথ পরিবর্তন করে অধিকাংশ জায়গা দখল হয়ে গেছে। গড়ে তোলা হয়েছে শিল্পকারখানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিলুপ্তির পথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ত্রেখাইল্লা খাল। এর গতিপথ পরিবর্তন করে অধিকাংশ জায়গা দখল হয়ে গেছে। গড়ে তোলা হয়েছে শিল্পকারখানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিল্পায়নের আগ্রাসনে বিলুপ্তির পথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ত্রেখাইল্লা খাল। এর উৎসমুখ ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এতে একসময়ের প্রবহমান খালটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, খালটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক, না হলে বর্ষায় জলাবদ্ধতা বাড়বে। কৃষিকাজে চরম সমস্যার সৃষ্টি হবে।

স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্র জানায়, লবলং খালের উৎসমুখ শ্রীপুর উপজেলার ত্রেখাইল্লা এলাকায় অবস্থিত। এটি আরএস খতিয়ানভুক্ত ১ নম্বর দাগের সরকারি খাল (সাবেক দাগ ১৯৯১)। দীর্ঘদিন আগে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে ‘সিলমুন পাইপ অ্যান্ড ফিটিংস’ নামের একটি কারখানা খালের গতিপথ পরিবর্তন করে অধিকাংশ জায়গা দখল করে নেয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি খালের প্রবহমান অংশে মাটি ও বালু ফেলে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। খালটির এক পাশে শ্রীপুরের নয়াপাড়া গ্রাম, অপর পাশে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়ন। খিরু নদ থেকে উৎপত্তি লাউতি খাল হয়ে এ খাল শ্রীপুরের মধ্য লবলঙ্গ নদ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগ নদে মিশেছে। এটি শ্রীপুরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান পথ। একসময় কৃষিনির্ভর অর্থনীতির কেন্দ্রে থাকা খালটি এখন শিল্পের আগ্রাসনে বিলুপ্তপ্রায়। স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে শেড নির্মাণ করে খাল দখল করে। সম্প্রতি নয়াপাড়া রোডে কালভার্টসংলগ্ন এলাকায় পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে মাটি-বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে।

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ত্রেখাইল্লা খালটি একসময় আশপাশের মানুষের অনেক উপকারে আসত। বর্তমানে খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন। এখন কেউ প্রতিবাদও করতে পারে না। আমাদের দাবি, খালটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

স্থানীয় বাসিন্দা আরফান আলী বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই খালটি শেষ হচ্ছে। এখন তো খাল আমাদের প্রয়োজন থাকলেও বলতে পারছি না।’

কারখানা কর্তৃপক্ষের ভয়ে কেউ সাহস পাচ্ছে না। দু-একজন প্রতিবাদ করে মামলা খেয়েছে। জেল খেটেছে। এখন কে প্রতিবাদ করবে।’

মাওনা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘খাল দখল করে গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে, এটি আমরা সরেজমিনে নিশ্চিত হয়েছি। এখন খাল ছাড়াও কারখানার ভেতরে আরও সরকারি জমি রয়েছে কি না, তা নির্ধারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, ‘আইন অনুযায়ী কেউ খাল দখল বা গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে না। যদি এমনটি ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং খালটি উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

সিলমুন পাইপ অ্যান্ড ফিটিংস কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা রবিউল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে যতটুকু জানি, আমরা দখলের সঙ্গে জড়িত নই।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, ‘খালটির গতিপথ পরিবর্তন ও দখলের বিষয়টি আমরা সরেজমিনে দেখেছি। সব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত