Ajker Patrika

এক রশিতে সন্তান, অন্য রশিতে ঝুলছিল মায়ের মরদেহ

ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, ১৬: ৪৩
এক রশিতে সন্তান, অন্য রশিতে ঝুলছিল মায়ের মরদেহ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শম্ভুপুরে গৃহবধূ ও তাঁর তিন বছর বয়সী সন্তান ফাঁসিতে ঝুলেছিলেন বলে জানা গেছে। পরে হাসপাতাল থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন নিহতের শাশুড়িসহ বাড়ির অন্য সদস্যরা।

গৃহবধূর পরিবারের ধারণা, শাশুড়ি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সন্তানসহ তাঁকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।

আজ সোমবার সকালে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুরের পাক্কার মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন জোনাকি আক্তার (৩৫) ও সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশুসন্তান আলিফ। জোনাকি আক্তার ইতালিপ্রবাসী ফরহাদ মিয়ার স্ত্রী এবং উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামের রইছ বাবুর্চির মেয়ে। শিশু আলিফ জোনাকি ও ফরহাদ দম্পতির একমাত্র সন্তান।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ছয় বছর আগে পারিবারিকভাবে জোনাকি আক্তার ও ফরহাদ মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাঁদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়।

জোনাকি আক্তারের স্বজনদের অভিযোগ, শাশুড়ি বেবী বেগম বিভিন্ন সময় জোনাকি আক্তারকে গরিব পরিবারের মেয়ে বলে উপহাস করতেন। এ ছাড়া প্রথম দিকে ফরহাদ মিয়া তাঁর স্ত্রী জোনাকির কথা শুনলেও, পরে মায়ের কথায় বেশি সায় দিতেন। ফলে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

নিহতের স্বজনেরা জানান, গতকাল রোববার রাতেও মোবাইল ফোনে শাশুড়ির নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিলেন জোনাকি। এমনকি সন্তানসহ তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, গতকাল রাতে কল পেয়ে আজ সকালে নিহতের পরিবারের লোকজন জোনাকির শ্বশুরবাড়িতে আসেন। সেখানে সকালে ঘরের দরজা খোলা না দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। এ সময় বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে দরজা ভেঙে এক রশিতে সন্তান আলিফ ও অন্য রশিতে জোনাকিকে ঝুলতে দেখেন তাঁরা। পরে স্বজনেরা তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মা ও সন্তানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহতের খালাতো বোন পারভিন আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রাতে ফোনে করে আমাকে আসতে বলেছিল। সকালে এসে দেখি দরজা বন্ধ। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে শিশুসন্তানসহ জোনাকিকে ঘরের আড়ার সঙ্গে রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি।’

এ ঘটনায় ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, ঘটনার পর থেকে শাশুড়ি ও পরিবারের বাকি সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।’ 

পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম মোল্লা আরও বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে সেই ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত