Ajker Patrika

গাজীপুরে দুই মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি, যাত্রীদের ভোগান্তি

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে মহাসড়কে যানবাহনের জন্য রাস্তায় যাত্রীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে মহাসড়কে যানবাহনের জন্য রাস্তায় যাত্রীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আজ শুক্রবার (৬ জুন) ভোর থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অত্যধিক বেড়েছে। ঈদে বাড়ি ফিরতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মহাসড়কের পাশে যানবাহনের জন্য যাত্রীরা ভিড় করছে। এতে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট, যানবাহনের ধীরগতিতে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পুলিশ, যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে গাজীপুরের ৫০ ভাগ শিল্পকারখানায় ছুটি দেওয়া হয়েছে। এ কারণে গাজীপুর ও আশপাশের এলাকার উত্তরাঞ্চলগামী কর্মজীবী মানুষ একসঙ্গে সড়কে নেমে এসেছে। হাজার হাজার মানুষ এদিন রাত থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করায় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকা ও আশপাশের সড়কে উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবে, আজ শুক্রবার সকালে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীর ভিড় বাড়তে থাকে। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলায় যানবাহনের গতি কমতে শুরু করে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী, বোর্ড বাজার, চান্দনা চৌরাস্তা, শালনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীর চাপ চোখে পড়ে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপের কারণে সকাল ১০টার পর বোর্ড বাজার থেকে শালনা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে গাড়ির গতি কমে যায়।

অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, শফিপুর ও কলিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের অত্যধিক চাপ রয়েছে। এ কারণে এসব এলাকায় গাড়ির গতি কমার কারণে যানবাহনের গতি কমে গিয়ে চন্দ্রা ও আশপাশের প্রায় ১০ কিলোমিটারে এলাকায় যানজট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে মহাসড়ক দুটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। অনেকে সিট না পেয়ে বাসের ছাদে, ট্রাকে ও পিকআপ ভ্যানে করে বাড়ি যাচ্ছে। সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

অনেকে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও যানবাহন না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে বিকল্পভাবে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। কেউ কেউ খোলা ট্রাক, পিকআপ ভাড়া নিয়ে রওয়ানা হয়েছে। এভাবে অনেক নারী ও শিশুকেও যাত্রা করতে দেখা গেছে। এ রকম একটি ট্রাকের যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কী করব? বাড়িতে যেতে হবে। সকাল থেকে ঘণ্টার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এভাবে যাচ্ছি। দোয়া কইরেন।’

সিরাজগঞ্জগামী বিল্লাল হোসেন বলেন, শেষ দিনে ছুটি হওয়ায় গতকাল ভিড় বেশি হবে মনে করে আজ শুক্রবার সকালে রওনা হয়েছেন। কিন্তু সড়কে আগের তুলনায় লোকজন বেশি। বলেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। গাড়ি পেলেও সিট নাই। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুব বিপদে আছি।’

চন্দ্রায় কথা হয় বাসচালক আলম মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানালেন, আজ সকাল ৬টায় রওনা হয়ে মহাখালী থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা আসতে সময় লেগেছে পাঁচ ঘণ্টা। বাকি পথ যেতে কতক্ষণ লাগবে জানি না। নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের ওসি সওগাতুল আলম আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বিকালের দিকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পুলিশ সদস্যরা রাস্তা সচল রাখতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত