Ajker Patrika

রাসায়নিকে মোড়ানো আনারসে স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • নিষিদ্ধ ওষুধ, গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করে পাকার সময় এগিয়ে আনা হয়েছে।
  • শুধু মধুপুরে বছরে বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার কীটনাশক।
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল 
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ২৮
ক্ষতিকর রাসায়নিক ছিটানো হচ্ছে আনারসখেতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষতিকর রাসায়নিক ছিটানো হচ্ছে আনারসখেতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাইপেন, ইথোফন, জিব্রেলিক অ্যাসিডসহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে টাঙ্গাইলের মধুপুরের আনারসে। এর কারণে ঔষধি গুণসম্পন্ন সুস্বাদু আনারস মরণঘাতী ক্যানসারের উপকরণবাহী ফলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এমন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে দ্রুত আনারস দ্রুত বড় হয় এবং পবিত্র রমজানে বাজারে আনা যায়।

এদিকে আনারসে রাসায়নিক ব্যবহার করে শারীরিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরাও। তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছেন ক্যানসারে।

মধুপুরের মহিষমারা, কুড়াগাছা, শোলাকুড়ি, ফুলবাগচালা, বেরীবাইদ, অরণখোলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি লাল মাটির পুরো এলাকায় আনারস বাগান। বাগানগুলোর মধ্যে কোনোটি ক্যালেন্ডার জাতের আবার কোনোটি জলডুবি বা জলডুঙ্গি জাতের। মধুপুর উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, মধুপুরে চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে আনারস আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ক্যালেন্ডার ৪ হাজার ২২০ হেক্টর, জলডুবি বা জলডুঙ্গি ২ হাজার ৩৯২ এবং এমডি ১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আনারস পাকার প্রকৃত সময় হলো জুন-জুলাই মাসে। এই আনারসগুলোতে গ্রোথ হরমোন, ইথ্রেল, রাইপেনিং, জিব্রেলিক অ্যাসিড ব্যবহার করে অমৌসুমে ফল উৎপাদন করেছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিব আল রানা বলেন, মধুপুরের অর্থনীতি সচল করেছে আনারস। এই আনারসের প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বাজার রয়েছে মধুপুরে। শুধু জলডুবি আনারসই বিক্রি হবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার। এই আনারস মূলত বর্ষা মৌসুমে দ্রুত বড় হয় এবং পেকে যায়। কিন্তু বর্তমানে কিছু কৃষক ও অসাধু ব্যবসায়ী আগাম বাজারজাত করার জন্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে কেমিক্যাল ব্যবহার করছেন।

অননুমোদিত ওষুধে সয়লাব

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুপুরে সার ও কীটনাশকের দোকান আছে ৩৩৪টি। শুধু কীটনাশক বিক্রির দোকান হলো ২৩৫টি। বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমানে মধুপুরে এমন রাসায়নিক বিক্রি করছে ১০৮টির অধিক কোম্পানি। সব মিলিয়ে ৭৬-৮০ কোটি টাকার রাসায়নিক বিক্রি হয়ে থাকে মধুপুর অঞ্চলে। বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিনিধি দিয়ে ইন্ডিয়ান নিষিদ্ধ প্রানোফিক্স, মিরাক্কেল, ব্রাইট ও ইতোফেন-জাতীয় কেমিক্যাল কৃষকের বাড়িতেও পৌঁছে দেয় অনেক সময়। প্রতিটি কৃষক তাদের বাড়িতেও সংরক্ষিত রাখে এই কেমিক্যাল। এই তথ্যদাতার কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

যেভাবে ব্যবহার হচ্ছে রাসায়নিক

আনারস চারার ২৮ পাতা হওয়ার পর রাসায়নিক দেওয়ার বিধি থাকলেও ১৬-২০ পাতা হওয়ার পরই কৃষক হরমোন বা গর্ভবতী বা সিজার করছে। এ ছাড়া কার্বলিক অ্যাসিড, ক্লোরোফেনেক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড, জিব্রেলিক অ্যাসিড-জাতীয় রাসায়নিক বিভিন্ন কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন নামের ওষুধ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে প্রতিটি আনারস পুরোপুরি ভিজিয়ে দেয়। নিষিদ্ধ এই রাসায়নিকগুলো ভারত ও চীন থেকে অবৈধভাবে আমদানি করে বাজারজাত হচ্ছে মধুপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে।

উপজেলার অরণখোলার আবু তালেব বলেন, ‘জলডুবি আনারস লাগানোর ৭-৮ মাস পরে আনারসে কেমিক্যাল করি। ৩০-৪০ দিনের মধ্যেই ঝাত কইরা এক লগে সব গাছে ফুল বাইর অয়। এই ফুল থেকে গুটি ধরলেই ভিটামিন দেই। তিন মাস পরেই পাকানির ওষুধ দিয়া বাজারে বিক্রি করি।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু হাদি নূর আলী খান বলেন, ভারত থেকে চোরাই পথে আনা রাসায়নিক দ্রবণ ব্যবসায়ীরা বা তাঁদের প্রতিনিধিদের দিয়ে গোপনে প্রকাশ্যে কৃষকদের মাঝে বিক্রি করছে। তারা কয়েক ধরনের কেমিক্যাল মিশিয়ে ‘ককটেল’ তৈরি করে আনারসে প্রয়োগ করে ফুল আনা, ফল বড় করা এবং আনারস পাকানোর মতো অপকর্ম করছে, যা খেলে মানুষের ক্ষতি হবেই।

আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষকেরা

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) অধ্যাপক পুষ্টিবিজ্ঞানী মো. আবু জুবাইর বলেন, স্থানীয় কৃষকেরা এই ক্ষতির ভয়াবহতা জানেন না বলেই তাঁরা ক্ষতিকর রাসায়নিক স্প্রে করে থাকেন। যার ফলে দেশে বহু কৃষক এখন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিব আল রানা জানান, বর্তমানে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৩৭ শতাংশই কৃষক। তাঁরা জানেন না কেন তাঁরা ক্যানসারের মতো মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা হোসাইন জানান, মধুপুরে ২০১৪ সালে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ছিল ৫ হাজারের একটু ওপরে। বর্তমানে এই প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৫০ জন।

এলাকার মানুষ কম খায় আনারস

অতিমাত্রায় রাসায়নিক প্রয়োগের ফলে মধুপুর ও আশপাশের এলাকায় আনারসের ভোক্তা কমে গেছে। জামালপুরের তারাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী আক্কাস আলী বলেন, ‘যে ফল শিয়ালে খায় না, বানরে খায় না, টগায় খায় না হেইডা কিবা কইরা কিনা নিয়া মানসেরে খাওয়ামু। তাই আনারসের ব্যবসা ছাইরা কলা বেচি।’

মধুপুর পৌর শহরের গৃহবধূ শামছুন নাহার জানান, আনারস কাটার পর সুঘ্রাণের বদলে বেরিয়ে আসতে থাকে উৎকট ওষুধের গন্ধ। তিনি বলেন, ‘দুই টুকরা খাওয়ার পর আনারস খাওয়ার ইচ্ছাই মিটে গেছে।’

মধুপুরের বাজারের আনারস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পুষ্টিবিজ্ঞানী মো. আবু জুবাইর। তিনি বলেন, মধুপুরের আনারসে ইথোফন, রাইপেনিংসহ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রবণ মাত্রাতিরিক্তভাবে ব্যবহারের কারণে ঔষধি গুণসম্পন্ন আনারস ক্যানসার সৃষ্টির উপকরণবাহী মরণঘাতী ফলে পরিণত হচ্ছে। ক্ষতিকর রাসায়নিকে পূর্ণ আনারস খেলে গর্ভবতী মা ও গর্ভের সন্তান ক্ষতির মুখোমুখি হবে। এমনকি গর্ভের সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাহজাদপুরে কবরস্থান থেকে ১৬টি কংকাল চুরির অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
সিরাজগঞ্জে কবরস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জে কবরস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একটি কবরস্থান থেকে ১৬টি কংকাল চুরির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের কুঠি সাতবাড়িয়া কবরস্থান থেকে গত সোমবার রাতের কোনো এক সময় কবরগুলো খুঁড়ে এসব কংকাল দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায় বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কবরস্থান ঘিরে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার ফজরের নামাজ শেষে কয়েকজন মুসল্লি কবরস্থানে গিয়ে দেখেন কয়েকটি কবরের মাটি খোঁড়া। কাছে গিয়ে দেখা যায়, কবরগুলো ফাঁকা। কংকাল নেই। ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল চোরদের ব্যবহৃত একটি ট্রাউজার, গেঞ্জি ও কবর খোঁড়ার যন্ত্র।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, যেসব কবর খোঁড়া হয়েছে, সেসবে এক থেকে দেড় বছর আগে মানুষ দাফন করা হয়েছিল।

কবরস্থান পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ খোকন সরকার ও সদস্য গোলজার হোসেন জানান, গত সোমবার অমাবস্যার রাতে কবরস্থানটিতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা ১৬টি কবর খুঁড়ে কংকাল নিয়ে যায়। পরদিন সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দারা খোঁড়া কবরগুলোয় নতুন করে মাটিচাপা দেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী বলেন, ঘটনা সম্পর্কে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাইবার সুরক্ষার মামলায় গ্রেপ্তার বুয়েট ছাত্র শ্রীশান্ত কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহপাঠীকে যৌন হয়রানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের চকবাজার থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই আশরাফুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম রেডিটে করা পোস্টের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বুয়েটে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবির মুখে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র শ্রীশান্তকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

পরে তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ২৫ ও ২৬ ধারায় রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন বুয়েটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আফগান হোসেন। ওই মামলায় শ্রীশান্তকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে হাজির করে পুলিশ।

শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রেডিট ব্যবহার করে সহপাঠীকে যৌন হয়রানির হুমকি দিয়েছেন এবং নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন। পাশাপাশি মুসলিম নারীদের পোশাক হিজাব নিয়েও নানা প্ল্যাটফর্মে বাজে মন্তব্য করতেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ২৫ ও ২৬ ধারার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তোলা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা বুয়েটের ওই ছাত্রকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে তাঁর পক্ষে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। আদালত জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। শুনানির সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিক্ষোভে নামে বুয়েটের একদল শিক্ষার্থী। বিক্ষোভের মুখে রাতেই তাঁকে হেফাজতে নেয় চকবাজার থানা পুলিশ। চকবাজার থানায় আজ বুয়েটের মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাজাহান সিরাজ।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে অন্য কোনো ব্যক্তিকে ব্ল‍্যাকমেইলিং বা যৌন হয়রানি বা রিভেঞ্জ পর্ন বা ডিজিটাল শিশু যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত উপাদান (চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ ম্যাটেরিয়াল) বা সেক্সটর্শন করবার অভিপ্রায়ে সৃষ্ট বা প্রাপ্ত বা সংরক্ষিত কোনো তথ্য, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত, এডিটকৃত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নির্মিত অথবা এডিটকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য এইরূপ কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করেন বা প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করার হুমকি প্রদান করেন; যা ক্ষতিকর বা ভীতি প্রদর্শক, তাহলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হবে একটি অপরাধ।

অন্যদিকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ২৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে বা ছদ্ম পরিচয়ে নিজের বা অন্যের আইডিতে অবৈধ প্রবেশ করিয়া এমন কোনো কিছু সাইবার স্পেসে প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যাহা ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং যাহা সহিংসতা তৈরি বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে বা বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা করে, তাহা হইলে অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

এই দুই ধারায় সর্বোচ্চ ২ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, আসামির দায়ের কোপে শিশুর দাদি নিহত

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আবুল রবিদাস। ছবি: সংগৃহীত
আবুল রবিদাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভা এলাকায় চার বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে ঘাতকের দায়ের কোপে মারা গেছেন শিশুটির দাদি ফুলবাঁশির (৬৫)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা গ্রামের চার বছর বয়সী ওই শিশু গত সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। শিশুটির পরিবার দ্রুত খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাতেই জানা যায়, শিশুটিকে প্রতিবেশী আবুল রবিদাস (৪০) প্রলুব্ধ করে অপহরণ করেছেন এবং তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানোর চেষ্টা করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, এ খবর শুনে শিশুটির দাদি ফুলবাঁশির তাঁর নাতিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। বৃদ্ধার এই সাহসিকতা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত আবুল রবিদাস।

তখন রবিদাস ধারালো দা দিয়ে বৃদ্ধ ফুলবাঁশির মাথায় সজোরে কোপ দেন। এতে তিনি গুরুতর জখম হন।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় ফুলবাঁশিরকে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ঘটনার পরপরই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান রবিদাস। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজতে শুরু করে। পুলিশের তৎপরতায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে ভালুকার কাশর এলাকা থেকে আবুল রবিদাসকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাদি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিদাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘটনা জানার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। পুলিশের তৎপরতায় গতকাল রাতে অভিযুক্ত আবুল রবিদাসকে (৪০) আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপদ সড়ক দিবসে রাজশাহীতে বাসচাপায় ২ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীতে যাত্রীবাহী বাসচাপায় মোটরসাইকেলের চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। ইউ-টার্ন নেওয়ার সময় পেছন থেকে গ্রামীণ ট্রাভেলসের একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে চাপা দেয়। আজ বুধবার নগরীর শাহমখদুম থানার সিটিহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এ দিন সারা দেশে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য-‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি।’ আর এ দিনই রাজশাহীতে বেপরোয়া বাসের চাপায় প্রাণ হারান দুজন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের আজিজুর রহমান খান (৪০) এবং একই উপজেলার কিচনিদহা গ্রামের সৈবুর রহমান (৪৫)। আজিজুর রহমান খান ঘটনাস্থলেই মারা যান। সৈবুর রহমানকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুমা মুস্তারী জানান, আজিজুর রহমান ও সৈবুর রহমান একই মোটরসাইকেলে চেপে রাজশাহী শহর থেকে বের হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন। সিটিহাট এলাকায় ইউ-টার্ন নেওয়ার সময় গ্রামীণ ট্রাভেলসের দ্রুতগতির একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের নিচে পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

ওসি আরও জানান, বাসমালিকের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। নিহত দুজনের একজনের আত্মীয় এই বাসের কাউন্টারে চাকরি করেন। ফলে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে গেছেন।

পরিবারের অভিযোগ না থাকায় এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হয়নি। তবে পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে বলেও জানান ওসি মাছুমা মুস্তারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত