Ajker Patrika

৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল না: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ হলেও তা স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও অদম্য বাংলাদেশ’-শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘একটি ভাষণের ফলে আর কোথাও কখনো কোন জাতি রাষ্ট্রের উত্থান ঘটেনি। সমগ্র জাতির কথা, অধিকারের কথা, ন্যায্যতার কথাসহ ৭ মার্চের ভাষণটি একটি কবিতা। নিরস্ত্র একটি জাতি কিভাবে যুদ্ধ করবে তার সকল দিক নির্দেশনা তিনি বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল না। ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি’-তার মানে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া তখনো বাকি ছিল। পরবর্তীতে ২৬ মার্চে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।’  

মুক্তির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ৭০ এর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৭০ এর নির্বাচনে নাও যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন। বাঙালির চাওয়া সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতেই নির্বাচন করেছিলেন। তিনি ত্রিকালদর্শী পুরুষ ছিলেন। তিনি অতীত বিশ্লেষণ করতে পারতেন, বর্তমান পড়তে পারতেন এবং ভবিষ্যৎ বুঝতে পারতেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আগে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই মুক্তির লক্ষ্যেই তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে হত্যা শুধু তাকে বা তাঁর পরিবারকে হত্যা নয়। এর মধ্য দিয়ে পুরো একটি আদর্শকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কখনোই মৃত নন। তিনি জীবিতের চেয়ে অধিক জীবিত।’ 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘একজন মহানায়ক দেশে বারবার আসেন না, একবার জন্মান। বঙ্গবন্ধু হচ্ছে সেই মহানায়ক। তার মতো করে এমন ত্যাগ আর কেউ করতে পারেনি। তিনি আমাদের আশ্রয় ও পথ চলার নির্দেশদাতা।' 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রের ভীত স্থাপন করেছিলেন।’ 

জাগো নিউজের ডেপুটি সম্পাদক ড. হারুন রশীদ বলেন, ‘পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর রাজধানীতে যানজট বেড়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এটি আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে।’ 

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মীজানুর রহমান বলেন, ‘পদ্মা সেতু, স্যাটেলাইট এগুলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল না। এগুলো ছিল তার বাস্তবতা। আধুনিক স্বাধীন রাষ্ট্র এ অঞ্চলে হতে পারে তার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুই প্রথম দেখিয়েছিলেন। বাঙালির যা অর্জন তা ৭৫ এর ১৫ ই আগস্টে শেষ হয়ে গিয়েছিল। ৮১ সালে শেখ হাসিনা ফিরে আসার মধ্য দিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের সূচনা হয়।’ 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন আহমদসহ প্রমুখ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত