Ajker Patrika

হরতালে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে কম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ১৭
হরতালে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে কম

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্যে রাজধানীর তিন টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস কম ছাড়ছে। এসব টার্মিনালে যাত্রী উপস্থিতিও অনেক কম দেখা গেছে। আবার যে কয়েকজন যাত্রী আসছেন, তাঁরাও যথাসময়ে গন্তব্যে রওনা দিতে পারছেন না। ঢাকার বাইরে থেকেও খুব কম বাস যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছে। 

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের জন্য এমন হয়েছে। অনেকেই ভয় পাচ্ছেন বাস বের করতে। আবার যাত্রীরা আতঙ্কে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। 

ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোর মধ্যে সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ীর বাস কাউন্টারগুলো সব সময়ই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। তবে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা হরতালের কারণে আজ রোববার সকালে এ দুই এলাকার দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে কোনো ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। অলস সময় পার করতে দেখা গেছে বাস কাউন্টারের দায়িত্বরত লোকজনকে। 

সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ীর বাস কাউন্টারের আশপাশে দূরপাল্লার বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী ছাড়া তেমন কোনো যাত্রীও চোখে পড়েনি। এমন দৃশ্য ছিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। সকাল থেকেই সায়েদাবাদ মোড়ে ওভার ব্রিজের নিচে গোল চত্বরে অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। 

এদিকে মহাখালী বাস টার্মিনালও ফাঁকা রয়েছে। অলস সময় পার করছেন পরিবহনের শ্রমিকেরা। গাবতলীতে যানবাহন কম, যাত্রীও কম দেখা গেছে। তবে বেলা যত বাড়ছে, গাড়ির সংখ্যাও বাড়ছে। সড়কে যানবাহন কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দূরপাল্লার বাস কম ছাড়লেও গাবতলীতে কিছুক্ষণ পর পর সিটি বাস চলাচল করছে। 

যাত্রীরা জানান, কাউন্টারে বসে আছেন তাঁরা। কাউন্টার থেকে জানিয়েছে পর্যাপ্তসংখ্যক যাত্রী পেলে তবেই বাস ছাড়বেন তাঁরা। এ ছাড়া সকাল থেকে এনা পরিবহন, শাহ ফতেহ আলী, আগমনী পরিবহন, এসআর পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, হানিফসহ বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার যাত্রীশূন্য দেখা গেছে। কিছু কিছু কাউন্টার ছিল তালাবদ্ধ। তবে বেশির ভাগ শ্রমিক ও চালককে বাসে ও কাউন্টারে শুয়ে-বসে সময় কাটাতে দেখা যায়। যাত্রী না থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান তাঁরা। 

সায়েদাবাদে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারের চৌধুরী পরিবহন ও বিএনএফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. নাহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে ৭টার দিকে আমরা দুটি বাস ছেড়েছি ঢাকা থেকে। এরপর আর কোনো বাস ছাড়া হয়নি।’ 

সোহাগ ইউনিক বাস কাউন্টারের টিকিট মাস্টার মোহাম্মদ উকিল আলী বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের কোনো বাস ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি। যাবে কি না, সেটাও জানি না। আমাদের কোম্পানি থেকে বাস ছাড়া বা ঢাকায় আসার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি এখনো। সম্ভবত হরতালের পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারপর নির্দেশনা আসবে।’ 

যাত্রাবাড়ী বাস কাউন্টারে অপেক্ষমাণ দু-তিনজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, ‘৭টা থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। যাব চট্টগ্রাম, কিন্তু বাস পাচ্ছি না।’ 

এর আগে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা কর্মদিবসের তুলনায় অনেক কম। যেসব গণপরিবহন চলছে, সেগুলোতে যাত্রীর সংখ্যাও তুলনামূলক কম। 

সায়েদাবাদ মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক মো. রাসেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথম সকালে রাস্তায় যানবাহন ভালোই চোখে পড়ছিল। কিন্তু সাড়ে ৮টার পর থেকে সেগুলো আবার কমে গেছে। শুনেছি গুলিস্তানে বাসে আগুন দিয়েছে। সে কারণেই হয়তো রাস্তায় যানবাহন কমে গেছে।’ 

এ ছাড়া এসব এলাকায় সরকারি ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা দেখা গেছে। তবে, খোলা দোকানপাটের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত