Ajker Patrika

পরিবেশ নিয়ে কথা বলার সময় শক্তিশালী মানুষদের বিপক্ষে লড়তে হয়: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান 

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৫১
পরিবেশ নিয়ে কথা বলার সময় শক্তিশালী মানুষদের বিপক্ষে লড়তে হয়: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশ নিয়ে আমরা যখন কথা বলি, তখন একদল শক্তিশালী মানুষদের বিপক্ষে লড়তে হয়। তাই আমাদের সব শক্তি একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে হবে, বনের সীমানা চিহ্নিত করতে হবে। তবেই আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারব। কারণ, যারা দখলকারী তারা অন্তত শক্তিশালী। সুতরাং ,তাদের সঙ্গে লড়তে হলে আমাদের সঠিক তথ্য লাগবে।’ 

গাজীপুরে পরিবেশ দূষণ থেকে উত্তরণে নাগরিক সংলাপে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সৈয়দা রিজওয়ানা এসব কথা বলেন। গাজীপুরের পিটিআই অডিটরিয়ামে এ সংলাপের আয়োজন করে বেলা ও নদী পরিব্রাজক দল। 

এতে সভাপতিত্ব করেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজীপুরের দখল-দূষণ নিয়ে বিশদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের অধ্যাপক অসীম বিভাকর। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য অধ্যপক মুকুল কুমার মল্লিক, গাজীপুর জেলা সমাজ সেবার উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিচার্স সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার শারমিন জাহান ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন সবকিছুর পরেও একজন মানুষ থেকে অন্তত ৫০০ গ্রাম বর্জ্য উৎপাদন হয়। তাহলে দিনে ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বর্জ্য হচ্ছে প্রতিদিন ৮ কোটি কেজি। আপনারা বন নিয়ে, পরিবেশ নিয়ে এবং দখল-দূষণ নিয়ে কথা বলেছেন। এগুলো পর্যায়ক্রমে কাজ করতে হবে। এ সময় তিনি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন আপনারা কিছু তথ্য দিয়ে সহযোগী করতে পারেন। 

গাজীপুর জেলা সমাজ সেবার উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, যদি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা যেত তাহলে আরও ভালো হতো। সিটি করপোরেশন থেকে বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সঠিক কাজটা হচ্ছে না। 

বর্জ্যগুলো একটি বালতিতে না ফেলে দুটো বালতিতে ফেলা হতো। একটিতে ময়লা, অন্যটিতে পচনশীল ময়লা রাখা যেত, তাহলে ভালো হতো। এটি করতে হবে সিটি করপোরেশনকেই।

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিচার্স সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ বলেন, ‘গাজীপুরের নদী ও দূষণকে বাদ দিয়ে কাজ করলে সফলতা আসবে না। গাজীপুরের তিনটি নদী বাদ দিওয়ে সব নদী দূষণ হয়ে গেছে। গাজীপুরের পানি সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। আলোচনায় উঠে এসেছে সমস্যাগুলো। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো জায়গা বরাদ্দ হচ্ছে না। রাস্তা হচ্ছে, ব্রিজ হচ্ছে কিন্তু দূষণের বিষয়ে কাজ তেমন হচ্ছে না।’

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মকে নদী চিনতে হবে। নদী এবং পরিবেশ সম্পর্কে উন্নত ও স্পষ্ট ধারণা, নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার, নদীর সুরক্ষা ও সংরক্ষণের নিয়ম জেনে সমাজের প্রয়োজনে তা কাজে লাগানো এবং সর্বোপরি নদীর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর সহাবস্থানের ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনীয় অন্তর্দৃষ্টি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শৈশব থেকেই শুরু হওয়া উচিত।’ 

এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী দখল-দূষণের বিষয়ে তাঁদের মতামত প্রকাশ করেন। তা ছাড়া প্রতিকারের কী ব্যবস্থা আছে, সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। নদী, পরিবেশ ও বনভূমি দখল ও দূষণের বিভিন্ন পয়েন্ট ও স্থান চিহ্নিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত