Ajker Patrika

ভবনের সামনে আগুন দেখে পেছনের কাচের জানালা ভেঙে বের হন নাজমুল

রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

‎রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া পোশাক কারখানার চারতলায় কাজ করেন মোহাম্মদ নাজমুল। গত এক বছর ধরে আরএন ফ্যাশনের কাটিং মাস্টার তিনি। আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে আগুন লাগার সময় তিনি চারতলায় ছিলেন। বিকট শব্দে ভবনের সামনে বাইরে আগুন দেখে পেছনের জানালার কাচ ভেঙে বের হন নাজমুলসহ আরও চারজন।

আজ ‎সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে আজকের পত্রিকাকে শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দেন নাজমুল।

‎নাজমুল জানান, বেলা সাড়ে ১১টায় বাইরে বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। চারতলা থেকে ভবনের সামনের জানালা দিয়ে দেখেন, নিচে কেমিক্যাল গুদাম ও একটি ওয়াশ কারখানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং সামনের একটি গাড়িতে লাগে। গাড়িটি ব্লাস্ট হয়ে আগুন তাঁদের ফ্যাক্টরির ভেতরে প্রবেশ করে। আগুন কারখানার ভেতরে ঢোকার পর কর্মীরা সামনে দিয়ে বাইরে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে তাঁরা পারেননি। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কাপড় দিয়ে নাক-মুখ বেঁধে ফেলেন। দৌড়ে পেছনের দিকে গিয়ে জানালার কাচ ভাঙেন। পরে সেখান দিয়ে তাঁদের চারতলা থেকে তিনিসহ চারজন জানালা দিয়ে পাশের টিনের ছাউনিতে লাফ দেন। তিনতলা ও চারতলা মিলিয়ে ২০ জনের মতো কাজ করতেন তাঁরা। এর মধ্যে আটজন বের হতে পেরেছেন।

‎নাজমুল আরও বলেন, ‘চারতলা থেকে আমি, কাটারম্যান মামুন, একজন বুয়া ও একজন নতুন কর্মী বাইরে আসতে পেরেছি। তিনতলা থেকে সোহেল, একজন আয়রনম্যানসহ তিনজন বাইরে আসতে পেরেছি। এই তিনজনই আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। তবে আমাদের ১২ জন বের হতে পারেননি। তাঁরা নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে জিএম আল মামুন ও স্টোরের দায়িত্বে থাকা খালেদ, যিনি লেভেল টেবিলের দায়িত্বে ছিলেন।’

নাজমুল জানান, তিন নম্বর সড়কের যে ভবনে আগুন লাগে, সেটা পাঁচতলার। হোল্ডিং নম্বর—৪১। চারতলার ওপরে টিনের ছাউনি দিয়ে আরেকটি তলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনের নিচতলা ছিল একেবারে ফাঁকা। দোতলায় হান্নান নামের এক ব্যক্তির স্মার্ট প্রিন্ট ফ্যাক্টরি ছিল। দোতলায় গেঞ্জি ও শীতের পোশাক তৈরি হতো। আর নাজমুলদের গার্মেন্টসটি তিন ও চারতলা মিলিয়ে। আরএন ফ্যাশন নামের গার্মেন্টসটির মালিক নজরুল ইসলাম ও রেজাউল ইসলাম। তাঁদের কারখানায় গেঞ্জি তৈরি করা হয়। পাঁচতলায় ছিল রাজিব নামের একজনের বিসমিল্লাহ প্রিন্ট ফ্যাক্টরি। ভবনের মাঝামাঝি একটাই সিঁড়ি ছিল।

‎এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির মালিকের নাম শাহ আলম। ২০১৯ সালে গাবতলীর দিয়াবাড়িতে তাঁর আরেকটি কেমিক্যাল গুদামে আগুন লেগেছিল। তিন নম্বর সড়কে কেমিক্যাল গুদাম ছাড়াও ৪ নম্বর সড়কে তাঁর আরেকটি গুদাম রয়েছে। শিয়ালবাড়ি ৬ নম্বর সড়কে ২১ নম্বরের দোতলা বাড়ির নিচতলায় তাঁর দাপ্তরিক কার্যালয়। আর ৭ নম্বর সড়কের ছয়তলার ১১ নম্বর বাড়িটি শাহ আলমের। তিনি সেখানেই থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শাহ আলম কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত