Ajker Patrika

ঘিওরে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে খেজুরের রস

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৪৮
ঘিওরে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে খেজুরের রস

জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের গাছিরা। নবান্ন উৎসবে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরিতে খেজুরের রসের যেমন জুড়ি নেই, তেমনি গাছিরাও ব্যস্ত খেজুরগাছের বুক চিরে ফোঁটা ফোঁটা রস বের করতে। 

মানিকগঞ্জের ঘিওরে শীতের ঐতিহ্য ছিল মিষ্টি খেজুরের রস। মাত্র এক যুগের ব্যবধানে এই রসের ঘ্রাণ এখন ভুলতে বসেছে মানুষ। রসের পায়েস আর পিঠাপুলি এখন শুধুই স্মৃতি। শীতে গ্রামের হাটে হাটে খেজুরের গুড়ের মনমাতানো সেই ঘ্রাণ আর পাওয়া যায় না। মৌসুমি গাছিদের না পাওয়া, নতুন করে গাছ না লাগানোয় ঐতিহ্যবাহী খেজুরগাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। যে হারে খেজুরগাছ নিধন হচ্ছে, সে তুলনায় রোপণ করা হয় না। গ্রামের মাঠে আর মেঠো পথের ধারে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রসের যে সুপ্রিয়তা ছিল, তা ক্রমেই কমে যাচ্ছে আর হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রসের সুখ্যাতি। 

সরেজমিন ঘিওর উপজেলার কালাচাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল মুন্নাফ নামে এক গাছি খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য গাছের বুক পরিষ্কার করছেন। তিনি জানান, আগে খেজুরের রসের চাহিদা ব্যাপক ছিল। এমনকি দুপুর থেকে গাছ ছিলতে ছিলতে সন্ধ্যা পেরিয়ে যেত। সেই রস বিক্রি করে ও গুড় তৈরি করে সংসার চালাতাম। এখন তেমন কোনো গাছ না থাকায় দু-চারটি গাছ ছিলে যে রস বের হয়, তা বিক্রি করে কোনোভাবেই সংসার চলে না। তবু কিছু গাছি নিজেদের অতীতের পেশা টিকিয়ে রাখতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বানিয়াজুরী এলাকার মো. রমজান আলী বলেন, ‘শীতের সকালে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার মধুর স্মৃতি প্রায় ভুলেই গেছি। অথচ এক যুগ আগেও আমাদের গ্রামে শতাধিক খেজুরগাছ থেকে রস বের করতেন গাছিরা। কাঁচা রস এবং সেই রসের বিভিন্ন মিষ্টান্ন খাওয়া আজ কেবলই স্মৃতি।’

ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন বলেন, রসনা তৃপ্তির উপকরণ সুমিষ্ট রসের জন্যই নয়, জীবনের প্রয়োজনে আর প্রকৃতির ভারসাম্য ও বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় ব্যাপকভাবে খেজুরগাছ রোপণ করা দরকার এমন আকুতি অনেকের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত