Ajker Patrika

২০০ বছরের খাল পুনরুদ্ধারে এককাট্টা ৫ গ্রামের বাসিন্দারা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ১৫: ২২
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদে এলাকাবাসীর উদ্যোগে খাল খনন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদে এলাকাবাসীর উদ্যোগে খাল খনন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদে ভরাট হয়ে যাওয়া ২০০ বছরের পুরোনো মাকুয়ার খাল নিজ উদ্যোগে খনন শুরু করেছে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশ লাইনস ও কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ের পাশ থেকে শুরু হয় খনন কার্যক্রম। এতে আশপাশের পাঁচ গ্রামের কয়েক শ মানুষ অংশ নেন।

এলাকাবাসী জানায়, খালটি লতিবাবাদ ইউনিয়নের মাকুয়ার বিল থেকে শুরু হয়ে তিন কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে মুকসেদপুরের ভাস্করভিলা বিলে গিয়ে মিলিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এটি দখল-দূষণে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে আশপাশের গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে স্থানীয় কৃষিজমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বিপাকে রয়েছেন কৃষকেরা। তাঁরা দুর্ভোগ নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো সমাধান পাননি। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই খালটি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন।

পূর্ব চরপাড়ার বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, ‘খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা, ছোট ছোট কালভার্ট ও মাটি ভরাটের কারণে পূর্ব চরপাড়া, ডুবাইল, নামাপাড়া, দক্ষিণ লতিবাবাদ ও মুন্সিপাড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ২০০ একর ফসলি জমি পানিবন্দী থাকে। এই কারণে পাঁচ-ছয় বছর যাবৎ ওই সব জমিতে কোনো চাষাবাদ হয় না।’

আরেক বাসিন্দা মো. আল আমিন বলেন, ‘পাঁচ গ্রামের মধ্যবর্তী স্থান হলো মাকুয়ার বন্দ (মাঠ)। বন্দের পানি যায় এই খাল দিয়ে। মুরব্বিরা বলেছে এই খালটি ২০০ বছরের পুরোনো। সিএস জরিপের মধ্যে খালের নকশাও আছে। গত ১৫-২০ বছর যাবৎ যারা ভূমির ব্যবসা করে, তারা বিভিন্নভাবে খালটি ভরাট করেছে। আমাদের বাপ-দাদার আমলে খালটি ১৬-১৭ ফুট প্রশস্ত ছিল। ৫ আগস্টের আগে প্রশাসনকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো হস্তক্ষেপ করে নাই। সম্প্রতি আমরা পাঁচ গ্রামের পাঁচ-ছয় হাজার মানুষ মতবিনিময় সভা করে খালটি পুনরুদ্ধারের শপথ করি। আমরা মাইকিং করিয়েছি, নোটিশ দিয়েছি। যেহেতু সরকারি খাল, কেউ আমাদের বাধা দেয়নি। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খাল খনন করছি।’

এ নিয়ে কথা হলে লতিবাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আ. রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা তো এখন বিপদগ্রস্ত। নামাপাড়া, ডুবাইল, দক্ষিণ লতিবাবাদ, চরপাড়া ও মুসলিমপাড়া গ্রাম পানিবন্দী। ফসল শত ভাগ নষ্ট হয়ে যায়। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে এলাকাবাসী উদ্যোগ নিয়েছি, আমাদের প্রচেষ্টায় খালটি পুনরুদ্ধারে খনন করব। কারণ, আমাদের তো বাঁচতে হবে। আজ (মঙ্গলবার) থেকে খননকাজ শুরু করা হয়েছে। যে কয়েক দিনই লাগুক, পুরো খালটি খনন করব আমরা।’

যোগাযোগ করা হলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া বলেন, ‘খাল খনন খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ। খালটি রেকর্ডে আছে কি না তা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড. ইউনূসের গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের ঘেরে ডাকাতি, আহত ৪

পাচারের অর্থে দুবাইয়ে মেয়ের ৪৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট—অভিযোগ নিয়ে যা বললেন গভর্নর

সুধা সদন এখন কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীর আখড়া

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের শতকোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

দোকান দখলে যুবদল-কৃষক দল নেতা, আ.লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে ১৬ মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত