Ajker Patrika

সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৩৮ জন আরও ১৪৪ মামলায় গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৩৮ ব্যক্তিকে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া ১৪৪টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুর রহমান ও মো. ইমরান আহমেদ পৃথক পৃথক আদেশে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। এদের মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের করা এসব মামলায় সকাল ৭টা থেকেই প্রভাবশালী এসব আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। অনেকের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত প্রত্যেকটি জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আবার তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।

যাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমোডর মনিরুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাবেক কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, বাড্ডা থানা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার পিন্টু, পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাইতলা উত্তর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. অলিউল্লাহ ওরফে অলি মুন্সী, রাজধানীর শাহ আলী থানার আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম, বাড্ডা থানা ছাত্রলীগ নেতা তারেক আহমেদ অনিক ও মিরপুরের আওয়ামী লীগ কর্মী মাহমুদ হাসান জয়।

এর মধ্যে সাবেক মেয়র আতিকুলকে ১৩ মামলায়, মামুনকে ১৬ মামলায়, কামাল আহমেদকে ১২ মামলায়, পলককে ১০ মামলায়, আনিসুলকে ৯ মামলায়, সালমান এফ রহমানকে ৪ মামলায়, দীপু মনিকে ৫ মামলায়, মেননকে ৩ মামলায়, রাজ্জাককে ৩ মামলায়, ব্যারিস্টার সুমন, সাদেক, হাজি সেলিম ও জিয়াউলকে দুটি করে মামলায়, অন্যদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মোট ১৪৪ টি মামলায় সবাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পর্যায়ক্রমে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আরও বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুর রহমান ও মো. ইমরান আহম্মেদ ৮ জনকে বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। যাদের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ সৈকত।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আনিসুল হককে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জাল ভোটের আয়োজন করার অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা একটি মামলায় একটি মামলায় ৫ দিন ও বাড্ডা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ধানমন্ডি থানার এক মামলায় তিন দিন ও বংশাল থানার এক মামলায় চার দিন, সাধন চন্দ্র মজুমদারকে মোহাম্মদপুর থানার ১ মামলায় ৩ দিন, শাজাহান খানকে যাত্রাবাড়ী থানার এক মামলায় ৩ দিন, জিয়াউল আহসানকে নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় ৫ দিন, হাজী সেলিমকে চকবাজার থানার এক মামলায় ৫ দিন, ইনুকে ধানমন্ডি থানার এক মামলায় ৫দিন, তানভীর সৈকতকে চকবাজার থানার এক মামলায় ৫ দিন ও বিচারপতি মানিককে চকবাজার থানায় দায়ের করা এক মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের উপস্থিতিতে রিমান্ডের শুনানি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত