Ajker Patrika

শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ সাবেক সেনা কর্মকর্তার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ১৬
শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ সাবেক সেনা কর্মকর্তার 

আয়নাঘরে ১ বছর ৬ মাস ১৪ দিন গুম করে রাখার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান বীর প্রতীক। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এই অভিযোগ করেন তিনি। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। 

ট্রাইব্যুনালের অভিযোগ দায়েরের পর হাসিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি দুবার গুম হয়েছিলাম। প্রথমবার চাকরিতে থাকাবস্থায়। দ্বিতীয়বার গুম হই ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট। আমার ভারতবিরোধী মনোভাব ছিল। ২০০৮ সালে আমাকে বলা হয় “র”–এর (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং) সঙ্গে কাজ করার জন্য। আমি অনীহা প্রকাশ করি। ভারতকে আমি শত্রু মনে করি। এটাই আমার দেশপ্রেম। রাউজনের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর অনৈতিক প্রস্তাবে আমি রাজি হইনি। এই দুটোই ছিল আমাকে গুম করার মূল কারণ।’ 

আয়নাঘরে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওখানে অনেকে মারা গেছে গরমে, ভয়ে ও আতঙ্কে। প্রতিদিন ওখানে চিৎকার হয়েছে, কান্নাকাটি হয়েছে। আমাকে জঙ্গি তকমাও দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি সেলে রেখে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমি এসেছি ন্যায়বিচারের জন্য, ক্ষতিপূরণের জন্য।’ গত জুলাই মাসে ডিজিএফআইয়ের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তা আন্দোলনে হতাহতদের জন্য ব্যয় করার অনুরোধ জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মদনে ছেলের লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল বাবার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মদনে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের লাঠির আঘাতে মোস্তফা মিয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলে সাজ্জাদ মিয়াকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ঘাটুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধ ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাজ্জাদ মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতেন। শনিবার রাতে প্রতিদিনের মতো খাবার গ্রহণ শেষে নিজের ঘরে শুয়েছিলেন মোস্তফা। হঠাৎ ছেলে সাজ্জাদ ঘরে ঢুকে বাবার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে মোস্তফা মারা যান।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ আজ রোববার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত সাজ্জাদকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস বিতরণে যশোরের মনিরামপুরে অনিয়ম ও গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। মনিরামপুরের জন্য বরাদ্দের ৪৭০ প্যাকেটের মধ্যে ১২০ প্যাকেট মাংসের হিসাব মিলছে না। এদিকে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে দুস্থদের মধ্যে এই মাংস বিতরণের কথা থাকলেও রোহিতা, নেহালপুর, কুলটিয়া ও মনোহরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করা হয়েছে দুম্বার মাংস থেকে। যা বিতরণ করা হয়েছে, তার তালিকায়ও রয়েছে গরমিল।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর থেকে দেওয়া বিতরণের তালিকায় এসব অনিয়মের তথ্য মিলেছে।

এদিকে উপজেলায় এনে দুম্বার মাংস বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও তা না করে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে রাতে এই মাংস বিতরণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সৌদি আরব সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস এবার মনিরামপুরের ১৭টি ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ এসেছে ৪৭ কার্টন। প্রতি কার্টনে মাংস এসেছে ১০ প্যাকেট। সেই হিসাবে মনিরামপুরের জন্য বরাদ্দ ৪৭০ প্যাকেট।

সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পর মনিরামপুরের ৫০টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার দায়িত্বশীলদের মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে দুম্বার মাংস বিতরণ করা হয়েছে। মনিরামপুরে মাংস না এনে রাতের আঁধারে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে ডেকে নিয়ে গোপনে মাংস বিতরণ করার তথ্য প্রচার করা হয়েছে দুই দিন পরে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর থেকে পাওয়া বিতরণ তালিকায় দেখা গেছে, উপজেলার ৫০টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার দায়িত্বশীলদের ডেকে নিয়ে ৩৫০ প্যাকেট মাংস বিতরণ করা হয়েছে। বাকি ১২০ প্যাকেট তথা ১২ কার্টন মাংসের হিসাব নেই বিতরণের এই তালিকায়। বিতরণের তালিকায় নাম নেই রোহিতা, কুলটিয়া, নেহালপুর ও মনোহরপুর ইউনিয়নের কোনো মাদ্রাসা ও এতিমখানার।

মাংস বিভাজনের তালিকার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মশ্মিমনগর ইউনিয়নে ৮টি মাদ্রাসায় ৪৩ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এ ইউনিয়নের প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না। আর চালুয়াহাটি ইউনিয়নে ৬টি মাদ্রাসায় ৪৪ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এই ইউনিয়নের প্রশাসক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।

এদিকে পিআইও দপ্তরের দেওয়া তালিকায় দেখা গেছে, উপজেলার রামপুর শাহপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসায় চার প্যাকেট মাংস বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার হিসাবরক্ষক আলী হাসান জানিয়েছেন, তাঁরা তিন প্যাকেট দুম্বার মাংস পেয়েছেন।

এসব বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অধিকাংশ কার্টনে ১০ প্যাকেট মাংস পাওয়া যায়নি; পাওয়া গেছে ৭ থেকে ৮ প্যাকেট মাংস। যতগুলো প্যাকেট পাওয়া গেছে, সব মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

চারটি ইউনিয়নে দুম্বার মাংস না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পিআইও বলেন, ‘আমাদের কাছে যতগুলো মাদ্রাসার তালিকা আছে। তাঁদের সবাইকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়েছে। অনেকে ফোন ধরেননি। আবার অনেকে খবর পেয়েও মাংস নিতে আসেননি।’

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে ছিলাম। মনিরামপুরে ফিরে দুম্বার মাংস বিতরণের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘পিছিয়ে পড়া’ সাতক্ষীরার ৮০ শতাংশ সড়কই কাঁচা

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের অন্যান্য জেলা থেকে উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে রয়েছে সাতক্ষীরা। প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরেও এই জেলায় এককভাবে কোনো বড় উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত হয়নি। ভোমরা স্থলবন্দর, মধু, আম, চিংড়িসহ বিভিন্ন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হলেও জেলার অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ হতাশাজনক বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে ব্যাপক কাঁচা সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাতক্ষীরাবাসী।

আয়তনে সাতক্ষীরা দেশের ২৫তম বৃহত্তম জেলা হলেও এর যোগাযোগব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।

এলজিইডি সাতক্ষীরা সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৫ হাজার ৭৮৮টি সড়ক রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ১১ হাজার ২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৮ হাজার ৭৭২ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা। অথচ এই জেলায় রয়েছে ভোমরা স্থলবন্দর, স্থলপথে সুন্দরবন, আম, মধু, চিংড়িসহ রাজস্ব আহরণের বিভিন্ন খাত। তবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারি খাতে দিলেও প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়াবঞ্চিত এই জেলা। নেই বিশ্ববিদ্যালয় ও রেললাইন। অধিকাংশ সড়ক কাঁচা হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে রয়েছে জেলাবাসী।

এ প্রসঙ্গে জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘পাশের দুটি জেলা যশোর ও খুলনা। সেখানে কী নেই? অথচ আমরা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিলেও আমাদের এখানে কোনো উন্নয়ন নেই। একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও রেললাইন নির্মাণের কথা শুধু শুনেই থাকি। বাস্তবে আমরা দেখে যেতে পারব বলে মনে হয় না।’

কৃষি অর্থনীতির ভিত্তি হলো গ্রামীণ জনপদ। রাস্তা কাঁচা হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে জনসাধারণ। এ ছাড়া পাকা রাস্তাগুলো সংস্কার না হওয়ায় বিপাকে তারা।

এ বিষয়ে আশাশুনির প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘যেকোনো দুর্যোগ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করে আগে। তাতে রাস্তা বিধ্বস্ত হয়। কিন্তু খারাপ রাস্তাঘাট সংস্কার হয় না। আমি মনে করি, দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে এখানে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। কোনো বড় বাজেট নেই। উপকূলীয় এলাকার লোকজন বাঁচাতে এই অঞ্চলে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার জরুরি।’

গর্তে জমে থাকে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গর্তে জমে থাকে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘নগরঘাটা গ্রামের রাস্তাঘাট খুবই খারাপ। হাঁটুর ওপর জল ওঠে বর্ষাকালে। আমরা চলতে-ফিরতে পারি না। মা-বোনেরা চলতে-ফিরতে পারে না। আমাদের দাবি, এই রাস্তা সংস্কার করা হোক।’

একই এলাকার শিমুল সরদার বলেন, ‘রাস্তা এত খারাপ যে ধান-চাল আনা যায় না। গরু-ছাগল পর্যন্ত আনা যায় না। এই রাস্তার পাশে আমাদের ঘের রয়েছে। ঘেরে খাদ্য-খাবার দিতে গেলে মাথায় বহন করে নিতে হয়। এ ছাড়া ধান-চাল বহন করতেও খুব কষ্ট হয়।’

‘সাতক্ষীরা গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের একটি প্রকল্প পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে একনেক বৈঠকে। উন্নয়ন প্রকল্পটি পাস হলে জেলাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে মনে করেন এলজিইডির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে এলজিইডি সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী তারিকুল হাসান খান বলেন, ‘সাতক্ষীরা এলজিইডির অধীনে ১১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৩০ কিলোমিটার রাস্তা পাকা। সুতরাং আমাদের শতকরা ৮০ ভাগ রাস্তা এখনো কাঁচা। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প নামের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে সাতক্ষীরার মানুষ উপকৃত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৃন্দাবন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের রজতজয়ন্তী: উন্মুক্ত মঞ্চে জুতা-বোতল নিক্ষেপ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে জুতা, বোতল নিক্ষেপসহ হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ব্যান্ড দল ‘লালন’ মাত্র দুটি গান পরিবেশন করে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হয়।

্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে হট্টগোল শুরু হয় এবং রাত সাড়ে ১০টায় পুরো অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। বিশৃঙ্খলার ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, শনিবার দিনব্যাপী বৃন্দাবন সরকারি কলেজে পুনর্মিলনী উপলক্ষে ক্যাম্পাস মুখর ছিল। সারা দিন সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান চললেও সন্ধ্যার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জালাল স্টেডিয়ামে স্থানীয় সংগীতশিল্পী বাঁধন মোদক মঞ্চে ওঠার পর থেকে দর্শকেরা হট্টগোল শুরু করেন। তাঁরা মঞ্চের সামনের বাঁশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন এবং মঞ্চ থেকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাঁরা কর্ণপাত করেননি। ব্যান্ড দল লালন মঞ্চে উঠলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়তে থাকে। যার ফলে তাদের দুটি গান শেষে পরিবেশনা বন্ধ করতে হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শকদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে দর্শক-শ্রোতারা দ্রুত দৌড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন, এতে পদদলিত হয়ে কয়েকজন আহত হন। এ সময় রাস্তায় বহু জুতা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়া কয়েকজন নারী অভিযোগ করেন, এমন অব্যবস্থাপনার কারণে অনুষ্ঠানস্থলে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন। তাঁরা বলেন, একটি শিক্ষাঙ্গনের অনুষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অপ্রত্যাশিত।

ব্যান্ড দল ‘লালন’ মাত্র দুটি গান পরিবেশন করে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্যান্ড দল ‘লালন’ মাত্র দুটি গান পরিবেশন করে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজকদের একজন জানান, হবিগঞ্জের এক স্থানীয় শিল্পী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত রাখার পরামর্শ দেন। তবে তিনি (আয়োজক) মনে করেন, অনুষ্ঠানটি শুধু ব্যবস্থাপনা বিভাগ বা বড়জোর কলেজশিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত ছিল। এই অবস্থার জন্য ‘অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা’ও দায়ী বলে মন্তব্য করেন ওই আয়োজক।

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক রাজীব আহমেদ রিংগনের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দিন শাহীন জানান, পরিবেশ শান্ত করতে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দৌড়াদৌড়ির সময় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত