Ajker Patrika

অনলাইনে জুয়াতে অঢেল সম্পদ গড়েছেন দুই মাস্টার এজেন্ট 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অনলাইনে জুয়াতে অঢেল সম্পদ গড়েছেন দুই মাস্টার এজেন্ট 

মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া (বেটিং) পরিচালনা করে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু (২৮) ও রানা হামিদ (২৬)। তারা দুজনই অনলাইন জুয়া (বেটিং) চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের মাস্টার এজেন্ট। বেটিং সাইট থেকে অবৈধভাবে আয় করা এসব অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমি, গাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদও গড়ে তোলেন তারা। তবে এই জুয়ার মাস্টার মাইন্ড থাকেন বিদেশে। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করেন এসব কার্যক্রম। 

আজ বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এস হাফিজ আক্তার। এর আগে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনলাইন জুয়া (বেটিং) চক্রের বাংলাদেশের মাস্টার দুই এজেন্ট তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু ও রানা হামিদ ও তাদের সহযোগী সুমন মিয়াসহ (২৫) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। 

অভিযানে তাদের কাছ থেকে ঢাকা মেট্রো-গ-৩৬-০৩৫১ নম্বর প্লেটের একটি প্রাইভেটকার, নগদ ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ৪টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন, ৫টি সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি অ্যাকাউন্ট ও ২৩টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার তিন আসামির নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এস হাফিজ আক্তার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জানায়, তরিকুল ইসলাম বাবু, রানা হামিদ এবং সুমন মিয়া চক্রের পলাতক আসামি সাথি আক্তারসহ আরও ৫০ / ৬০ জন পলাতক আসামিদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন জুয়া (বেটিং) পরিচালনা করে আসছে। তারা মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট পরিচালনা করতেন। 

হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় লোকাল এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। লোকাল এজেন্টে বেটিংয়ে অংশগ্রহণকারীর নিকট থেকে নগদ অর্থের বিনিময়ে প্রতিটি পিবিইউ ১৫০ টাকা নিয়ে বিক্রয় করে থাকে। এই কাজে অবৈধ অর্থের আদান-প্রদান মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করা হয়। এভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের অর্থ আসামিদের মাধ্যমে দেশের বাইরে চলে যায়। এরা ভুয়া ফেসবুক আইডি ও বিদেশি নম্বরের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে বেটিং সাইডগুলো পরিচালনা করে ও গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।’ 

এ খেলার ভয়াবহতা তুলে ধরে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘অনলাইন জুয়া একটা নেশার মতো, এখানে একবার ঢুকলে নিঃস্ব হওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই। অংশগ্রহণকারীরা নিঃস্ব হয়ে যাওয়ায় পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে, আইন-শৃঙ্খলার ওপর প্রভাব পড়ছে।’ 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নোত্তরে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারত থেকে এ সাইটগুলোর ডোমেইন ব্যবহৃত হয়। বিটিআরসি অনেক সাইট বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে এগুলো পরিচালনা করছেন। আমাদের পুলিশের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। সকলকে সামাজিকভাবে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।’ 

অনলাইন জুয়া পরিচালনাকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা এখনো এ অনলাইন জুয়ায় জড়িত আছেন আপনারা যদি এ খেলা ছেড়ে অন্য পেশায় না আসেন তাহলে আপনাদের সকলের পরিণতি এদের মতো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত