Ajker Patrika

পদ্মা সেতু: বিচ্ছেদকে মিলিয়ে দেওয়ার আনন্দ

নাজমুল হাসান সাগর, মাওয়া প্রান্ত থেকে
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৬: ২৩
পদ্মা সেতু: বিচ্ছেদকে মিলিয়ে দেওয়ার আনন্দ

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সামনে রেখে, নিরাপত্তার স্বার্থে পদ্মা সেতুর কাছাকাছি স্থানগুলো কড়া নজরদারিতে আছে গত কয়েক দিন থেকেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তাই সেতু দেখার মতো অবস্থা নেই। তবু প্রতিদিনই দেশের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সী মানুষ আসছেন দেশের সক্ষমতার এই প্রতীক এক নজর দেখার জন্য। 

যতটুকু কাছাকাছি গিয়ে দেখা যায়, সেই চেষ্টা নিয়েই সেতুর পার্শ্ববর্তী স্থানগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা। অনেকেই সেতু দেখে প্রথমবার সমুদ্র দেখার মতো আনন্দ-অনুভূতি প্রকাশ করছেন। আবার বয়সে যাঁদের একটু বেশি, প্রমত্তা পদ্মা তাঁদের কাছে বিচ্ছেদের এক নাম। তাঁরা কিছুটা অবিশ্বাস, বিস্ময় আর ভালো লাগা নিয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখছেন। পদ্মার এপার-ওপার কোনো দিন এক হবে, সেটা কখনো ভাবেনি একটা প্রজন্ম। তাই তাদের বিস্ময় অনেক বেশিই।

আজ মঙ্গলবার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু দেখতে আসা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এমন অনুভূতি পাওয়া গেল। দেশের মানুষের মতো প্রতিবেশী দেশের অতিথিদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এই পদ্মা সেতু। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাদেশে ঘুরতে এসে পদ্মা সেতু এক নজর দেখতে এসেছেন সুশান্ত ও কৃষ্ণা নিয়োগী। পদ্মার বুকে দৃশ্যমান এই সেতু শুধু বাংলা না, আমাদেরও, সব বাঙালির গর্ব—উচ্ছ্বাস এই দম্পতির কণ্ঠে। বর্তমানে ভারতের বাসিন্দা সুশান্তর বাড়ি ছিল দিনাজপুরের রামডুবিতে। জন্মের দুই বছর পর দেশ ছেড়েছেন। এবারই প্রথম বাংলাদেশে আসা। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অর্জন এ দেশের মানুষের মতো তাঁকেও আনন্দ দেয়। বললেন, পদ্মার বুকে সেতু দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। গর্ব হচ্ছে বাঙালি হিসেবে।

তবে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে যে এই সেতু হয়েছে, এটা তাঁদের মতো অধিকাংশ ভারতীয় জানেন না। এই তথ্য শুনে চমকে উঠলেন নিয়োগী দম্পতি ও তাঁদের সঙ্গে ঘুরতে আসা অপর দুই ভারতীয় গণেশ দাস ও গণেশ দে। গণেশ দাস বললেন, ‘আমরা তো জানতাম এই সেতু নির্মাণ হচ্ছে চীনের টাকায়। সঙ্গে আছে আরও অনেক বিদেশি সহযোগিতা।’ সায় দিলেন গণেশ দে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

এবার আনন্দটা মনে হয় দ্বিগুণ হলো সুশান্তর। অবসরপ্রাপ্ত এই স্কুলশিক্ষক বললেন, প্রতিবেশী ও জন্মস্থান হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের আলাদা একটা টান আছে। কৃষ্ণার কথায়, ‘বাংলাদেশে এসেই প্রথম লক্ষ্য ছিল পদ্মা সেতু দেখব ৷ আজ সেটা দেখতে এসে খুব ভালো লাগছে। বেশি ভালো লাগত যদি উদ্বোধনটা দেখে যেতে পারতাম।’ 

গণেশ দে বললেন, ‘আমার বাপ-দাদার আদি ভিটা মুন্সিগঞ্জ। কয়েক বছর পরপরই বাংলাদেশে আসি। এবার বিশেষ করে এসেছি পদ্মা সেতুর জন্যই। সব থেকে ভালো লাগত যদি উদ্বোধনটা দেখে যেতে পারতাম।’ পরেরবার এসে সেতু দিয়ে ওপার যাওয়ার আশা ব্যক্ত করলেন তাঁরা।

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত