Ajker Patrika

ঋণের টাকা শোধ করতে শিশু অপহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৯: ১২
ঋণের টাকা শোধ করতে শিশু অপহরণ

আশুলিয়া থানার পল্লী বিদ্যুৎ কবরস্থান এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক রানা আহমেদ বাকি। ২০০৯ সালে ভাগ্য উন্নয়নে জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে প্রবাসে গিয়েছিলেন। কিন্তু মানব পাচার চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে আরব আমিরাতে ২৩ দিন জেল খেটে দেশে ফিরে আসেন। দেশে আসার পর কোনোভাবেই সেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। কিন্তু সুদে নেওয়া ঋণের টাকা দিনে দিনে বেড়ে কয়েক গুণ হয়েছে। আর এই ঋণের টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে শোধ করতেই বেছে নেন অপহরণের পথ। আশুলিয়া থেকে অপহরণের শিকার সাড়ে তিন বছরের শিশু আফিয়াকে উদ্ধার শেষে এমন তথ্য দিয়েছে। 

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক। 

র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, শিশু আফিয়ার পরিবার ও অপহরণকারী রানা আহমেদ বাকি একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্রে আফিয়ার বাবার সঙ্গে রানার সুসম্পর্ক তৈরি হয়। আর এই সম্পর্কের সূত্র ধরে রানা বিভিন্ন সময়ে আফিয়াকে বিভিন্ন ধরনের মজাদার খাবার কিনে দিতেন। ফলে আফিয়া রানাকে মামা ডাকত। শিশু আফিয়ার বাবা আবুল কালাম আজাদ ও মা সোনিয়া বেগম দুজনই গার্মেন্টসে চাকরি করার কারণে মেয়েকে দীর্ঘদিনের পরিচিত আনোয়ারা নামে এক বয়োবৃদ্ধ নারীর কাছে রেখে যেতেন। ওই নারীর পাশের রুমের ভাড়াটে ছিলেন রানা। 

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ২১ অক্টোবর দুপুরে চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে আফিয়াকে বাসার বাইরে নিয়ে যান রানা। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আফিয়াকে অপহরণ করার পল্লী বিদ্যুৎ কবরস্থান থেকে রিকশায় করে বলিভদ্র বাজারে যান। বাজার থেকে শিশুটিকে নতুন পোশাক কিনে দেন। পরে বাসে করে চন্দ্রা যান। চন্দ্রা বাসস্ট্যান্ড থেকে একই দিন বেলা ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় রানার এক বন্ধু রবিউলের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে শিশু আফিয়াকে নিজের মেয়ে বলে পরিচয় দেন এবং বন্ধুকে জানান তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না বিধায় কিছুদিন থেকে চলে যাবেন। এদিকে শিশুটির পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে ৪ লাখ টাকা মুক্তি দাবি করেন। টাকা না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলা হবে বলে জানান। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন রাতে শিশুটির পিতা-মাতা কাজ থেকে ফিরে এসে সন্তানকে বাসায় না পেয়ে র‍্যাব-৪ এ অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরপরই র‍্যাব বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশু আফিয়াকে উদ্ধার করে র‍্যাব। 

গ্রেপ্তার রানার বরাত দিয়ে র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক বলেন, রানা দুই বছর ধরে আশুলিয়া থানার পল্লী বিদ্যুৎ কবরস্থান রোড এলাকায় ভাড়া থাকেন। পেশায় রিকশাচালক রানা রাতে কাজ করতেন। আর দিনের বেলা ঘুমাতেন। রানা বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় জানান তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায় এবং নানার বাড়ি ধামরাই থানায়। তিনি নিজেকে অবিবাহিত বলে পরিচয় দিতেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি বিবাহিত এবং তাঁর একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। তাঁর নিজ বাড়ি পাবনা জেলার সদর থানায় ভাউডাঙ্গা গ্রামে এবং শ্বশুরবাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায়। ঋণের টাকা শোধ করতেই শিশু আফিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণের টাকা দিয়ে তিনি ঋণ শোধ করবেন এমন পরিকল্পনা করেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩

থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসা পেতে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে

দক্ষিণপন্থীদের কবজায় বাংলাদেশের রাজনীতি: বদরুদ্দীন উমর

এবার প্রশাসনিক কাজে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত কুয়েট শিক্ষক সমিতির

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত