Ajker Patrika

অনৈতিক কাজে টাকার বনিবনা না হওয়ায় শ্বাসরোধে হত্যা

গাজীপুর ও শ্রীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯: ০৮
অনৈতিক কাজে টাকার বনিবনা না হওয়ায় শ্বাসরোধে হত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুরে কোমরে ইট বেঁধে ডোবায় ডুবিয়ে লাশ গুম করার প্রায় ১৩ মাস পর অজ্ঞাত নারীকে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও জড়িত তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে, মরদেহটি পচে যাওয়ায় অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের মো. খোকন মিয়া (২৭) ও মো. রাজীব মোড়ল (২৬)। তাঁদের মধ্যে মোখলেসুর ও খোকন মিয়াকে গত মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীব মোড়লকে গতকাল রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করলে আসামি রাজিব মোড়ল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়দা নাসরিন বন্যার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  

রাজিব মোড়ল বলেন, ফুর্তি করার জন্য ওই নারীকে এক রাতের জন্য এনে সবাই একসঙ্গে ইয়াবা সেবনের পর তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে লেনদেন নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যার করে হাত, পা ও কোমরে ইট বেঁধে মরদেহ ডোবার পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। 

পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, গত বছরের ২৫ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ডোবা থেকে হাত, পা বাঁধা ও কোমরে তিনটি ইট বাঁধা ৩০ বছর বয়সী এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্তের পরও কোনো তথ্য উদ্‌ঘাটিত না হওয়ায় গাজীপুর পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

তিনি বলেন, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলার নথিপত্র, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আসামিরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। 

মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরও বলেন, গত বছর ঘটনার তিন-চার দিন আগে তাঁরা তিন বন্ধু মিলে চায়ের দোকানে বসে ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি নারী এনে শারীরিক সম্পর্ক করে ফুর্তি করবে বলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমনের বাড়ির পাশে নির্জন জায়গাতে যায় এবং মেয়েটিকে নিয়ে ইয়াবা সেবন করেন। সেখানে তাঁরা প্রায়ই ইয়াবা সেবনের আড্ডা বসাত। 

ইয়াবা সেবনের পর মেয়েটির সঙ্গে তাঁরা শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে শারীরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে মেয়েটির সঙ্গে তাঁদের বনিবনা হয়নি। এ নিয়ে মোখলেস, খোকন ও রাজীবের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে তাঁরা মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের একটি ডোবার মধ্যে হাত, পা ও কোমরে ইট বেঁধে মরদেহটি ডুবিয়ে রেখে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত