Ajker Patrika

টাকা ছাড়া কৃষকের ধান নেন না খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা প্রবীর

শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ৪৬
টাকা ছাড়া কৃষকের ধান নেন না খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা প্রবীর

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্তনীয়া। টাকা না দিলে কৃষকদের কাছ থেকে তিনি ধান গ্রহণ করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এই কর্মকর্তার অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতায় কমেছে কৃষকদের থেকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ। এতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন উপজেলার কৃষকেরা। 

অভিযোগ উঠেছে, এসব অপকর্ম ঢাকতে প্রবীর একটি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খানকে গুদাম থেকে তিন টন চাল দিয়েছেন।

সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি ৩২ টাকা দরে ২ হাজার ২৫৬ টন ধান সংগ্রহের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট ধান সংগ্রহের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ২৪৯ জন কৃষকের কাছ থেকে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৭৪৮ টন ধান।

কৃষক বাবুল শিকদার বলেন, ‘আমাদের ধান দিতে গেলে সমস্যা। টাকা না দিলে ধান নেয় না। অফিসের কর্মকর্তার কাছে ৫ হাজার টাকা দিলে আমাদের ধান নেয়।’

কৃষক টিটু ফকির বলেন, ‘জমিতে কয়টা ধান হয়েছিল। সেই ধান নিয়ে গেছিলাম গোডাউনে। সেখানে ধান নিতে চায় নাই। ঘুষ চায়ছে ধান নেওয়ার জন্য। শেষে গোডাউনের যে স্যার, তারে ৫ হাজার টাকা দিছি।’

শের আলী সিকদার নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘আমি একবার ধান নিয়ে গেছিলাম গোডাউনে। অফিসারগে কাছে গেছি, কয় টাকা দাও, টাকা না দিলে ধান নেব না। টাকা দেই নাই বলে ধান নেয় নাই। পরে কী করব, ধান বাড়ি নিয়ে আইসে সস্তায় বেইচে দিছি।’
নাম না প্রকাশের শর্তে খাদ্যগুদামসংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রবীর কীর্তনীয়ার এমন অনিয়মের কারণেই চলতি বছরের বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সংগ্রহ করা হয়নি বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশ ধানও। প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ তিন টন ধান কেনার কথা থাকলেও ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা না দিলে ধান সংগ্রহ করা হয় না।’

কৃষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রবীর কুমার। তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ১৫ আগস্টের আয়োজন উপলক্ষে আমার কাছে ২০ টন চাল দাবি করেছিলেন। চাল না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্নজনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দেন। তাঁকে চাল দিতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্যারও আমাকে বলেন। পরে আমি তাঁকে আমার পকেটের টাকা দিয়ে সরকারি ডিলারদের কাছ থেকে তিন টন চাল কিনে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে চাল দেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কৃষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত