Ajker Patrika

জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া ভিডিও নিয়ে র‍্যাবের পর্যালোচনা 

প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং র‍্যাব-৭ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত ৪ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্য থেকে আল আমিন ওরফে মিলদুলের কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোনে ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামের সংগঠনের আমির আনিছুর রহমান এবং দাওয়াতি শাখার প্রধান আবদুল্লাহ মাইমুনের সদস্য ও অর্থ সংগ্রহ বিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্যের একটি ভিডিও কনটেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে ভিডিও পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, গত ২২ জানুয়ারি এই সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। ভিডিওতে ২৯ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল উদ্ধার হওয়া ৭ মিনিট দৈর্ঘ্যের ভিডিওতে আরও ২৩ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়।

এই ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জন জঙ্গি গত ২২ জানুয়ারি উদ্ধার হওয়া ভিডিওতেও ছিলেন বলে জানিয়েছেন খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, আজকের ভিডিওতে নতুন করে ৪ জঙ্গির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন, শেখ আহমেদ মামুন ওরফে রমেশ, শামিম মিয়া ওরফে বাকলাই ওরফে রাজান, নিজাম উদ্দিন হিরণ, ডা. জহিরুল ইসলাম ওরফে আহমেদ (ভিডিওর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৬ জুন মৃত)।

র‍্যাবের পর্যালোচনা বলছে, গত ২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত ভিডিও এবং আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ভিডিওতে সর্বমোট শনাক্ত জঙ্গিদের মধ্যে র‍্যাব এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। দুইটি ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস দিয়েছেন আল আমিন ওরফে বাহাই (নারায়ণগঞ্জ থেকে নিখোঁজ রিয়াসাত রায়হানের প্রাইভেট টিউটর) এবং ভিডিও এডিটিং করেছেন পাভেল। 

ভিডিওটির এডিট ও ভয়েসের বিষয়ে তিনি বলেন, নিখোঁজ তরুণ আবু বক্করের মা আম্বিয়া বেগম ছেলের সন্ধান চেয়ে আকুতি জানিয়েছিলেন। সেই আবু বক্কর তারই শিক্ষক আল আমিনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ান। এই ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে আল আমিনের ভয়েস ব্যবহার করা হয়। ভিডিওটি এডিট করেন আরেক জঙ্গি নিখোঁজ তরুণ পাভেল। 

অমুসলিম পার্থ কুমারের জঙ্গিবাদে জড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন পার্থ কুমার দাস। পরে তিনি কাকরাইল এসে পেশাগত কাজ করছিলেন। এই সময়ে সিরাজ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ান। এই সিরাজের মাধ্যমে অনেকেই এই সংগঠনে জড়াতে উদ্বুদ্ধ হন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। সিরাজ পার্থকে বিদেশে চাকরিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখান। পরে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে যান এবং প্রশিক্ষণ নেন।

জঙ্গি সংগঠনটির তৈরি করা ভিডিও কত দূর ছড়িয়েছে জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, আমরা গ্রেপ্তার চারজনের মোবাইল থেকে চারটি ভিডিও পেয়েছি। ভিডিওগুলো গত বছরের ২৯ নভেম্বর তাদের কাছে এসেছে। তবে ভিডিওটি তাদের নিজেদের মধ্যেই ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ায়নি। আমরা যতটা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছি, ভিডিওটির কাজ চলমান ছিল এবং নিজেদের মধ্যেই ছিল।

এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অভিযানে সংগঠনটির অর্থ শাখার উপ প্রধানসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা যে তথ্য পেয়েছি, এতে তাদের ডোনার শাখার একাধিক সদস্য ছিল। দেশে ও বিদেশে তাদের বেশ কিছু ডোনার সদস্য রয়েছেন। মূলত সংগঠনটির সদস্যরা মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সামাজিক ভালো কাজে অর্থ খরচ করার নামে এই অর্থ সংগ্রহ করেন। আমাদের অভিযানে অর্থ শাখার হাবিবুল্লাসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের সময়ে সাত লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ডা. জহিরুল ইসলাম ওরফে আহমেদ নিহতের বিষয়টি তারা নিজেদের ভিডিওতে রেখেছেন। তিনি ২০২২ সালের ৬ জুন নিহত হন। তারা ভিডিওতে দেখিয়েছেন, অন্য একটি পাহাড়ি সংগঠনের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াইয়ের সময়ে তিনি নিহত হন। তার নামে একটি ক্যাম্পের নাম করণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত