Ajker Patrika

মানিকগঞ্জের ঘিওর

সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বালু লুট বিএনপি নেতার

মো. আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) 
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৩: ০০
সরকারি প্রকল্প ভরাটের নামে নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গত শনিবার মানিকগঞ্জের ঘিওরের মাইলাগী আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন পুরোনো ধলেশ্বরী নদীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রকল্প ভরাটের নামে নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গত শনিবার মানিকগঞ্জের ঘিওরের মাইলাগী আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন পুরোনো ধলেশ্বরী নদীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের ঘিওরে সরকারি প্রকল্পে বালু ভরাটের নামে নদীতে অবৈধভাবে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে খননযন্ত্রে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে অবাধে বালু লুট করছেন।

এদিকে বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নদীতীরে অবস্থিত সরকারি স্থাপনাসহ বসতভিটা ও আবাদি জমি। অথচ স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘিওর উপজেলার মাইলাগী আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন পুরোনো ধলেশ্বরী নদীতে অবৈধভাবে দুটি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই বালু তুলছেন উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পিন্টু মিয়া। খননযন্ত্রের ওপর সাইনবোর্ড টাঙানো আছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘ঘিওরে সরকারি আইটি ভবনের জায়গা মাটি ভরাটের জন্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।’

জানতে চাইলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীতে বালু উত্তোলনের কারণে আমাদের মাথা গোঁজার একমাত্র জায়গা এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটাও বর্ষা মৌসুমে নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। আমাদের থাকার মতো কোনো জায়গা নাই বলে সরকার আমাদের এখানে থাকতে দিয়েছে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ৩৫টি ঘর রয়েছে। আমরা সবাই গরিব মানুষ, আমাদের এই থাকার জায়গা নদীতে ভেঙে গেলে থাকার কোনো জায়গা আর থাকবে না। কিন্তু কেউ এই বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’

সরকারি প্রকল্প ভরাটের নামে নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গত শনিবার মানিকগঞ্জের ঘিওরের মাইলাগী আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন পুরোনো ধলেশ্বরী নদীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রকল্প ভরাটের নামে নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গত শনিবার মানিকগঞ্জের ঘিওরের মাইলাগী আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন পুরোনো ধলেশ্বরী নদীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঘিওর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পিন্টু মিয়া বলেন, ‘জমির মালিকের কাছ থেকেই মাটি কিনেছি। খননযন্ত্র আমার ছিল। কাল থেকে কাটব না। আপনি আসেন, একসঙ্গে বসে একটু চা খাই, আর আপনার সঙ্গে সরাসরি কথা বলি।’

এ বিষয়ে উপজেলার বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জান মানিক বলেন, ‘আমার বক্তব্য নিয়ে লাভ নেই। আপনি উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, ‘কোনো খননযন্ত্রের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত