Ajker Patrika

পাংশায় সিজারিয়ান অপারেশনের ৫ দিন পর প্রসূতির মৃত্যু

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
Thumbnail image

রাজবাড়ীর পাংশায় সিজারিয়ান অপারেশনের পাঁচ দিন পর এক প্রসূতির মৃত্যুর হয়েছে। শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তাঁর অপারেশন হয়। এদিকে ওই নারীর স্বজনদের অভিযোগ ভুল চিকিৎসায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 

মৃত প্রসূতির নাম মোছা. রেহেনা বেগম (৩৫)। তিনি উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের মাঝাইল গ্রামের ওয়াজকুরুনী বিশ্বাসের স্ত্রী। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জেলা সিভিল সার্জনের। 

প্রসূতি রেহেনা বেগমের পরিবার জানায়, গত বুধবার সিজারের জন্য রেহেনা বেগমকে পাংশা মাগুডাঙ্গী এলাকার লিজা হেল্থ কেয়ার নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাতে তার সিজারিয়ান অপারেশন হয়। জন্ম নেয় একটি ছেলে সন্তান। তবে অসুস্থ হয়ে পড়ে রেহেনা বেগম। পেটের সেলাই খুলে দেখা হয় তার অপারেশনে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি না। পরে রেহেনা বেগম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর পাঠানো হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হলে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার দুপুরে মারা যান রেহেনা বেগম। 

রেহেনা বেগমের স্বজনদের অভিযোগ, লিজা হেল্থ কেয়ারে রেহেনার দুইবার অপারেশন করা হয়েছে। সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জানতে পারে অপারেশনের সময় তার প্রস্রাব নালি কেটে ফেলা হয়েছে। তাদের দাবি পাংশার লিজা হেল্থ কেয়ার থেকে ভুল চিকিৎসার কারণে রেহেনার মৃত্যু হয়েছে। 

রেহেনার স্বামী ওয়াজকুরুনী বিশ্বাস বলেন, ‘স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় আমাদের পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুনা বিশ্বাস আমাকে ফোন করে লিজা হেল্থ কেয়ারে ডেকে নিয়ে যায় এবং বলে আমার ছেলের ভবিষ্যতের জন্য পরে হেল্প করবে। এখন আমাদের এ বিষয় নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।’ 

এ বিষয়ে পাট্টা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রব মুনা বিশ্বাস বলেন, ‘ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ক্লিনিকের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে মৃত ওই প্রসূতির পরিবারকে কিছুটা হেল্প করবে।’ 

লিজা হেল্থ কেয়ারে ব্যবস্থাপক অরুণ কুমারের বলেন, ‘মৃত ওই নারীর সিজারিয়ান অপারেশন আমাদের ক্লিনিকে হয়েছে।’ তাঁর অপারেশনে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই নারীর অপারেশন করেছেন ডা. শাহজাহান এস মোয়েব। এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।’ পরে মালিক পক্ষে সাড়া পেয়ে স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যান তিনি। এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। 

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপর কুমার মজুমদার বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগই পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আহম্মেদ তিথি বলেন, ‘বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমরা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত