Ajker Patrika

কলেরা, বসন্ত দূর করতে শত বছরের ঐতিহ্য গাঁওয়ালী শিন্নি

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

কলেরা, বসন্ত দূর করতে শতাধিক বছর ধরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে অনুষ্ঠিত হয় শিন্নি উৎসব। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শিন্নি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুলতানপুর গ্রামে হাজারো মানুষের সমাগমে আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই উৎসবে অংশ নেয়।

এলাকাবাসীর সার্বিক তদারকি ও সহায়তায় স্থানীয় ভাষায় গাঁওয়াইল্যা শিন্নি, খোদার শিন্নি রান্না করা হয়।

নতুন চাল, চিনি, গুড় আর গাভির দুধে এই শিন্নি রান্না করা হয়। শিন্নিতে লবণ দেওয়ার নিয়ম নেই। এরপর তা আশপাশ গ্রাম থেকে আগত মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। তবে অনেক এলাকায় আশপাশের লোক ছাড়াও নিজের গ্রামের মানুষজনও শিন্নি খেয়ে থাকেন। শিন্নি উৎসবের আগে বেশ কয়েক দিন গ্রামবাসী রাতে জিকির আজগার করেন।

শিন্নি বিতরণ ও সার্বিক আয়োজকদের মধ্যে জুলমত আলী খান, আলামত খান, রশিদ খান, শহিদ খান এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। গ্রামের মানুষের বিভিন্ন রোগব্যাধি, মছিবত থেকে মুক্তি এবং সমৃদ্ধি কামনায় এই শিন্নি করা হয় বলে জানালেন আয়োজকেরা।

শিন্নি উপলক্ষে গ্রামে প্রাণবন্ত উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। অর্থনৈতিক অবস্থা ভেদে জন প্রতি ২০ থেকে ৫০০ টাকা ও সব বাড়ি থেকে চাল দিয়ে উৎসবে অংশ নেন গ্রামবাসী।

আয়োজক জুলমত আলী খান বলেন, ‘বাব দাদার আমল থেকেই এই শিন্নি হয়। বালা, মছিবত, বিপদ-আপদ ও কলেরা থেকে বাঁচার জন্য এই শিন্নি করতেন আমাদের পূর্ব পুরুষেরা।’

আয়োজকদের আরেকজন আলামত খান বলেন, ‘কথিত আছে, এক-দেড় শ বছর আগে এই গ্রামে ডায়রিয়া-কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। এক ফকির এ ধরনের শিন্নির আয়োজন করার পরামর্শ দেন। উৎসব পালন শেষে গ্রামবাসী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই গ্রামের লোকজন প্রতি বছর একবার এই দিনে শিন্নি পালন করে আসছেন।’

বলড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন জানান, শিন্নি এখানকার একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। যা শত বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত