Ajker Patrika

১০০ টাকায় মাসব্যাপী ডে কেয়ার!

সাবিত আল হোসেন
Thumbnail image

আছিয়া বেগম কাজ করেন একটি তৈরি পোশাক কারখানায়। ২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাঁর। কারখানায় যোগদানের পর থেকে তার ছেলেকে নিজের ছোট বোনের কাছে রেখে যান। তার স্বামীও গাড়ির কাজে বাইরে থাকেন দিনের বড় একটি সময়। সম্প্রতি ছোট বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় শিশুপুত্রকে কোথায় রাখবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। কিছুদিন পাড়া প্রতিবেশীর কাছে রাখলেও তা খুব একটা নিরাপদ মনে হয় না তার কাছে। এমন পরিস্থিতিতে খোঁজ মেলে সরকারি ডে কেয়ার সেন্টারের। 

নারায়ণগঞ্জে ডে কেয়ার সেন্টার ঠিক কোথায় আছে তা সহজে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শহরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু ডে কেয়ার সেন্টার পরিচালিত হলেও তা এখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। এসব সেন্টারে মাসিক খরচও আছে বেশ। কিন্তু মাত্র ১০০ টাকায় সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে শহরেই তা কজন জানে? কিন্তু এমন অসাধ্যসাধন করে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালিত করে যাচ্ছে সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার। মূলত জেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় এই ডে কেয়ার সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ শহরের উত্তর ইসদাইর এলাকায় ফরিদা ভবনের নিচ তালায় পরিচালিত হয় সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার। প্রায় ৮০ জন শিশু ধারণক্ষম এই সেন্টারে মোট ৮ জন কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। করোনা কালে শিশুদের আগমন কমে গেলেও স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে আবারও সরগরম হয়ে উঠবে সেন্টারটি  এমনটাই জানান দায়িত্বরতরা। 

সরেজমিনে ডে কেয়ার সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে প্রায় ৭টি রুম নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার। রয়েছে খেলা ঘর, খেলনা, খাবার রুম, রান্না ঘর, শোয়ার রুম, ব্রেস্ট ফিডিং রুম। প্রতিদিন প্রায় ৮০ জন শিশু এই ডে কেয়ার সেন্টারে সেবা নিতে পারে। শিশুদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং শিশু বয়সের প্রাথমিক শিক্ষাও প্রদান করা হয় এই কেয়ার সেন্টার থেকে।

সেন্টারের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী কাম শিক্ষিকা আফসানা খানম বলেন, আমাদের এখানে শ্রমজীবী নারীরা তাদের সন্তান রেখে যান। ৬ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত শিশুদের আমরা এই সেন্টারে রাখি। বর্তমানে লকডাউনের কারণে শিশুরা আসছে না। লকডাউনের পূর্বে প্রতিদিন ৬০ এর অধিক শিশু থাকত এখানে। এই কেয়ারে ভর্তি হতে ১০০ টাকা এবং মাসিক ১০০ টাকা নামমাত্র চার্জ রাখি আমরা।

সেবার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে সকাল, দুপুর ও বিকেলে শিশুদের খাবার দেওয়া  হয়। পাশাপাশি তাদের শিক্ষা ও দেখভাল করি আমরা। সকালের নাশতায় দুধ, সুজি, পাউরুটি বা খিচুড়ি। দুপুরের খাবারে ভাত মুরগি/মাছ/ডিম এবং সবজি। বিকেলের নাশতায় ফল দেওয়া  হয়। তব সরকারি এই সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করার উদ্যোগ প্রয়োজন কি-না  জানতে চাইলে বলেন, আমাদের মতে প্রচারণা প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রচারণা ছাড়াই পর্যাপ্ত শিশু রয়েছে। আমরা চেষ্টা করি নারীরা যেন তাদের সন্তানদের লালন পালনের পাশাপাশি নির্বিঘ্নে কর্মক্ষেত্রে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। আর সেই কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমরা সদা সচেষ্ট রয়েছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত