তৌফিকুল ইসলাম, মাওয়া (মুন্সিগঞ্জ) থেকে ফিরে
প্রমত্তা পদ্মার ওপর নির্মিত সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এখন চলছে শেষ সময়ের কাজ। ২৫ জুনের আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানালেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের। সেই অপেক্ষায় আছেন আমজাদ আলীরা। মধ্যবয়সী আমজাদ বরিশাল থেকে ঢাকায় আসছিলেন। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে দুই হাতে দুটি ব্যাগ নিয়ে লঞ্চ থেকে নেমে ঢাকায় যাওয়ার বাস ধরতে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ধানমন্ডিতে মেয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছি। তাই ব্যাগপত্র বেশি। বরিশাল থেকে সরাসরি বাসে আসতে গেলে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। সে জন্য বরিশাল থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত বাসে এসেছি। এরপর লঞ্চে নদী পার হয়ে বাসের অপেক্ষায় আছি।’
আমজাদ আলীর কথায়, আর কিছুদিন পরেই পদ্মা সেতু চালু হলে তাঁদের যাত্রাপথের এই ভোগান্তি শেষ হবে। সে জন্য এখন শুধু দিন গুনছেন। আর কয়েকটা দিন গেলেই বাঁচেন। বললেন, সেতু চালু হলে বাসে টাকা বেশি নিলেও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ। গতকাল শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুসংলগ্ন এলাকায় বাইরের
লোকজনের উপস্থিতি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা। মাওয়া গোলচত্বর এলাকায় কাউকে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না। তবে পদ্মা সেতু একনজর দেখতে মাওয়া ঘাটে মাছের আড়তের পাশে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।
স্ত্রী ও তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে এসেছিলেন জুবায়ের আরেফিন। তিনি বলেন, ‘শুধু পদ্মা সেতু একনজর দেখার জন্য কেরানীগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। সেনাবাহিনীর ক্যাম্প আছে বলে একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে। সব জায়গায় যেতে দিচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ছবি-ভিডিওতে দেখেছি। আজ সামনাসামনি দেখে মুগ্ধ হলাম। এটা ইতিহাস। সেই ইতিহাসের অংশ হিসেবে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসে ছবি তুলে রাখলাম স্মৃতি হিসেবে।’
পদ্মা সেতুসংলগ্ন মাওয়া বাজারে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে। সেই কাজ এখন শেষের পথে। আর কয়েক দিন পরেই উদ্বোধন। সেতু খুলে দেওয়ার খবরে এলাকাবাসী হিসেবে ভালো লাগছে। তিনি মনে করেন, সেতু চালু হলে তাঁদের এলাকার ব্যাপক উন্নতি হবে। দিন বদলে যাবে। নতুন করে তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করতে পারবেন। ২৫ জুন তাই তাঁদের জন্য একটা শুভ দিন হিসেবে আসছে। পদ্মা সেতুর কাজ শেষের পথে ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে সাঁইসাঁই করে খুব দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে মাওয়া। সেখানে এসেই প্রথমে পড়বে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা। এখন টোল নেওয়ার জন্য আনুষঙ্গিক কাজ করা হচ্ছে। সেতুর সড়কপথের কাজ বাকি নেই। মূল সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ। প্রকল্পের সার্বিক কাজ হয়েছে ৯৪ দশমিক ৫০ ভাগ। নদীশাসনের কাজ এগিয়েছে ৯৩ ভাগ।
এরই মধ্যে মূল সেতুতে ৩২৮টি সড়কবাতি এবং সেতুর ভায়াডাক্টে ৮৭টি সড়কবাতি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। একটি থেকে আরেকটি ল্যাম্পপোস্টের দূরত্ব প্রায় ৩৮ মিটার। সেগুলোতে এখন বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। তা ছাড়া মূল সেতুর প্যারাপেট ওয়ালে রেলিং বসানোর কাজ শেষ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সেতুর নিচের আশপাশের সড়কগুলো মেরামত করা শুরু হয়েছে। মাওয়া বাজার এলাকায় সেতুর পিলারের নিচের অংশ বাঁধাই করে দেওয়া হচ্ছে। এ রকম আনুষঙ্গিক ছোটখাটো নানা কাজ চলছে প্রকল্প এলাকাজুড়ে। আগামী ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে পদ্মা সেতুতে আলো জ্বালানো হতে পারে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
প্রকল্পে সার্বিক কাজের বিষয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, সেতুতে আগামী সপ্তাহে আলো জ্বালিয়ে দেখা হবে। মূল সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ। ২৫ জুনের আগেই বাকি থাকা সব কাজ শেষ হবে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
প্রমত্তা পদ্মার ওপর নির্মিত সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এখন চলছে শেষ সময়ের কাজ। ২৫ জুনের আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানালেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের। সেই অপেক্ষায় আছেন আমজাদ আলীরা। মধ্যবয়সী আমজাদ বরিশাল থেকে ঢাকায় আসছিলেন। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে দুই হাতে দুটি ব্যাগ নিয়ে লঞ্চ থেকে নেমে ঢাকায় যাওয়ার বাস ধরতে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ধানমন্ডিতে মেয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছি। তাই ব্যাগপত্র বেশি। বরিশাল থেকে সরাসরি বাসে আসতে গেলে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। সে জন্য বরিশাল থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত বাসে এসেছি। এরপর লঞ্চে নদী পার হয়ে বাসের অপেক্ষায় আছি।’
আমজাদ আলীর কথায়, আর কিছুদিন পরেই পদ্মা সেতু চালু হলে তাঁদের যাত্রাপথের এই ভোগান্তি শেষ হবে। সে জন্য এখন শুধু দিন গুনছেন। আর কয়েকটা দিন গেলেই বাঁচেন। বললেন, সেতু চালু হলে বাসে টাকা বেশি নিলেও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ। গতকাল শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুসংলগ্ন এলাকায় বাইরের
লোকজনের উপস্থিতি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা। মাওয়া গোলচত্বর এলাকায় কাউকে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না। তবে পদ্মা সেতু একনজর দেখতে মাওয়া ঘাটে মাছের আড়তের পাশে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।
স্ত্রী ও তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে এসেছিলেন জুবায়ের আরেফিন। তিনি বলেন, ‘শুধু পদ্মা সেতু একনজর দেখার জন্য কেরানীগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। সেনাবাহিনীর ক্যাম্প আছে বলে একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে। সব জায়গায় যেতে দিচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ছবি-ভিডিওতে দেখেছি। আজ সামনাসামনি দেখে মুগ্ধ হলাম। এটা ইতিহাস। সেই ইতিহাসের অংশ হিসেবে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসে ছবি তুলে রাখলাম স্মৃতি হিসেবে।’
পদ্মা সেতুসংলগ্ন মাওয়া বাজারে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে। সেই কাজ এখন শেষের পথে। আর কয়েক দিন পরেই উদ্বোধন। সেতু খুলে দেওয়ার খবরে এলাকাবাসী হিসেবে ভালো লাগছে। তিনি মনে করেন, সেতু চালু হলে তাঁদের এলাকার ব্যাপক উন্নতি হবে। দিন বদলে যাবে। নতুন করে তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করতে পারবেন। ২৫ জুন তাই তাঁদের জন্য একটা শুভ দিন হিসেবে আসছে। পদ্মা সেতুর কাজ শেষের পথে ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে সাঁইসাঁই করে খুব দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে মাওয়া। সেখানে এসেই প্রথমে পড়বে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা। এখন টোল নেওয়ার জন্য আনুষঙ্গিক কাজ করা হচ্ছে। সেতুর সড়কপথের কাজ বাকি নেই। মূল সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ। প্রকল্পের সার্বিক কাজ হয়েছে ৯৪ দশমিক ৫০ ভাগ। নদীশাসনের কাজ এগিয়েছে ৯৩ ভাগ।
এরই মধ্যে মূল সেতুতে ৩২৮টি সড়কবাতি এবং সেতুর ভায়াডাক্টে ৮৭টি সড়কবাতি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। একটি থেকে আরেকটি ল্যাম্পপোস্টের দূরত্ব প্রায় ৩৮ মিটার। সেগুলোতে এখন বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। তা ছাড়া মূল সেতুর প্যারাপেট ওয়ালে রেলিং বসানোর কাজ শেষ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সেতুর নিচের আশপাশের সড়কগুলো মেরামত করা শুরু হয়েছে। মাওয়া বাজার এলাকায় সেতুর পিলারের নিচের অংশ বাঁধাই করে দেওয়া হচ্ছে। এ রকম আনুষঙ্গিক ছোটখাটো নানা কাজ চলছে প্রকল্প এলাকাজুড়ে। আগামী ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে পদ্মা সেতুতে আলো জ্বালানো হতে পারে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
প্রকল্পে সার্বিক কাজের বিষয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, সেতুতে আগামী সপ্তাহে আলো জ্বালিয়ে দেখা হবে। মূল সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ। ২৫ জুনের আগেই বাকি থাকা সব কাজ শেষ হবে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং জহুরুল হক বিমান ঘাঁটিতে জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য পাইপলাইনে জেট ফুয়েল সরবরাহের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী আগস্ট মাসে এই পাইপলাইনের কমিশনিং হওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও পদ্মা অয়েল কোম্পানির সহকারী...
৩ ঘণ্টা আগেসাতক্ষীরায় মরিচ্চাপ নদীর ওপর নির্মিত সাতটি সেতু ধসে পড়েছে। এতে সদর ও আশাশুনি উপজেলার অন্তত ২৫টি গ্রামের মানুষের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, সেতুর নিচ দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন এবং নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণ করায় এমন বিপর্যয় ঘটেছে।
৩ ঘণ্টা আগেপঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চলছে পরিত্যক্তঘোষিত এক ভবনে। সেখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও সেটিতে এখনো রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
৩ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের গৌরীপুর এবং কুমিল্লার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মোট ১৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি অনেক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য। অবসর, মৃত্যু ও মামলার কারণে এই পদগুলো শূন্য হয়েছে বলে শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। এতে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে...
৩ ঘণ্টা আগে