Ajker Patrika

‘চতুর্থ দফার অবরোধের প্রথম দিনে বেড়েছে যান চলাচল, কমেছে দুর্ভোগ’ 

জহিরুল আলম পিলু
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ২৮
Thumbnail image

বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা চতুর্থ দফার দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিনে সকাল থেকেই রাজধানীর জুরাইন, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদে ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনের চলাচল তুলনামূলক বেড়েছে। আন্তজেলা বাস চলাচল কিছুটা কম থাকলেও লোকাল সার্ভিসের বাস ছিল বিগত অবরোধের তুলনায় বেশি। যাত্রীরা বলছেন, আগের অবরোধের তুলনায় যানবাহন বেশি হওয়ায় দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। 

রাজধানীর জুরাইন, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র চোখে পড়ে। জুরাইন রেলগেটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচল করছে। সেই সঙ্গে লেগুনা, সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনও ছিল চোখে পড়ার মতো। 

স্থানীয় গণপরিবহনগুলোর চলাচল থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। আনন্দ পরিবহনের চালকের সহযোগী জাহাঙ্গীর জানান, আগের অবরোধের চেয়ে আজ অনেক বেশি গাড়ি রাস্তায় বের হয়েছে। যদিও গত রাতে যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তার পরও আমরা আতঙ্কের মধ্যে গাড়ি বের করেছি। সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বেশি। 

যাত্রাবাড়ী থেকে মগবাজারে যাবেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘গত হরতাল-অবরোধের তুলনায় আজ যানবাহন বেশি থাকায় দুর্ভোগ কম হচ্ছে।’ জুরাইন থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবেন সীমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘গাড়ির সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বেশি চাইছে।’ 

যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা গিয়ে দেখা যায়, লোকাল বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল গত হরতাল-অবরোধের তুলনায় বেশ বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছিল ছোটখাটো যানজটের। এ রুটে চলাচলকারী অনাবিল পরিবহনের চালক মোস্তফা বলেন, ‘ভাই কত দিন বসে থাকব! পেট আছে, সংসার আছে। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। গত রাতে কিছু বাস জ্বালিয়ে দেওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। আমরা হরতাল-অবরোধ চাই না।’ 

যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় দক্ষিণাঞ্চলগামী শরীয়তপুর পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের সহকারী লিটন জানান, সকাল থেকে পাঁচটি বাস ঢাকায় এসেছে। দুটি বাস শরীয়তপুরের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বেশি। 

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে পূর্বাঞ্চল অভিমুখী কিছু বাস ছেড়ে গেছে। অনেক বাস ঢাকায়ও প্রবেশ করেছে। তবে যাত্রী কিছুটা কম হওয়ায় বাসগুলো নিয়মিত ছেড়ে যেতে পারছে না বলে জানান চট্টগ্রাম রুটের বাসের চালক আসলাম। এই টার্মিনালে শত শত বাস পার্কিং করা অবস্থায় দেখা যায়। 

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাজী সেলিম সারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত হরতাল-অবরোধের তুলনায় আজ সকাল থেকে বাস বেশি চলাচল করেছে। পরিবহনশ্রমিকেরা গরিব মানুষ। কত দিন গাড়ি না চালিয়ে বসে থাকবে! তাদের তো সংসার আছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা রাস্তায় নেমে পড়েছে।’ 

সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তজেলা বাস চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তবে অবরোধকারীরা কিছু বাস জ্বালিয়ে দেওয়ায় চালকেরা আতঙ্কে আছেন। 

যাত্রাবাড়ী জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মাহবুব শাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত অবরোধের তুলনায় আজ গাড়ির চাপ একটু বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাবাড়ীতে কিছুটা যানজট দেখা দিয়েছে। তবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত