Ajker Patrika

ফরিদপুরে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৭ জন নিহত: তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এল দুর্ঘটনার পাঁচ কারণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৫৬
যাত্রীবাহী বাস উল্টে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
যাত্রীবাহী বাস উল্টে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফারাবি এক্সপ্রেস নামের একটি মিনিবাস দুর্ঘটনায় সাতজন নিহতের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য পাঁচটি কারণ তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া তা নিরসনে ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম রয়েছে—চালকের বেপরোয়া গতিতে নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানো। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং, ওভারটেকিং আইন অমান্য করা ও সড়কে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড না থাকা, ফিটনেস ও ট্যাক্স টোকেন মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় সড়কে চলাচল করা এবং দুর্ঘটনাকবলিত রাস্তাটি পার্শ্বসড়ক অংশে ঝুঁকিপূর্ণ সোল্ডার ড্রপ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অপরদিকে বাসটির চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের কোনো তথ্য পায়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মহাসড়কের ফরিদপুর-ভাঙ্গা অংশে অসংখ্য নিবন্ধনবিহীন, অবৈধ ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল করছে। এ ছাড়া সড়কটি দুই লেনবিশিষ্ট হওয়ায় সবধরনের ও বিভিন্ন গতির গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়, যা গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়।

৮ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে জেলা সদরের বাখুন্ডা জোয়াইর এলাকার শরিফা জুটমিলের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হন আরও দুজন। মোট সাতজন নিহত ও প্রায় ৩০ জন আহত হন।

ঘটনার পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাসকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন এবং তা পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়।

কমিটিতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন, হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ, বুয়েটের এআরআই বিভাগের প্রভাষক ড. নাজমুল হক, ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। ঘটনার আট দিন পর প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাঁরা।

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ ছাড়াও নিরসনে ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে—মহাসড়কে ফিটনেস ছাড়া গাড়ি চলাচল না করা, রুট পারমিট ছাড়া কোনো গাড়ি চলাচল না করা, বিকল্প চালক রেখে টানা ৫ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানো, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি না চালানো, থ্রি-হুইলার ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় রাস্তার পাশে ট্রাফিক সাইন প্রদর্শন, প্রতিটি গাড়িতে অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত সিগন্যাল, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সকল যানবাহনে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো, ঝুঁকিপূর্ণ সোল্ডার ড্রপ মেরামত, অনুমোদনহীন পার্শ্বরাস্তা সংযোগ না দেওয়া ও রাইট অফ ওয়েতে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, বিগত দিনের দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও এ ঘটনার কমিটির সুপারিশগুলো নিয়ে বাসমালিক, শ্রমিক, সড়ক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দ্রুত সভা করা হবে। সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সভায় প্রত্যেক বিভাগকে আলাদা করে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া জাতীয় পর্যায়ের সুপারিশগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

অপরদিকে এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হলে বাসচালক সুমন গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

পারদর্শী হয়ে উঠছে বাংলাদেশ, স্থিতিশীল হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত