Ajker Patrika

বাণিজ্যিকভাবে বোয়াল চাষ করে সফল ঢাবি শিক্ষার্থী শহীদুল

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১১: ৫৮
বাণিজ্যিকভাবে বোয়াল চাষ করে সফল ঢাবি শিক্ষার্থী শহীদুল

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এলাকার জেলেদের কাছ থেকে একটি-দুটি করে পোনা সংগ্রহ করে নিজেদের পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে বোয়াল মাছ চাষ শুরু করেন মৎস্যচাষি মো. শহীদুল ইসলাম (৫৩)। বছর ঘুরে আসতেই সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি। ২০-৫০ টাকা দরে বোয়ালের পোনা কিনে বছরের মাথায় তা প্রতিটি বিক্রি করছেন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়। তাঁর এমন সফলতা দেখে উপজেলার অনেকেই বোয়াল মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। 

জানা গেছে, শহীদুল ইসলাম ওই উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের লাড়ুচৌ গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেন। পড়ালেখা শেষ করে দীর্ঘদিন চাকরির জন্য ঘুরছিলেন তিনি। চাকরি না পেয়ে বেকার জীবন থেকে মুক্তি পেতে ভাইদের পরামর্শে ও সহযোগিতায় মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েন। এখন তাঁর মাছের খামারে এলাকার সাত-আটজন বেকার যুবক চাকরি করছেন। মাছ চাষের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব সবজি চাষ, ফলদ বাগান ও বনজ বাগান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শহীদুল ইসলাম। শুধু মৎস্য চাষে নয়, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এলাকায় ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ ছাড়া শহীদুল ইসলাম গত কয়েক বছরে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সেরা মাছচাষি হিসেবে সনদপত্র ও সম্মাননা পেয়েছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এরই মধ্যে তাঁর পুকুরের সব বোয়াল মাছ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রুই, কাতলা, পুঁটি, সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, পাঙাশসহ অন্যান্য মাছ রয়েছে। এ ছাড়া এই বর্ষা মৌসুমেও এলাকার জেলেদের কাছ থেকে নতুন করে আবারও বোয়াল মাছের পোনা সংগ্রহ করে পুকুরে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই সফলতা দেখে আশপাশের গ্রামের অনেকেই অন্যান্য মাছের পাশাপাশি বোয়াল মাছ চাষের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন। 

মাছচাষি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শুরুটা ছোট পরিসরে হলেও আমাদের মাছের খামারটি এখন সাড়ে চার একর জায়গাজুড়ে রয়েছে। এই খামার ছাড়াও মাছ চাষের জন্য আমার আরও ছোট ছোট ১০টি খামার রয়েছে। এসব খামরে অন্যান্য মাছচাষির মতো দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করে আসছি। এ বছর আমার নিজ উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে বোয়াল চাষে উদ্যোগ নেই। এরপর নিজে ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশাল (বেল) জাল ও জেলেদের কাছ থেকে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা দরে ৪৭০টি বোয়াল মাছে পোনা সংগ্রহ করে তা চাষ করি। একই খামারে পাঙাশ, তেলাপিয়া, রুইসহ অন্যান্য মাছ চাষ করা হয়েছে। এতে আমার পোনা ক্রয়, পুকুরে চাষ ও বিক্রয় পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এসব বোয়াল মাছের খাবার হিসেবে অন্যান্য পুকুরে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা ও ছোট মাছ উৎপাদন করি। সেসব পোনা মাছ দিয়ে বোয়াল মাছের দৈনন্দিন খাবারের জোগান দেওয়া হতো। এ ছাড়া বাজার থেকে কিনে আনা খাবার ব্যবহার করা হতো।’ 

শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আট মাসে আমাদের খামারে অন্যান্য মাছের পাশাপাশি প্রতিটি বোয়াল চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের হয়। এসব বোয়াল মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে পুকুর থেকে পাইকার ও এলাকার লোকজন কিনে নিয়ে যান। এ বছর আমার পুকুরের বোয়ালসহ অন্যান্য মাছ চাষে ৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়। সেগুলো আবার ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রিও করেছি। এর মধ্যে শুধু বোয়াল মাছ বিক্রি করেছি ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার।’ 

খামার থেকে মাছ নিতে আসা মাছ বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে শহীদুল ইসলামের মাছের খামার থেকে পাইকারি দরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে বিভিন্ন আড়তে ও বাজারে বিক্রি করি। আজও এখান থেকে বোয়ালসহ অন্যান্য মাছ কিনে আড়তে নিয়ে যাব। আর কিছু মাছ সকালবেলা স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করব। পুকুর থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বোয়াল মাছ কিনে নিয়ে তা বাজারে ক্রেতাদের কাছে ৭০০ টাকায় বিক্রি করা যায়। 

এ বিসয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয় বণিক বলেন, বোয়াল মাছ এখন বিপন্নপ্রায়। প্রাকৃতিক অভয়াশ্রম নষ্ট হওয়ায় মাছটি আগের মতো পাওয়া যায় না। মাছচাষি শহীদুল ইসলাম তাঁর খামারে বোয়াল মাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সফল হয়েছেন। তিনি একজন ভালো মাছচাষি। নিয়মিত তাঁর খামার পরিদর্শন ও উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চাই মাছচাষি শহীদুল ইসলামের মতো অন্যরাও মিশ্র মাছ চাষ করে সফল ও লাভবান হোক। এ ক্ষেত্রে উপজেলা মৎস্য কার্যালয় তাঁদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সব সময় পাশে থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, নিহত ১

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ (৫৩) নামের এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে মাইজদী টিভি সেন্টার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবুল কালামকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। তখন মাইক্রোবাসের যাত্রী আবুল কালাম আজাদ মারা যান এবং আহত হন আরও তিনজন।

আবুল কালাম আজাদ জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন আজাদ। এরপর মাইক্রোবাস যোগে স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমনসহ গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে মাইক্রোবাসটি সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেন।

এতে মাইক্রোবাসটি ধুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পরপরই মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নেমেছেন জেলেরা, মাছঘাটে কর্মচাঞ্চল্য

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় পর আবারও নদীতে নেমেছেন চাঁদপুরের জেলেরা। আড়তগুলোয় শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে অনেকেই হতাশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইলিশ কম পাওয়া গেলেও দাম বাড়েনি।

রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোর থেকে সদর উপজেলার অন্যতম হরিণা মাছঘাট ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে ওঠে। ঘাটসংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন জেলে নদীতে নামছেন। আবার কেউ ইলিশ ধরে ঘাটে নৌকা নিয়ে আসছেন। ঘাটে ইলিশ উঠানোর পরে হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

জেলেরা নদী থেকে সরাসরি এই ঘাটে ইলিশ নিয়ে আসেন। যে কারণে টাটকা ইলিশ কেনার জন্য এই ঘাটে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা সব সময় বেশি থাকেন।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘পেশা ইলিশ ধরা। অন্য কাজ করি না। যে কারণে ধারদেনা করে হলেও নদীতে নামতে হয়। যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে খরচ বাদ দিয়ে তেমন আর থাকে না।’

হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে হুমায়ুন ঢালি বলেন, ‘পাঁচজনে মিলে মধ্যরাতে মেঘনায় ইলিশ ধরতে নেমেছি। যে পরিমাণ ইলিশ পেয়েছি, তাতে খরচ বাদে তেমন একটা থাকবে না। হয়তো জনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পাওয়া যাবে।’

হরিণা মাছঘাটে ইলিশ কিনতে এসেছেন ফরিদগঞ্জ থেকে সাইফুর রহমান ও হাবিবুল্লা। তাঁরা বলেন, ঘাটে মাছ থাকলেও দাম কমেনি। দাম আগের মতোই।

চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এই ঘাট থেকে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ক্রয় করে চাঁদপুর শহরের বাজারগুলোয় বিক্রি করেন খুচরা মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান।

আব্দুর রহমান বলেন, মাছের দাম কমেনি বা বাড়েনি। ওজনে এক কেজিতে ৪টা, এমন প্রতি হালি ইলিশ কিনেছেন ৮০০ টাকা দরে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। বড় সাইজের পাঙ্গাশ কিনেছেন প্রতি কেজি সাড়ে ৮০০ টাকা ধরে।

এই ঘাটের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম কালু হাওলাদার বলেন, জেলেরা রাত থেকে নদীতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না। তবে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি করছেন তাঁরা। তবে কয়েক দিন অতিবাহিত হলে বোঝা যাবে নদীতে ইলিশ আছে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থানচির বলিবাজারে পুড়ল ১৩ দোকান

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
আগুনে পুড়ছে দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ছে দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের বলিবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে হঠাৎ লাগা আগুনে বাজারের অন্তত ১৩টি দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দেড় বছরের ব্যবধানে এটি এলাকায় তৃতীয়বারের মতো বড় অগ্নিকাণ্ড।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাজারের একটি খাবারের হোটেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের দোকানগুলোতে।

বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি অংসিংম্যা মারমা বলেন, ‘তখন রাত গভীর হওয়ায় সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বাজারে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে হইচই শুনে দোকান থেকে বের হয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। টিটু দাশের রেস্টুরেন্ট ও জাফর আহম্মদের সারের দোকানের মাঝখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হ্লায়ইচিং মারমা নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্য আমার। মালপত্র সরানোর কোনো সুযোগ পেলাম না।’

বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা বলেন, ‘আগুনের ঘটনা জানার পরপরই বাজারে এসেছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। আগুনে ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’

থানছি থানার ফায়ার স্টেশনের লিডার পিয়ার মোহাম্মদ বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে বলিপাড়া বাজারে আগুনের খবর পাই। দ্রুত দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। তৎক্ষণিকভাবে মনে হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদুল্লাহ আল-ফয়সাল বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ট্রেনিংয়ের কাজে ঢাকায় আছি। বলিপাড়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনা খাবার, কম্বল দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বান্দরবান জেলা প্রশাসককে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত