Ajker Patrika

কাগজে কলমে বেড়েছে পাটের চাষ, কৃষকেরা বলছেন কমেছে

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
পাট কেটে জাগ দেওয়ার পর আঁশ ছাড়াচ্ছেন কৃষকেরা। সম্প্রতি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাট কেটে জাগ দেওয়ার পর আঁশ ছাড়াচ্ছেন কৃষকেরা। সম্প্রতি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

একসময় ব্যাপক হারে পাটের চাষ হতো চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। নদী-খাল ও পুকুর-ডোবায় সারিবদ্ধভাবে নারী-পুরুষ ও শিশুরা পাটের আঁশ ছাড়াতেন। পাটের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ত আশপাশে। এ দৃশ্য এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। দিন যত যাচ্ছে, পাটের আবাদ ততই কমছে। ‘সোনালি আঁশ’ খ্যাত পাট দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

নানা প্রতিবন্ধকতায় কৃষকের আগ্রহ ক্রমেই কমছে এ ফসলের প্রতি। কৃষি অফিসের কাগজে কলমে পাট চাষের হিসাব বাড়তির দিকে থাকলেও বাস্তবে তেমন চোখে পড়ে না বলেও দাবি করেছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, পাট চাষে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়া, সার, বীজ ও প্রণোদনা এবং কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ না পাওয়ায় তাঁরা পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কিন্তু কৃষি কার্যালয়ের তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পাট চাষ হয়েছে ১৪৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর দুই হেক্টর বেড়ে আবাদ হয়েছে ১৪৭ হেক্টর জমিতে।

বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, ‘গত বছর এক একর জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এ বছর চাষ করেছি ৭০ শতক জমিতে। কৃষি প্রণোদনা ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ না পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছি।’

একই ইউনিয়নের দক্ষিণ ইসলামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত বছর পাটপাতায় পোকার আক্রমণ হয়েছিল। অনেক পাট নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি অফিসের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না। যদি কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের পাশে থাকেন, তাহলে পাটের চাষ বাড়বে।’

কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে পাট চাষের সঙ্গে জড়িত। এবার মাত্র দুই একর জমিতে পাট চাষ করেছি। শ্রমিকের মজুরি এখন ৬০০ টাকা। খরচের তুলনায় বিক্রি কম, লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হয়।’

এ ছাড়া আরও অন্তত ১০ জন পাটচাষির সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, আগের চেয়ে পাটের চাষ কমে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪৫ হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ১৪৭ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ টন। পাটের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আরও আগ্রহী করার চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত