Ajker Patrika

আইনজীবী বাপ্পী হত্যা: স্ত্রীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আইনজীবী বাপ্পী হত্যা: স্ত্রীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামে আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী (৩৩) হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এ রায় দেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন-কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার জাকির হোসেনের মেয়ে রাশেদা বেগম (২৭), চট্টগ্রামে পটিয়া উপজেলার সোভনদন্ডী গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে হুমায়ন রশীদ। এদের মধ্যে রাশেদা হলেন নিহত ওমর ফারুক বাপ্পীর স্ত্রী।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-বরগুনা জেলার তালতলী থানার সোনাকাটা ইউনিয়নের মনসুর আলীর ছেলে আল আমিন (২৮), নোয়াখালী জেলার সাধুরাম থানার ব্রহ্মপুর এলাকার মৃত হাবিবুল্লার ছেলে আকবর হোসেন রুবেল (২৩) ও খাগড়াছড়ি জেলার সদর থানার শালবন এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে মো. পারভেজ আলী (২৪)। এ ছাড়া তাদের আরও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়। 

মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় বরিশাল গৌরনদী থানার বাসিন্দা জাকির হোসেন ওরফে মোল্লা জাকিরকে (৩৫) খালাস দিয়েছে আদালত। 

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দুলাল চন্দ্র দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, রায়ের সময় আসামিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হুমায়ুন রশিদ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো. পারভেজ আলী এবং খালাস পাওয়া জাকির হোসেন। রায় শেষে আদালত হুমায়ুন রশিদ ও পারভেজ আলীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরের চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডে বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নিচতলার বাসা থেকে আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পীর (৩৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো এবং স্পর্শকাতর অঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। 

২০১৮ সালে ৫ এপ্রিল পরস্পর যোগসাজশে বাপ্পীকে হত্যার অভিযোগে রাশেদাসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। এরপর ২০২০ সালে ১৫ অক্টোবর আলোচিত মামলাটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচারিক পর্যায়ে মামলাটিতে ২৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১২ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শেষে আজ (বুধবার) রায় ঘোষণা করেন আদালত। 

সূত্রে আরও জানা গেছে, দেলোয়ার নামে এক ইয়াবা পাচারকারীর স্ত্রী ছিলেন রাশেদা বেগম। স্বামীর মামলার সূত্র ধরে আইনজীবী বাপ্পীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে তাঁরা গোপনে বিয়ে করেন। পরে বিয়ের কাবিননামা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। 

খুনের ঘটনার কয়েক দিন আগে ওই নারী (রাশেদা) তার স্বামীসহ থাকবেন বলে বাসা ভাড়া নেন। ঘটনার রাতে ওই বাসায় থাকতে যান বাপ্পি। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত