Ajker Patrika

কলাগাছের আঁশে তৈরি হলো দৃষ্টিনন্দন শাড়ি

আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৫: ৫৯
Thumbnail image

দেশে প্রথম কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি হয়েছে বান্দরবানে। কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে তৈরি হওয়ায় এ শাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কলাবতী সুতি শাড়ি’। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় মণিপুরি কারিগর রাধাবতী দেবী এই শাড়ি তৈরিতে সফল হয়েছেন। 

বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তীবরীজির পরিকল্পনায় এই শাড়ি তৈরি হয়েছে। শাড়ি ছাড়াও কলাগাছের আঁশের সুতায় তৈরি হচ্ছে নানা রকম শৌখিন হস্তশিল্প। এর আগেও কলাগাছের তন্তু দিয়ে ব্যাগ, ঝুড়ি, ফুলদানি, কলমদানিসহ নানা শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা হয়েছিল। 

মৌলভীবাজারের শাড়ি তৈরির মণিপুরি কারিগর রাধাবতী দেবী বলেন, ‘কলাগাছের আঁশ দিয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় শাড়ি তৈরি করতে পেরেছি। শাড়ি তৈরিতে কলার সুতা পাতলা হওয়ায় চ্যালেঞ্জ বেশি ছিল, সময়ও লেগেছে বেশি। শাড়িটি তৈরিতে ১৫ দিন সময় লেগেছে। এতে ১ কেজির মতো সুতা প্রয়োজন হয়েছে।’

কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে তৈরি করা শাড়িজেলা প্রশাসন ও কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পের সাফল্য আসায় বান্দরবান জেলার সদর, রুমা ও রোয়াংছড়ি, আলীকদম উপজেলায় উদ্যোক্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এটি সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পার্বত্য এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কলা উৎপাদন হয়। উৎপাদিত কলার সারা দেশে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কলাগাছ ফেলে দেওয়া হতো এর কোনো উপযোগিতা না থাকায়। বর্তমানে কলাগাছের আঁশ থেকে সুতা তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় কলাগাছে উপযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যাপক সম্প্রসারণ হলে পাহাড়ে হস্তশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। 

কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে তৈরি করা শাড়িসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাহাড়ের নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি ও দারিদ্র্য নিরসনে কলাগাছ ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কলাগাছের আঁশ থেকে তৈরি সুতায় ব্যাগ, ঝুড়ি, ফুলদানি, কলমদানি, ফাইল ফোল্ডার, পাপসসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র আত্মকর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তীবরীজি বলেন, স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাগাছের আঁশের সুতায় বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরিতে সফল হওয়া গেছে। দেখতে সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব এসব জিনিস তৈরিতে পাহাড়ের ৪০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা প্রতি কেজি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তৈরি করা জিনিসপত্রগুলোও ‘ব্র্যান্ডিং বান্দরবান’-এর মাধ্যমে নীলাচল পর্যটন স্পটসহ স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে পর্যটকদের মাঝে বিক্রি করা হচ্ছে। 

জেলা প্রশাসক বলেন, এ প্রকল্পের বড় সফলতা হলো পরীক্ষামূলকভাবে কলাগাছের আঁশের সুতায় শাড়ি তৈরি। বর্তমানে মানসম্মত পণ্য তৈরি, টেকসই শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে উন্নতমানের মেশিনসহ কারিগরি সহায়তায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত