Ajker Patrika

বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা

মাঈনুদ্দিন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান)
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩: ৫৯
বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর কিছু সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তারা প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে বাংলাদেশে। এরই ধারাবাহিকতায় ছোট ছোট দলে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ঠেকিয়ে দিয়েছে ১১ বিজিবি ও ৩৪ বিজিবি। 

জানা গেছে, নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। কেননা ২০১৭ সালে অনুপ্রবেশ করা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে এখনো প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হয়নি। সেখানে আরও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বাংলাদেশের জন্যে বড় বিষফোড়া হবে।

একাধিক সূত্র জানায়, রাখাইনে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সেনারা ও বিদ্রোহী আরকান আর্মির যোদ্ধারা ঘাঁটি দখল নিতে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে তুমুল সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তারা প্রথমে সীমান্তে সংঘাতে লিপ্ত থাকলেও এখন তারা আরও একটু ভেতরে যুদ্ধে করছে। দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরস্পরকে প্রতিরোধে। 

আরাকান আর্মির দাবি, তারা ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ছোট-বড় ২০টির অধিক ঘাঁটি দখলে নিয়েছে সরকার বাহিনীর কাছ থেকে। 

আর জান্তাদের সোর্সদের দাবি, তারা কৌশলগত কারণে বেদখল হওয়া ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে বিমান হামলা করছে না। করলে বাংলাদেশও তাদের প্রতিপক্ষে দাঁড়াবে। 

সূত্র আরও দাবি করেন, এ পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ির ঢেকুবুনিয়া, রাইটক্যাম্প, নাচিসবুনিয়া ক্যাম্প, কক্কডঙ্গ্যা ক্যাম্প, মুরুইগ্যা খালের মাথা ক্যাম্প, নারায়ন সং ক্যাম্পসহ ছোট-বড় ২০টি ক্যাম্প জান্তার কাছ থেকে দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মি এ-ও মনে করেন, সরকারি বাহিনী যেকোনো মুহূর্তে বিমান হামলা করতে পারে। এ কারণে অনেকে আতঙ্কে রয়েছে। 

৫ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত ৬১ জনের অধিক রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করে দিয়েছে। এর মধ্যে ১১ বিজিবি ১১ জন ও ৩৪ বিজিবি ৫০ জন পুশব্যাক করে দিয়েছে। যাদের ৩৬ পিলারসংলগ্ন বাইশফাঁড়ি, ৫০ পিলারসংলগ্ন বাইর মাঠ ও ৫২ পিলারসংলগ্ন পাইনছড়ি এলাকা দিয়ে পুশব্যাক করা হয়। 

এ বিষয়ে ঘুমধুম নিবাসী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধে কমান্ডার রাজা মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোহিঙ্গার অত্যাচার সহ্য করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুপ্রবেশ ঘটলে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে।’ 

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবসার ইমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুপ্রবেশের চেষ্টায় আতঙ্কিত বাংলাদেশিরা। বর্তমানে রাখাইনে সংঘাত চলছে। তাই তারা প্রাণ বাঁচাতে এখানে আসার চেষ্টা করছে।’

তবে ১১ বিজিবি এবং ৩৪ বিজিবির অধিনায়কদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তাঁরা কোনো বক্তব্য দেননি। 

২০ দিন বন্ধ ৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়
সীমান্তে চলমান সংঘাতের জের ধরে ঘুমধুম সীমান্তবর্তী ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ হাজার ১০০। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

কেননা, এর আগের দিন ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে সকাল থেকে প্রচণ্ড আওয়াজে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজে সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে স্কুলগুলো বন্ধ করা হয়। স্কুলগুলো হলো দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকূল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। 
 
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘শিশুদের শিক্ষার বিষয়টি মাথায় এনে মাঠপর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় উপজেলা পর্যায়ে স্কুলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেটি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের দপ্তরে রয়েছে। যা নিয়ে আজ-কালের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এই পাঁচটি স্কুল শিগগিরই খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত