Ajker Patrika

চট্টগ্রাম ধর্মঘটে গণপরিবহনশূন্য সড়ক, গরমে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ধর্মঘটে গণপরিবহনশূন্য সড়ক, গরমে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

মাথার ওপর জ্বলন্ত সূর্য, পায়ের নিচে গলন্ত পিচঢালা সড়ক। এমন আবহাওয়ার মধ্যে মোড়ে মোড়ে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছেন নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ থেকে সকল বয়সীরা। কিন্তু মিলছে না গাড়ির দেখা। হঠাৎ দু-একটি দেখা গেলেও, তাতে উঠতে পারাটাও দায়। অতিরিক্ত ভাড়া ও উপচে পড়া ভিড়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। 

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার গণপরিবহন ধর্মঘটের কারণে আজ রোববার নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে ৩টা অবধি ছিল একই পরিস্থিতি। 

নগরীর প্রবেশমুখের ওই মোড় থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, দোহাজারী, লোহাগাড়া উপজেলাসহ পর্যটক শহর কক্সবাজার, টেকনাফ ও পার্বত্য বান্দরবান প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। এমন দুর্ভোগ শুধু দক্ষিণ চট্টগ্রামে নয়। দুর্ভোগে পড়েছিল উত্তর চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য আরও দুই জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়িতে যাতায়াতকারীরা। নগরীর অভ্যন্তরে তো আছেই। 

সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে গত শনিবার এক বৈঠকে বিভাগের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। 

এই পরিষদের আহ্বায়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও সাবেক যুবলীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু ও সদস্যসচিব সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা মো. মুছা। তাঁরা উভয়ই স্ব-স্ব সংগঠনের শীর্ষ নেতা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আন্তজেলা রুটে চলাচলকারী আরও বাস মালিক নেতা ও ফেডারেশনভুক্ত আরও কয়েকটি সংগঠন। 

প্রভাবশালী পরিবহন নেতাদের ডাকে মূলত এই গণপরিবহন ধর্মঘট হওয়ায় রোববার ভোর থেকে তা কার্যকরে কড়াকড়ি ছিল। নির্ধারিত দিনে নগরের বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজ, অক্সিজেন, অলংকার মোড়, সিটি গেট, জিইসি মোড় থেকে ছেড়ে যাওয়া সব ধরনের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ছিল। মালিকেরা বাস কাউন্টারগুলোও বেশির ভাগই বন্ধ রেখেছেন। তবে নগরের অভ্যন্তরে গণপরিবহন চললেও—তা ছিল সীমিত। হাতেগোনা বাস, মিনিবাস, অটো টেম্পু, হিউম্যান হলার চলাচল করছিল। যারা মূলত এই ধর্মঘটের বিপক্ষে ছিলেন। 

গাড়ি না পেয়ে অনেককে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। ছবি: হেলাল সিকদারএ ছাড়া স্পেশাল বাস সার্ভিস মেট্রো প্রভাতি ও সোনার বাংলার গাড়িগুলোও নগরীতে চলাচল করেছে। ধর্মঘট না মানায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরের শিকারও হয়েছে। তবে নগরী থেকে আন্তজেলা রুটে বিভিন্ন দূরপাল্লার বাস চলাচল একেবারে বন্ধ ছিল। পরিবহন শ্রমিকেরা অলস সময় পার করছিল। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট মোড়, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, ষোলোশহর, চান্দগাঁও এক কিলোমিটার, নতুন ব্রিজ, মুরাদপুর, অক্সিজেনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে জটলা ছিল সাধারণ যাত্রীদের। 
বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় মোড়গুলোতে গাড়ি থামলে সেখানে উঠতে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। প্রতিটি বাসে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। গাড়ি না পেয়ে কেউ কেউ হেঁটে কিংবা রিকশা ও মোটরসাইকেল এবং সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। দূর গন্তব্যের যাত্রীরা রওনা হচ্ছেন ট্রাকে কিংবা মাইক্রোবাসে চড়ে। 

নতুন ব্রিজে গাড়ি অপেক্ষারত অবস্থায় কথা হয় মো. বাহাদুর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি তাঁর মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে সকালে চট্টগ্রাম শহরে এসেছিলেন। এখন শহর থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছেছেন কিন্তু গাড়ি পাচ্ছেন না। 

বাহাদুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিরোধী দল বিএনপির হরতাল-অবরোধের সময় আজকের মতো পরিস্থিতি আমাদের পড়তে হয়নি। তখন সীমিত হলেও গাড়ি চলেছে। আজ সকালে গাড়ি বন্ধ ছিল। কিন্তু মায়ের অসুস্থতার কারণে বাধ্য হয়ে শহরে আসতে হয়েছে। লোকাল সিএনজি করে শহরে এসেছি। যাওয়া-আসা বাবদ সবাই ডাবল ভাড়া নিয়েছে। এখন আবার ডাবল-ভাড়া দিয়ে অন্য গাড়িতে করে বাড়িতে যেতে হবে। বাসে যাচ্ছি না ভিড়ের কারণে। এ জন্য অপেক্ষা করছি অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় কি না তা দেখার জন্য।’ 

সকালে নগরের চান্দগাঁওয়ের এক কিলোমিটার এলাকায় কয়েকটি দূরপাল্লার বাস কাউন্টারের সামনে নারী ও শিশু যাত্রীদের জটলা দেখা যায়। কিন্তু কাউন্টারগুলো ছিল বন্ধ। তাঁরা একে অপরে হা-হুতাশ করছিলেন। এমন অবস্থায় সেখানে দুজন লোক একটি বড় ভারী কার্টন নিয়ে একটি সিএনজি থেকে নামেন। তখন কক্সবাজার ও টেকনাফগামী একটি কাউন্টারের কর্মচারী তাঁদের জানান, গাড়ি যাবে না দুদিন। যেখান থেকে এসেছেন সেখানে চলে যান। দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই। 

দুজনের মধ্যে আব্দুল সালাম নামে একজন বলেন, ‘টেকনাফ যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এখন কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। বিকল্পভাবে যেকোনো প্রকারে আমাদের টেকনাফে পৌঁছাতে হবে।’ পরে আব্দুস সালামসহ সেখানে থাকা অন্যযাত্রীরা বিকল্প যানবাহন হিসেবে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মাইক্রোবাস ট্রাক চালকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। 

নগরের ইপিজেডে একটি কারখানায় কর্মরত তারেকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনেকক্ষণ দাঁড়ানোর পর খুব কষ্টে একটি বাসে চেপে বহদ্দারহাট থেকে ইপিজেডে পৌঁছেছি। এমনিতে গরম, তার মধ্যে বাসের ভেতর উপচেপড়া ভিড় ছিল। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মরতে ধরছিলাম।’ 

এদিকে নগরীর বহদ্দারহাট-মুরাদপুরে রাস্তায় চলাচল করা ৪-৫টি বাস ভাঙচুর করেছে ধর্মঘট পালনকারীরা। এর মধ্যে স্পেশাল বাস সার্ভিসের বাসও রয়েছে। সড়কগুলোতে বাসের জানালার ভাঙা টুকরো পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বহদ্দারহাটের পাশাপাশি মুরাদপুরেও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। 

রোববার চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় যাত্রীদের ভিড়। ছবি: হেলাল সিকদার বহদ্দারহাটে স্পেশাল বাস সার্ভিস মেট্রো প্রভাতির কাউন্টার ইনচার্জ মো. রাকিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকজন লোক এসে আমাদের ৮টি বাস আটকে রাখে। এর মধ্যে একটি বাস ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের একটি বাস ভাঙার পাশাপাশি এই মোড়টির ১০ নম্বর রুটে আরও একটি বাস ভাঙচুর করে তাঁরা।’ 

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে সামান্য হাতাহাতি হয়েছিল। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) তারেক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, শহরের অভ্যন্তরে রিকশাসহ অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহন থাকায় যাত্রী সাধারণের তেমনটা সমস্যা হয়নি। তবে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় দূরপাল্লার যাত্রীদের একটু সমস্যা হয়েছে। এটা ছাড়া শহরের অভ্যন্তরে পিকেটিং বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

ধর্মঘটের বিরোধিতা করে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদসহ আরও কয়েকটি সংগঠন। 

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে শ্রম আইন পরিপন্থী বেআইনি এই ধর্মঘট আহ্বানকারী চিহ্নিত ও পেশাদার চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করছি। 

প্রশাসনের সঙ্গে ধর্মঘটকারীদের বৈঠক
ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে রোববার বেলা ৩টা নাগাদ পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে এক বৈঠক হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাউজান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমনখেতে ইঁদুরের উপদ্রব, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
ধানখেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধানখেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মাঠে মাঠে আমন ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। কিন্তু ধানখেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। প্রতিনিয়ত ধানগাছ কেটে নষ্ট করে ফেলছে ইঁদুর। ইঁদুরনিধনে ফাঁদ পাতলেও তাতে সমস্যা কমছে না। ইঁদুরের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৯০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা ইঁদুরের উপদ্রব থেকে ধান রক্ষা করতে খেতের মধ্যে বাঁশের কঞ্চি গেড়ে তাতে পলিথিন টাঙিয়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার খেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরি করে রেখেছেন।

সাহেবগঞ্জ গ্রামের চাষি নুর মোহাম্মদ জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। এখন ধানের শীষ বের হচ্ছে। এই অবস্থায় খেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। ওষুধ ছিটিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। এখন তিনি খেতের মধ্যে পলিথিন বেঁধে দিয়েছেন। বাতাসে পলিথিন উড়লে শব্দ হয়। আর সেই শব্দ শুনে ইঁদুর পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নুরুল আমিন, মনা মিয়াসহ আরও বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ধানখেতে ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়েছেন, তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। খেতের ধানগাছ ইঁদুর কেটে ফেলছে। স্প্রে করে ও ওষুধ দিয়ে উপকার মিলছে না। ইঁদুরের উপদ্রব কমছে না। কেউ কেউ খেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরি করে রেখেছেন। তবুও ইঁদুরের উৎপাত কমছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, ইঁদুরনিধনে বিষ, টোপসহ বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইঁদুর তাড়ানোর জন্য কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মোতাবেক কাজ করলে ইঁদুর নিধন করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নভেম্বর থেকে আমন সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে: খাদ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী মধ্য নভেম্বর থেকে সরকারের খাদ্যগুদামের জন্য আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেছেন, দেশের খাদ্যভান্ডার রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল। চলতি মৌসুমেও আমনের ফলন ভালো হবে। চাল সংগ্রহে এবার মানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং আসন্ন মৌসুমে আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে খাদ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘কৃষকের উৎপাদন খরচ ও লাভ বিবেচনা করে আমন ক্রয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। কৃষকদের স্বার্থে সরকার কৃষিতে নিয়মিত ভর্তুকি দিয়ে আসছে। এই আমন সংগ্রহ অভিযান কীভাবে সফল করা যায়, তা নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সুবিধা-অসুবিধা চিহ্নিত করা হয়েছে।’

উপদেষ্টা বলেন, সরকার খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা বজায় থাকবে।

সরকারের খাদ্য মজুত সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে। এ সময় পর্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত অতীতের তুলনায় বেশি থাকবে। কিছু চাল আমদানি করতে হতে পারে। তবে আগের বছরের তুলনায় তা অনেক কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টন চাল আমদানি করা লাগবে।’

এর আগে মতবিনিময় সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদসহ বিভাগের আট জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকেরা অংশ নেন। সভায় আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, তা বাস্তবায়ন এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মচারীদের কর্মবিরতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মচারীদের কর্মবিরতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মচারীদের কর্মবিরতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অস্থায়ী কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। আজ সোমবার সকাল থেকে দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের (গ্রেড ১১-২০) অস্থায়ী কর্মচারীরা জানান, ৫৮ জন অস্থায়ী কর্মচারী ৫ থেকে ১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে খুব কম বেতনে কর্মরত রয়েছেন। আর কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকে অস্থায়ী এসব কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা বিগত সময় থেকে বলে আসছে প্রশাসন। সর্বশেষ ২০১৯ ও ২০২২ সালে অস্থায়ী কর্মচারীদের পদের অনুকূলে স্থায়ী করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেগুলো অজানা কারণে আর বাস্তবায়ন করা হয়নি।

কর্মবিরতিতে থাকা কর্মচারীরা জানান, সর্বশেষ চলতি বছরের ২০ অক্টোবর অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী করার একটি উদ্যোগের কথা জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ইউজিসি থেকে অনাপত্তিপত্র না দেওয়ার অজুহাতে সেটিও আলোর মুখ দেখেনি। অথচ ইউজিসি চার বছর আগে এসব পদে নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল। এই অবস্থায় কম উপার্জন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করা ৫৮ জন অস্থায়ী কর্মচারী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন তাঁরা।

আন্দোলনকারী কর্মচারী রাসেল আহমেদ ও ইজাজ জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি তাঁরা চালিয়ে যাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ঢামেক প্রতিনিধি
নাভিদকে সোমবার ছাড়পত্র দেন চিকিৎসকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাভিদকে সোমবার ছাড়পত্র দেন চিকিৎসকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ৯৭ দিন পর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ (১৩)। স্কুলটির ৭ম শ্রেণিতে পড়ে সে।

আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা তাকে ছাড়পত্র দেন।

ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল বলেন, ২১ জুলাই এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নাভিদের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সিএমএইচ থেকে পরদিন তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরপর দুইবার তার পরিবারকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল—যে কোনো সময় দুঃসংবাদ আসতে পারে! তবে চিকিৎসকেরা হাল ছাড়েনি। মোট ২২ দিন সে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। যার মধ্যে ১০ দিন রাখা হয়েছিল লাইফ সাপোর্টে। এরপর ৩৫ দিন হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়। এরপর ৪০ দিন কেবিনে থাকার পর আজ তাকে পুরোপুরি সুস্থ ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, নাভিদের মোট ৩৬ বার ছোটবড় অপারেশন হয়েছে। শরীরের ক্ষতস্থানে ত্বক প্রতিস্থাপন হয়েছে আটবার। এই ঘটনার অন্য কোনো দগ্ধ রোগীর এটি লাগেনি।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নাভিদকে যেদিন এখানে নিয়ে আসা হলো, সেদিন সে বারবার বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল। সে বলছিল, আমাকে বাঁচান, আমি কি বাঁচব? দুর্ঘটনায় পুড়ে যাওয়ার পর তার ফুসফুসে পানি জমেছিল। এ জন্য লাইফ সাপোর্টেও উপুড় করে শুইয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। সেখান থেকে সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। এখনো এই ঘটনার ৫ জন দগ্ধ শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছে। তারাও ভালো আছে। সপ্তাহখানেক পর তারাও বাড়িতে চলে যাবে।’

নাভিদের বাবা মিজানুর রহমান চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর কাছে ছেলে ও এই ঘটনায় হতাহতের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

গত ২১ জুলাই দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে আছড়ে পড়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে, আগুনে পুড়ে ও চাপা পড়ে প্রাণ হারায় স্কুলের বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত