Ajker Patrika

‘অ বাজি ইবা কী রাস্তা?’

আকাশ আহমেদ, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম)
‘অ বাজি ইবা কী রাস্তা?’

‘অ বাজি, ইবা কী রাস্তা। জান তো বাইর অই যাইরগুই। এই রাস্তা ঠিক গড়িবার কোন মানুষ-জন নাই এই এলাকাত?’ (বাপরে, এটা কী রাস্তা। জান তো বের হয়ে যাচ্ছে। এই রাস্তা ঠিক করার কোন মানুষ-জন নেই এই এলাকায়?) প্রশ্নটি ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আমিনুল হকের। তিনি গত মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রঘোনার বনগ্রাম থেকে বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছিলেন। রাঙ্গুনিয়ার গোচরা চৌমুহনী ট্যাক্সিস্ট্যান্ড থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে সামান্য এগোতেই একটি বক্স কালভার্ট পার হওয়ার সময় সেটি উল্টে যেতে যেতে কোনোরকমে রক্ষা পায়। এই সময় বুকে হাত দিয়ে লম্বা শ্বাস ফেলতে ফেলতে কথাগুলো বলেন তিনি।

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা-বেতাগী সড়কটি এমনই বেহাল। চলাচলের অনুপযোগী সড়কটি পোমরা ইউনিয়নের গোচরা চৌমুহনী থেকে বেতাগী ইউনিয়নের সমিল ঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার। এই সড়কের প্রথম এক কিলোমিটার বাচাশাহ সড়ক আর বাকি ৯ কিলোমিটার আমান উল্লাহ সড়ক নামে পরিচিত। এই সড়কের পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। অনেক অংশে পানি জমে আছে। ত্রুটিপূর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বালুবাহী ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার পাশ ঘেঁষে পোমরা ইউনিয়নের এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পৌরসভা, সরফভাটা ও বেতাগী ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী উপজেলার ভান্ডারজুড়ি, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ও চরণদ্বীপ ইউনিয়নের হাজারো মানুষ চলাচল করেন। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাচাবাবা (রহ.) ও কাঙ্গালী শাহের (রহ.) মাজার জেয়ারত করতে আসা লোকজনও ব্যবহার করেন এই সড়ক।

বাচাশাহ এলাকার বাসিন্দা নুরুল আজিম জানান, ১০ কিলোমিটারের সড়কের এক-তৃতীয়াংশই ভাঙা। সবচয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে গোচরা চৌমুহনী থেকে রাস্তার শুরুর অংশটা। ২০০ মিটারের মধ্যে ৬টি বড় গর্ত। অল্প বৃষ্টিতেই এই অংশটি জল-কাদায় একাকার হয়ে যায়। তখন পথচারীদের পায়ে চলাও দায় হয়ে পড়ে।

গুনগুনিয়া বেতাগী বালুর চরের বাসিন্দা নঈম উদ্দিন বলেন, সড়কের হাঁড়ভাঙা ডাক্তার বাড়ি, কাঙ্গালী শাহ মাজার গেইট, প্রজেক্ট গেইট, তালুকদার বাড়ি, কাজীর পুকুর, যুগী পাড়া, ওয়াইজ উদ্দীন কেজি স্কুল গেইট, ছড়ার কুল, মীর্জাখীল, বড়ুয়া পাড়াসহ আরো ২০ জায়গায় ভাঙনের কারণে জন ও যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অটোরিকশাচালক মো. সোহেল জানান, রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রায়ই পথিমধ্যে গাড়ি অকেজো হয়ে পড়ে। গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম বলেন, এই সড়কের গোচরা চৌমুহনী থেকে ২০০ মিটার আরসিসি ঢালাইয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।

শিগগির তা শুরু হবে। সড়কের বাকি অংশ আমান উল্লাহ সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছিল প্রায় ৪ বছর আগে। সাধারণত ৩ বছর টেকসই হয়ে থাকে পিচ ঢালাই। ফলে সড়কের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। এ অংশের কাজের প্রকল্প গ্রহণের জন্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চলতি বাজেটে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পালানোর গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় খুন—কীভাবে এক নববধূ হয়ে উঠলেন হত্যাকারী

ভিকারুননিসার ছাত্রী মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে প্রাণ গেল দুজনেরই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত