Ajker Patrika

ফরিদগঞ্জে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতাভোগীর নাম বদল

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ২০: ০৪
ফরিদগঞ্জে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতাভোগীর নাম বদল

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা শহিদ উল্যা (৬৫) সরকারি খাতায় মৃত। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অনলাইনে ইতিমধ্যে তাঁর মৃত্যু সনদও তৈরি হয়েছে। মূলত তাঁর নামে ইস্যু বয়স্ক ভাতার বইটি আরেকজনের নামে স্থানান্তর করতেই এই কাজটি করা হয়েছে। বয়স্ক ভাতার টাকা না পাওয়ার কারণ জানতে গিয়ে তিনি নিজেই এই তথ্য উদ্‌ঘাটন করেন। এখন তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

ভুক্তভোগী শহিদ উল্যার অভিযোগ, ইউপি সদস্য আব্দুল আহাদ জুয়েল এই কাজ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ইউপি সদস্য বলেন, ‘ভুল হয়ে গেছে। ঠিক করে দেব।’

উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের জমাদার বাড়ির মৃত আবদুল আজিজের ছেলে শহিদ উল্যা। ২০১৬ সালে তাঁর নামে বয়স্ক ভাতা চালু হয়। এক মাস আগে ভাতা তুলতে গেলে তাঁকে বলা হয় টাকা জমা হয়নি। স্থানীয় দোকানিও তাঁকে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন।

শহিদ উল্ল্যা বলেন, ভাতার বইতে টাকা জমা না হওয়ায় স্থানীয় দোকানির পরামর্শে তিনি অফিসে যান। সেখানে মাঠকর্মী নুরুন্নবী জানান তাঁর বইতে সমস্যা আছে, এ জন্য টাকা যায়নি। ঠিক করে দেবে বলে তিনি বই রেখে দেন। এরপর তিনি বারবার ওই অফিসে গেলেও তাঁকে বই দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ গত বুধবার সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে চাইলে আগের মতো টালবাহানা করেন নুরুন্নবী। একপর্যায়ে শহিদ উল্যার হাতে বইটি ফিরিয়ে দেন তিনি। এ সময় তিনি জানতে পারেন তিনি মৃত। মারা যাওয়ার কারণে অন্য একজনের নামে তাঁর বইটি স্থানান্তর হয়েছে।

শহিদ উল্যা আরও বলেন, ‘যারা আমার মতো জীবিত মানুষকে মেরে ফেলল তাদের বিচার চাই। আমার বয়স্কভাতা পেতে চাই। আমি এই ভাতার টাকায় ওষুধ কিনতাম। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই। কী অপরাধে মেম্বার জুয়েল আমাকে মরা মানুষ বানিয়ে ফেলল?’

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শহিদ উল্যার নামে মৃত্যু সনদ জমার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সার্ভার থেকে তাঁর নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নির্মল চন্দ্র দাস, পিতা সন্তোষ চন্দ্র দাস, গ্রাম ধানুয়া, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর—এই নাম বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউপি কার্যালয়ের তথ্য কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মিলন রেকর্ড দেখে বলেন, ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর শহিদ উল্যার মৃত্যু সনদের আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আহাদ খান জুয়েল। ওই তারিখেই তিনিই সনদপত্রটি গ্রহণ করেছেন।

গোবিন্দপুর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম শেখ বলেন, ‘৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল আহাদ জুয়েল অনলাইনে আবেদন করে আমার কাছ থেকে মৃত্যু সনদে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আমি তাঁকে বিশ্বাস করেছি। কাজটি ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসের ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠকর্মী নুরুন্নবী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আজই জেনেছি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। ইউপি চেয়ারম্যান মৃত্যু সনদ দিলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী অন্য কারও নামে তা পরিবর্তন করে দিই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত