Ajker Patrika

ভোট না দেওয়ায় ধর্ষণ: সুবর্ণচরের সেই নির্যাতিতার বাড়ি পাহারায় পুলিশ

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০: ৩৮
ভোট না দেওয়ায় ধর্ষণ: সুবর্ণচরের সেই নির্যাতিতার বাড়ি পাহারায় পুলিশ

নৌকায় ভোট না দেওয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে নির্যাতিতা নারীর বাড়িতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে চরজব্বার থানার পুলিশ। 

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরজব্বার থানার পুলিশ পরিদর্শকের (তদন্ত) নেতৃত্বে দুজন পুলিশ পরিদর্শকসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ওই নারীর বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। পুলিশের সঙ্গে ইউপি সদস্য ও নির্যাতিতার স্বামীকে আড্ডা দিতে দেখা গেছে।

এর আগে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ১৬ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. রুহুল আমিন, মো. হাসান আলী বুলু, মো. সোহেল, স্বপন, ইব্রাহীম খলিল, আবুল হোসেন আবু, মো. সালাউদ্দিন, মো. জসীম উদ্দিন, মো. মুরাদ পিতা মো. রফিক ও মো. জামাল হেঙ্জু।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন মো. হানিফ প্রকাশ বাগন আলী, মো. চৌধুরী, মো. বাদশা আলম প্রকাশ কুড়াইলা বাসু, মোশারফ, ও মো. সোহেল। তাঁদের মধ্যে মো. মিন্টু প্রকাশ হেলাল পলাতক। আসামিরা সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলি ইউনিয়নের মধ্যম ব্যাগ্যা গ্রামের বাসিন্দা। 

চরজুবিলি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মঞ্জুর আলম বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে একাধিকবার ওই বাড়িতে গিয়েছি। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে থানা-পুলিশ। পুলিশ ডাকলে আমাকে ভিকটিমের বাড়িতে যেতে হচ্ছে।’ 

চরজব্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘রায় ঘোষণার দিন সকাল থেকে নির্যাতিতার বাড়িতে নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এলাকায় সচেতনতার জন্য জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।’ জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, ‘সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশের নজরদারি থাকবে।’ 

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে (নৌকা) ভোট না দেওয়ায় ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। 

ওই নারী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, চর জুবিলি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমীনের নেতৃত্বে নির্যাতন করা হয়। তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য জোর করেছিল, কিন্তু আমি তাদের কথা না শুনে ধানের শীষে ভোট দিয়েছি।’

ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন প্রচার সম্পাদক (গ্রেপ্তারের পর বহিষ্কৃত) রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহবধূকে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন এ ঘটনায় গ্রেপ্তার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীনের অনুসারী সোহেল। এজাহারনামায় প্রধান আসামি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত