Ajker Patrika

স্বর্ণ ও ইয়াবার বিনিময়ে অনুপ্রবেশ রোহিঙ্গাদের

বান্দরবান প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় সক্রিয় হয়ে উঠছে মানব পাচার চক্র। জানা গেছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে চক্রটি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকাচ্ছে রোহিঙ্গাদের। এতে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে উপজেলাটিতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, উপজেলার স্থানীয় একটি চক্রের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে। স্থানীয় প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে এই চক্রের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়েছে এই জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। তারা দখল করছে পাহাড়ি ভূমি ও শ্রমবাজার।

উপজেলার ৩ নম্বর নয়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা খালেদা বেগম বলেন, রোহিঙ্গাদের আসার কারণে দৈনিক মজুরি কমে গেছে। অনেক রোহিঙ্গা কাজে যোগ দিচ্ছে, তাতে শ্রমমূল্য কমে আসছে। স্থানীয় অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়ছে।

আলীকদম থানা-পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুটি মামলায় মানব পাচার চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, আলীকদমে দুর্গম সীমান্তবর্তী ৫৭ ও ৫৮ পিলার হয়ে স্থানীয় ম্রোদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জেলার আলীকদমে নিয়ে আসছে চক্রটি। এ জন্য জনপ্রতি ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় টাকা না থাকলে স্বর্ণ ও ইয়াবার বিনিময়েও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢোকানো হচ্ছে।

ম্যাচিং মারমা নামের একজন জানান, রোহিঙ্গারা এ দেশের জন্য হুমকি। যে হারে রোহিঙ্গা ঢুকছে, তাতে কয়েক দিন পরে এখানকার সব জায়গা দখল করে বসবে তারা। অনেক জায়গায় তারা বাড়িঘর করে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা বনে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাচারকারী চক্রটি উপজেলার পৌয়ামুহুরী, কুরুকপাতা হয়ে আলীকদমে কালাইয়্যাছড়া, দুংশিখাল, তৈনখাল, মেরিনচর, নয়াপাড়া হয়ে অনুপ্রবেশ করিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানান্তর করছে রোহিঙ্গাদের।

আলীকদমের নয়াপাড়ার বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের আরও কঠোর হতে হবে।’

আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন বলেন, দালাল চক্রের বিষয়ে আলীকদম থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত একটি মামলায় ৭ এবং অন্যটিতে ৫ জন দালাল চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, ‘একটি চক্র রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। বিজিবির, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন তৎপর চালাচ্ছে চক্রটির আরও সদস্যকে ধরতে।’

৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আকিব জাবেদ বলেন, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত (১৫ জানুয়ারি) ৩৯৮ রোহিঙ্গাকে আটক ও পুশব্যাক করা হয়েছে। অন্যদিকে দালাল চক্রের মোট ১২ জন সদস্যকে আটক করে বিজিবি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও পাচারকারী চক্রের আরও সদস্যকে ধরতে বিজিবি প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না, বিস্ফোরক তামিম

কাগজে-কলমে মেয়র হওয়ায় দায়িত্ব পালন করলাম: জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে ইশরাক

এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণায় বিএনপি ও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত