Ajker Patrika

আশানুরূপ পর্যটক আসেনি বান্দরবানে

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২২, ১৮: ৩২
আশানুরূপ পর্যটক আসেনি বান্দরবানে

ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে পর্যটকদের বরণ করে নিতে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের আশা ছিল, বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে মুখর হবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। কিন্তু তাঁদের সে আশায় ভাটা পড়েছে। আশানুরূপ পর্যটক না আসায় হতাশ তাঁরা। লোকসানের আশঙ্কায় বেসরকারি হোটেল, রিসোর্ট মালিকসহ রেস্তোরাঁ ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা।

পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটিতে বান্দরবান জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজানো হয়। কিন্তু ঈদের দ্বিতীয় দিনেও আশানুরূপ পর্যটকের আগমন ঘটেনি। জেলা শহরের হোটেল-রিসোর্টগুলোর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কক্ষ ভাড়া হয়েছে মাত্র। 

বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, সমিতির আওতাধীন হোটেল রিসোর্টগুলোতে ২০ শতাংশের মতো রুম বুকিং হয়েছে। তবে সেটা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে। ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মতো রুম বুকিং হয়েছে আজ (সোমবার) পর্যন্ত।

সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, দ্রব‍্যমূল‍্যের ঊর্ধ্বগতি, অধিকাংশ মানুষের হাতে টাকা না থাকা, বর্ষাকাল এবং পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ায় বান্দরবানে পর্যটক কম আসছেন। তিনি বলেন, পর্যটক কম আসায় হোটেল রিসোর্ট মালিকেরা হতাশ, তাঁরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

পালকি হোটেলের মালিক আলাউদ্দিন শাহরিয়ার আজকের পত্রিকাকে জানান, আজ (সোমবার) পর্যন্ত তাঁর হোটেলে রুম বুকিংয়ের অবস্থা খুবই হতাশাজনক। তিনি বলেন, বিগত সময়ে ঈদের ছুটিতে হোটেল রিসোর্টগুলোর সব রুমই আগাম বুকিং হয়ে যেত। এবার সেটা হয়নি। 

হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, গড়ে হোটেল রিসোর্টগুলোর রুম বুকিং আজ পর্যন্ত ২০ শতাংশের বেশি হবে না। এ আয় দিয়ে ব্যবসা চালানো খুবই কঠিন।

বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দ্রব‍্যমূল‍্যের ঊর্ধ্বগতি, অধিকাংশ মানুষের হাতে টাকা না থাকা, বর্ষাকাল এবং পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ায় বান্দরবানে পর্যটক কম আসছেন।

জেলা প্রশাসন পরিচালিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আদীব বড়ুয়া বলেন, বিগত সময়ে ঈদের ছুটিতে নীলাচলসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র জমজমাট থাকত। ঈদের সময় নীলাচলে গড়ে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার পর্যটক এলেও এবার সে রকম নেই। 

আদীব বড়ুয়া আরও বলেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল চারটা পর্যন্ত নীলাচলে ৭০০’র মতো টিকিট বিক্রি হয়েছে। ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ 

অপরূপ সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যময় জীবন ধারার মাঝে পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক, আর কিছু পর্যটন কেন্দ্র নান্দনিকভাবে গড়ে তোলা। 

বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সদস্য ও হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক মো. জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১২ ও ১৩ জুলাইয়ের জন্য তাঁর হোটেলে ৮/৯টি রুম বুকিং হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাঁর হোটেলে নিয়মিত আসাদের অনেকেই এবার পদ্মা সেতু দেখতে যাবেন বলে বান্দরবানে আসছেন না। 

মাহিন্দ্র চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিগত সময়ে ঈদের আগেও অনেকে গাড়ি বুকিং দিলেও এবার এখনো কেউ গাড়ি বুকিং দেয়নি। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার ভাড়া বেশি পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান অঞ্চলের পুলিশ সুপার আবদুল হালিম বলেন, পর্যটকেরা যাতে বান্দরবানে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ানোতে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম‍্যাজিস্ট্রেট মো. কায়েসুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত