Ajker Patrika

জালিয়াতি করে জমি দখল দীপু মনির ভাইয়ের, দুদকের অনুসন্ধান

চাঁদপুর প্রতিনিধি
হাইমচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে দুদক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাইমচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে দুদক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির বড় ভাই জাওয়াদুর রহিম টিপুসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নে মেঘনা নদীর পশ্চিমে জেগে ওঠা চরের ৪৮ দশমিক ৫২৫ একর জমি জালিয়াতি করে মালিক হওয়া এবং দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে অভিযোগ করা হয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চাঁদপুর কার্যালয়ে।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযোগের বিষয়ে হাইমচর সাবরেজিস্ট্রার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায় দুদক চাঁদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজগর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নীলকমল ইউনিয়নের সোনাপুর, তাজপুর ও বাহেরচর এলাকায় চরের সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে ১৯৭৭-৭৮ সালে উচ্চ আদালতে মামলা হয়। কারণ, জেগে ওঠা এসব চরের জমির কোনো মালিকানা ছিল না। এরপর ১৯৮২ সালে হাতে লেখা জেএল খতিয়ান তৈরি হয়।

ওই জেএলের মধ্যে দাগ ও খতিয়ান কিছুই নেই। তখন সরকারের পক্ষ থেকে এসব জমি কৃষকের আবাদ করার জন্য ব্লক তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই সব ব্লকের মধ্যে যাঁরা আবাদ করেছেন, তাঁরাই সরকারকে খাজনা দিতেন। কিন্তু এসব জমির মালিকানা-সম্পর্কিত কোনো তথ্যই উপজেলা ভূমি অফিসে সংরক্ষিত নেই।

এদিকে জেগে ওঠা এসব চরের জমি দখলের মিশনে নামেন সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাওয়াদুর রহিম টিপু ও তাঁর চক্রের সদস্যরা। তাঁরা এসব জমিতে যাঁরা একসময় আবাদ করতেন, তাঁদের ওয়ারিশদের মালিক বানিয়ে ২০১৯ সালে ৪৮ দশমিক ৫২৫ একর জমি সাফ কবলা দলিল করে মালিক হন। সেখানে গড়ে তোলেন টিপু নগর।

হাইমচর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জালিয়াতি করে কাগজপত্র সৃজন করে এসব জমির মালিক হন জাওয়াদুর রহিম টিপু, নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মুনসর আহমেদ ও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির চাঁদপুর নিয়োজিত প্রতিনিধি অ্যাড. সাইফুদ্দিন বাবু।

জেগে ওঠা চরে যাঁরা আবাদ করতেন, তাঁদের দেওয়া খাজনার কাগজমূলে এসব দলিল কোনো ধরনের বৈধতা ছাড়া সাফ কবলা দলিলে সম্পাদিত হয়। খাজনার ওই কাগজে উল্লেখ করা হয়, শুধু খাজনার জন্য এই রসিদ ব্যবহারযোগ্য। এই রসিদ কোনো মালিকানা নয়। এরপরও ২০১৯ সালে ২১ মার্চ ৩২৫ নম্বর দলিলে ১২.৮০ একর, একই তারিখে ৩২৬ নম্বর দলিলে ৮.৭৫ একর, ২৮ মার্চে ৩৮১ নম্বর দলিলে ৪.৮০ একর, ১১ এপ্রিল ৪১৫ নম্বর দলিলে ১০.৯০ একর, ৩০ মে ৫৪০ নম্বর দলিলে (দানপত্র) ৭.৮০ একর এবং ১৮ জুলাই ৬৮১ নম্বর দলিলে ৬.৪৭৫ একর জমি সাফ কবলা দলিল সম্পাদিত হয় উল্লিখিত ৫ ব্যক্তির নামে।

জানতে চাইলে হাইমচর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার আরিফুর ইসলাম বলেন, ‘আমি ২০২৪ সালের জুন মাসে এই কার্যালয়ে যোগদান করি। আজকে দুদকের একটি টিম ৬টি দলিলের জালিয়াতি-সম্পর্কিত বিষয়ে অনুসন্ধানে আসে। আমি ওই টিমকে সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি। সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

দুদক চাঁদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজগর হোসেন বলেন, সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কাগজপত্র অনুসন্ধান করে দুর্নীতির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আরও কাগজপত্র সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হবে। প্রতিবেদন তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর পরে নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সঠিক সময়ে নির্বাচন না হলে দেশে মার্শাল ল হবে: নাগরিক ঐক্যের মান্না

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত