Ajker Patrika

ব্রাহ্মণপাড়ায় সড়কে খানাখন্দ, দুর্ঘটনায় পথচারীরা

মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) 
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৩: ৫১
ব্রাহ্মণপাড়ায় সড়কে খানাখন্দ, দুর্ঘটনায় পথচারীরা

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদর এলাকায় কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের দশা বেহাল। খানাখন্দে ভরে গেছে এই সড়ক। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে। এতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা। 

অনেক দিন ধরে কুমিল্লা-মিরপুর সড়ক সংস্কার না হওয়ায় এবং যাতায়াতে ভোগান্তি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু হবে। 

স্থানীয় লোকজন জানান, কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের ব্রাহ্মণপাড়া কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকা থেকে শুরু হয়ে টাটেরা এলাকা পর্যন্ত সড়কের দশা বেহাল। হেঁটেও এই সড়কে তাঁরা চলাচল করতে পারেন না। যত্রতত্র খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় উল্টে পড়ে রিকশা-ভ্যানের মতো ছোট গাড়ি। সড়কের জীর্ণ দশার কারণে যানবাহনে যাতায়াতে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। 

সড়ক দিয়ে চলার সময় দুর্ঘটনার শিকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক কামাল হোসেন বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আড়ত থেকে কলা নিয়ে ফিরছিলাম। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এলাকায় সামনের দিক থেকে আসা একটি ভ্যানকে জায়গা দিতে গেলে সড়কের ভাঙা অংশে চাকা পড়ে উল্টে যায় আমার অটোরিকশা। এ সময় আহত হই আমি।’ 

অটোরিকশা উল্টে আহত হওয়া জেসমিন আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমরা এই সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া বাজারে গতকাল আসার পথে শিশু মাতৃ হাসপাতালের সামনে এলে গর্তে পড়ে অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় আমিসহ অটোরিকশার অন্য যাত্রীরা আহত হই।’ 

মোটরসাইকেলচালক গোলাম রাব্বি বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তায় রয়েছে অসংখ্য পাথরের টুকরো। এসবের ওপর চাকা উঠলেই মোটরসাইকেল পিছলে যায়। সামনে তাকাব, না নিচে দেখব ভাবতে ভাবতে পড়ি দুর্ঘটনায়।’ 

কুমিল্লা-মিরপুর সড়কে উল্টে যাওয়া অটোরিকশা। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকাকয়েকজন অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যানচালক বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। রাস্তার কারণে গাড়ির পেছনে যত খরচ হয়, তাতে আমাদের পরিবার নিয়ে দুবেলা দুমুঠো খাওয়াই কঠিন। সরকারের কাছে এই সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই। 

ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান ইমন বলে, ‘বাড়ি থেকে বিদ্যালয় মাত্র এক কিলোমিটার দূরে হওয়ায় হেঁটেই যাতায়াত করি। কিন্তু সড়ক দিয়ে ঠিকমতো হাঁটাই যায় না। আর বর্ষার সময় তো পানি, কাদা মেখে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।’ 

প্রফেসর সেকান্দর আলী ভূঁইয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘মূল সড়কের পাশেই বিদ্যালয়টির অবস্থান। বাচ্চারা খুবই ঝুঁকির মধ্যে আসা-যাওয়া করে। আমরাও ভয়ে থাকি কখন কী দুর্ঘটনা ঘটে।’ 

সড়কের পাশের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, ‘সড়কটি যদি সংস্কার করা না হয়, তবে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনাও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানাই।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ড্রেনের আউটলেট প্ল্যান নিয়ে পরিকল্পনা করে আমাদের জানাবেন। অল্প সময়ের মধ্যে সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ ভাঙাচোরা এলাকা সংস্কার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত