Ajker Patrika

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে প্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ২২: ৫০
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে প্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে

ঘন বনের ভেতরে বাঘ সিংহের গর্জন। সরু সড়কে বানরের লাফালাফি, একটু এগোলেই চিত্রা হরিণের পাল, আর পাশেই জলহস্তীর বিচরণ। হাতির পিঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। এ দৃশ্য কক্সবাজার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের।  

পার্কে বর্তমানে আবদ্ধ অবস্থায় ১৯টি বেষ্টনীতে আছে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, ময়ূর, অজগর, কচ্ছপ, জলহস্তী, কুমির, হাতি, ভালুক, কাক ধনেশ, হরিণ, লামচিতা, শকুন, রাজ ধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙ্গিলা বক, সারস, কাস্তে চরা, মথুরা, নিশিবক, কানিবক, বন গরুসহ ৫২ প্রজাতির ৩৪১টি প্রাণী। উন্মুক্ত আছে ১২৩ প্রজাতির ১ হাজার ৬৫টি প্রাণী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুইসাপ, শজারু, মার্বেল ক্যাট, বাগডাশ, গোল্ডেন ক্যাট, খ্যাঁকশিয়াল, ফিশিং ক্যাট ও বনরুই। 

গত দেড় বছরে পার্কে প্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে। উটপাখি, ওয়াইল্ড বিস্ট, জেব্রা, হরিণ, ময়ূর বাচ্চা দিয়েছে। বর্তমানে পার্কের জেব্রার ঘরে দুটি নতুন অতিথি এসেছে। আগে পার্কে জেব্রা ছিল ছয়টি। ওয়াইল্ড বিস্ট বাচ্চা দিয়েছে দুটি। নতুন দশটি বাচ্চা দিয়েছে ময়ূর, এখন পার্কে ময়ূর আছে ২৯ টি। তিন একর বেষ্টনীতে এখন হরিণ আছে ২০ টি। 

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। ছবি: আজকের পত্রিকাসম্প্রতি তিনটি হরিণ বাচ্চা দিয়েছে। এর মধ্যে চিত্রা হরিণ ১৬টি ও মায়া হরিণ চারটি। কিছুদিন আগে আরও ৫০টি চিত্রা হরিণ পার্কে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া পার্কের উন্মুক্ত বনাঞ্চলে ৪০০-৫০০ চিত্রা ও মায়া হরিণ রয়েছে। বর্তমানে পার্কে চারটি বাঘ ও তিনটি সিংহ আছে। 

অন্যদিকে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে চারটি সিংহ ও দুটি হাতি মারা যায়। এর মধ্যে তিনটি সিংহ ও সিংহীর আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গিয়েছিল। দুটি হাতির একটি আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে মারা যায়। অন্যটি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। এর মধ্যে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৮৬ বছর বয়সী হাতি রঙমালার পিত্তথলিতে আড়াই কেজি ওজনের পাথর জমে এবং ৩২ বছর বয়সী ‘সৈকত বাহাদুর’ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই বছরের ২৮ নভেম্বর মারা যায়। 

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা মারা যায়। ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ও ২২ এপ্রিল সিংহী নদী ও সোহেল মারা যায়। চারটি সিংহের মধ্যে তিনটি আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে মারা গেছে। অন্যটি অসুস্থ হয়ে মারা যায়। 

এ বিষয়ে পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর পার্কে ৩৫-৪০ জাতের প্রাণীর প্রজনন হয়েছে। উট পাখির ডিম ফুটে বাচ্চা হয়েছে। হরিণের প্রজননও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পার্কের উন্মুক্ত বনের ভেতর শত শত হরিণ রয়েছে। সম্প্রতি ময়ূর দশটি বাচ্চা দিয়েছে।’ 

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। ছবি: আজকের পত্রিকাতিনি আরও বলেন, ‘পার্কে বনমোরগের সংখ্যা এক হাজারেও অধিক হবে। বিকেলে জেব্রা বেষ্টনীর দিকে গেলে শত শত বনমোরগ দেখা মিলবে। এতে দর্শনার্থীরা খুবই আনন্দ পায়। পার্কে উন্নয়নকাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে পার্কের চেহারা পাল্টে যাবে।’

উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘বনের ভেতর গড়ে তোলা দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণীর ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশগত কারণে প্রজনন হার বেশি হয়। প্রাণীরা পুষ্টির চাহিদা, আবাসস্থল, প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে ফেলে প্রজনন বৃদ্ধি পায়। যে কোনো বন্যপ্রাণী নির্দিষ্ট বয়সের পর প্রজনন কমে যায়।’ 

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকৃতিতে একটি সিংহ ১৫-১৮ বছর বেঁচে থাকে। দীর্ঘদিন সিংহগুলো অসুস্থ ছিল, পার্কের যেসব সিংহের বয়স হয়েছিল ১৫-২২ বছর। ৮৬ বছর বয়সী হাতি রঙমালা মারা গিয়েছিল। প্রাণীগুলোর আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গিয়েছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

কারাগারে কয়েদিদের সঙ্গে আ.লীগ নেতাদের হাতাহাতির অভিযোগ

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত