Ajker Patrika

নালায় পড়ে শিশুর মৃত্যু: সিডিএ-চসিকের গাফিলতি খতিয়ে দেখছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক ,চট্টগ্রাম
নালায় পড়ে শিশুর মৃত্যু: সিডিএ-চসিকের গাফিলতি খতিয়ে দেখছে দুদক

চট্টগ্রামে কাপাসগোলায় উন্মুক্ত নালায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ পড়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) কোনো গাফিলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে কার্যালয় দুটির বিষয়ে তদন্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল রোববার দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২-এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল প্রথমে নগরীর কোতোয়ালির মোড়ে অবস্থিত সিডিএ ভবন এবং পরে টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ সময় দুদক কর্মকর্তারা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

সিডিএ ভবনে দুদকের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্প্রতি খালে (নালায়) পড়ে একটি বাচ্চা মারা গেছে। এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও সিডিএর কোনো দায়দায়িত্ব আছে কি না, মূলত আমরা সেটি যাচাই করছি। আমরা সিডিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। সিডিএর কাজের আওতায় ৩৬টি খাল আছে। ইতিমধ্যে ১৯টি খালের কাজ তাঁরা সমাপ্ত করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘যে হিজড়া খালে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই খালে সিডিএ মাত্র কাজটা শুরু করেছে। যেসব খালের কাজ উনারা সম্পন্ন করেছে, সেগুলোর তীরে উনারা রেলিং দিয়েছে বলে জানিয়েছে। আমরা সরেজমিনে সেটা দেখব। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানেও যাব। আমরা প্রকল্পের যে নকশা পেয়েছি, সেখানে রেলিংয়ের বিষয়টি উল্লেখ আছে। কিন্তু তারা কতটুকু কাজ করেছে, সেটা সরেজমিনে দেখব।’ তবে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় সিডিএ কেন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি, সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান এ দুদক কর্মকর্তা।

একই সময় সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদকের নিয়মিত একটা পর্যবেক্ষণ থাকে। শুধু সিডিএ নয়, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় যায়, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে, এটা তাদের নিয়মিত কাজের অংশ। সে হিসেবে দুদকের একটি দল আমাদের এখানে এসেছিল। আমরা যে জলাবদ্ধতা প্রকল্পটি করছি, সেই প্রকল্পের বিষয়ে তারা কিছু তথ্য আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে যে সেখানে কোনো প্রোটেকশনের ব্যবস্থা আমরা করেছি কিনা। যেসব খালের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, সেসব খালে আমরা প্রোটেকশনের ব্যবস্থা নিয়েছি, প্রকল্প অনুযায়ী সবটিতে দেড় থেকে দুই ফুট করে রেলিং দেওয়া আছে। আমরা এ বিষয়টি জানিয়েছি।’

জানা যায়, এরপর দুদকের দল চসিক ভবনে যায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বৃষ্টির মধ্যে নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলায় হিজড়া খালসংলগ্ন নালায় অটোরিকশা পড়ে যায়। অটোরিকশায় তখন মায়ের কোলে ছয় মাস বয়সী শিশুসহ তিন যাত্রী ছিলেন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করলেও তলিয়ে যায় শিশুটি। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর ৫ কিলোমিটার দূরে চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত