Ajker Patrika

যে রাস্তায় হাঁটাও দায়

মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান অলি, পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২২, ০১: ২৩
যে রাস্তায় হাঁটাও দায়

সাত কিলোমিটারের রাস্তার বেশির ভাগই কাদা-পানি। দেখে মনে হয় চষা জমি। মাঝেমধ্যে কিছু অংশ জানান দেয় ইটের সলিংয়ের কথা। যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও কষ্টকর। প্রায় এক যুগ ধরে এমন অবস্থা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার হাসপাতাল সড়ক হয়ে ৩ নম্বর সদর ইউনিয়নের গ্রাম ছনটিলার রাস্তার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়, কিন্তু এ রাস্তার কোনো পরিবর্তন হয় না। ভোট এলে সবাই প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু ভোট চলে গেলে এ রাস্তার কথা কেউ মনে রাখেন না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাত কিলোমিটারের রাস্তা পাড়ি দিতে বিভিন্ন যানবাহনে জনপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা ভাড়া দিতে হয় স্থানীয়দের। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জিপ, মোটরসাইকেলসহ ট্রাকও চলাচল করে এই বেহাল রাস্তায়। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। অনেকে এই ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যান।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ১৯৯৮-৯৯ সালে রাস্তাটিতে ইটের সলিং করা হয়। এর এক যুগ পার হলেও আংশিক সংস্কার করার পর বড় একটি অংশ বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। পুরোনো এ রাস্তাটি দিয়ে আলী চরণপাড়া, কালানাল, আমতলী, ছনটিলাসহ আট গ্রামের মানুষের যাতায়াত। রাস্তার এ অবস্থায় অনেকেই হেঁটে পাড়ি দেন এই দীর্ঘপথ। সাত কিলোমিটারের এ রাস্তা দিয়ে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও একটি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। আবার আট গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিনিয়র মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও এ রাস্তা দায়েই সদরে যেতে হয়। রাস্তার অবস্থা এমন যে মাঝেমধ্যে পোশাক পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় কৃষক সাহেব আলী বলেন, সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এলাকার উৎপাদিত শাকসবজি ও কৃষিপণ্য পাশের চেঙ্গী বাজারে ও পানছড়ি সদর বাজারে নেওয়া সম্ভব হয় না। বিকল্প রাস্তাও নেই। উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে গেলে ব্যয় বেড়ে যায়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব বলেন, তাঁদের পার্বত্যাঞ্চলের বসবাসকারী লোকজনের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে যোগাযোগব্যবস্থা সুদৃঢ় করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এ রাস্তাটিসহ ৯টি রাস্তার কাজের জন্য ২০১৮ সালে চিঠি দিয়েছেন। কেন এখনো রাস্তাটির কাজ হচ্ছে না তা ভাবনার বিষয়।

পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উচিত মনি চাকমা বলেন, তিনি নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক ও অনুন্নত অবস্থায় আছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াত ও জীবনমান পরিবর্তনে কাজ করার জন্য বরাদ্দ দরকার। ছনটিলা রাস্তার বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী অরুণ কুমার দাশ বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ২০১৮ সালের শেষ দিকে ৯টি রাস্তার নাজুক অবস্থার কথা উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছেন। তার মধ্যে এটি ১ নম্বরে ছিল। বিভিন্ন কারণে বাকি রাস্তাগুলোর কাজ হলেও হাসপাতাল সড়ক হয়ে ছনটিলার রাস্তাটির কাজ হয়নি। এবার আবার আবেদন এলে এ রাস্তাটি অগ্রাধিকার পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত