Ajker Patrika

মুক্তিপণ না পেয়ে অপহৃত রোহিঙ্গা শিশুকে হত্যা, খোঁজ নেই লোহাগাড়ার যুবকের

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে অপহরণের দুই দিন পর মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৭) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার ২৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশের খাল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুটিকে হত্যা করে বলে পুলিশ ধারণা করছে।

এদিকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা থেকে কক্সবাজারে আসার পথে অপহৃত তরুণ রিয়াজুল হাসান (১৮) ছয় দিনেও উদ্ধার হননি। তিনি লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়নের চরম্বা পদ্মশিখিলের বাসিন্দা ফেরদৌস আলমের ছেলে।

টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় জানান, হত্যার শিকার শিশু আবদুল্লাহ একই ক্যাম্পের ‘সি’ ব্লকের হামিদ হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিখোঁজ হয় শিশুটি। এরপর অজ্ঞাতনামা স্থান থেকে মোবাইল ফোনে শিশুর বাবাকে কল করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা না দিলে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে অপহরণকারীরা শিশুটিকে হত্যা করে লাশ খালের পানিতে ভাসিয়ে দেয়।

হিমেল রায় জানান, আজ রোববার ভোরে স্থানীয় লোকজন লেদা খালে শিশুর লাশ ভাসতে দেখে তার পরিবারকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এদিকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার আসার পথে অপহৃত তরুণ রিয়াজুল হাসানের বাবার নাম ফেরদৌস আলম। তিনি গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হন।

ফেরদৌস আলম জানান, গত রোজার ঈদের আগে রিয়াজুল রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে কক্সবাজারে একটি দোকানে চাকরি নেন। গত কোরবানির ঈদের আগের দিন তিনি বাড়িতে আসেন। গত মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন। পরে রিয়াজুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল দিয়ে এক ব্যক্তি জানান, ছেলেকে জীবিত পাওয়ার ইচ্ছা থাকলে পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে হবে। অন্যথায় ছেলের লাশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হুমকি দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফেরদৌস আলম।

ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মারধর করে তাঁর আর্তনাদ ফোনে শোনানো হচ্ছে। অপহরণকারীরা এখন এক লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেবে বলে জানাচ্ছে। কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য নেই। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বারবার যাচ্ছি। কিন্তু ছেলে উদ্ধার হচ্ছে না। যেকোনো মুহূর্তে ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে পারে।’

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় বলেন, ‘লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার আসার পথে অপহৃত তরুণকে উদ্ধারে পুলিশ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ফোন নম্বরটির সর্বশেষ অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জে। পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে।’

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপহৃত রিয়াজুল কক্সবাজারে চাকরি করতেন। তাঁর নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি হয়েছে। তাৎক্ষণিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর অবস্থান টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় শনাক্ত হওয়ায় উদ্ধারে সহায়তা করার জন্য টেকনাফ থানার ওসির কাছে বার্তা পাঠিয়েছি। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত