Ajker Patrika

হাতিয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ত্রুটি, বেপরোয়া লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি

ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী) 
ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র লোডশেডিং হাতিয়ায়। দেশ এনার্জি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর তদারক করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র লোডশেডিং হাতিয়ায়। দেশ এনার্জি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর তদারক করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে অনেক গুণ। সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি এমনকি গভীর রাতেও বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। এতে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা দুষছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিভাগকে। কিন্তু পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়া তদারকি করছে দেশ এনার্জি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত হাতিয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। মাঝে মাঝে এলেও ১০–১৫ মিনিটের মধ্যেই চলে যাচ্ছে। এটি হাতিয়া উপজেলা সদর ওচখালীর চিত্র। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা হাতিয়া বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানতে চান। সেখানেও দেখা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়টিও অন্ধকারে ডুবে আছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় পুরো উপজেলায় অন্ধকার নেমে এসেছে।

সরকার ৬৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন প্রকল্প’ গ্রহণ করে। এর আওতায় উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে হরেন্দ্র মার্কেট এলাকায় নির্মাণ করা হয় ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ২০২১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। তবে এক বছরের মাথায় ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শুরু হয়েছে ভোগান্তি।

উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘দেশ এনার্জি’। সরকার এখানে শুধু সরবরাহ অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। ফলে লোডশেডিং বা উৎপাদন বিঘ্নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কার্যত ‘জিম্মি’।

হাতিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম (৫০) বলেন, ‘নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে সবাই আশাবাদী ছিল। কিন্তু এখন লোডশেডিং এমন পর্যায়ে গেছে যে, ছেলেমেয়েরা পরীক্ষার আগে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। ভোগান্তির শেষ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে অনেকে ভাবত, বিদ্যুৎ বিভাগ ইচ্ছা করে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে। কিন্তু এখন তো দেখছি পুরোটা দেশ এনার্জির হাতে। তারা যেমন খুশি তেমনি চালায়।’

হাতিয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, ‘গ্রাহকেরা এখনো আমাদের ওপর দোষ চাপান, অথচ উৎপাদন পুরোপুরি বেসরকারি কোম্পানির হাতে। আমরা চাইলে চালাতেও পারি না, বন্ধ করতেও পারি না।’

ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র লোডশেডিং হাতিয়ায়। দেশ এনার্জি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর তদারক করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র লোডশেডিং হাতিয়ায়। দেশ এনার্জি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর তদারক করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এনার্জির সঙ্গে ৫ হাজার কিলোওয়াট সরবরাহ চুক্তি হলেও তখন গ্রাহকের চাহিদা ছিল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ কিলোওয়াট। এখন সেই চাহিদা ৫ হাজার কিলোওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। ওরা অতিরিক্ত লোডের অজুহাতে ইঞ্জিন বন্ধ রাখে। এতে আমরাও বিব্রত, অপমানিত হচ্ছি।’

দেশ এনার্জি কোম্পানির হাতিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইনচার্জ মাহফুজ রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিন জ্বালানি তেলের সংকট ছিল। এখন সরবরাহ এসেছে। তবে একটি ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই সেটি ঠিক হয়ে যাবে।’

তিনি দাবি করেন, ‘লোডশেডিং শুধু আমাদের কারণে হচ্ছে না। তবে চেষ্টা করছি সমস্যা দ্রুত সমাধানের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি নেত্রী শাহনাজ আটক

অপারেশন সিঁদুরে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার হচ্ছেন ভারতের র-এর প্রধান

পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা জানবেন না কে তাঁর এমপি, এটি বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত: সালাহউদ্দিন

নীলফামারীতে 'আটক' কুমিল্লার দুই সাংবাদিক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত