Ajker Patrika

দুই দপ্তরের ঠেলাঠেলিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ধান পড়েনি গুদামে

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১০: ৫৫
দুই দপ্তরের ঠেলাঠেলিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ধান পড়েনি গুদামে

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এবারের ভরা মৌসুমে সরকারের খাদ্যগুদামে কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও খাদ্য কার্যালয়ের অবহেলার কারণে কৃষকেরা গুদামে কোনো ধান বিক্রি করেননি। কৃষকেরা গত বছর ২০ টন ধান বিক্রি করেছিলেন। 

তবে খাদ্য বিভাগ বলছে, বাজারের তুলনায় সরকারনির্ধারিত মূল্য কম থাকায় কৃষকেরা গুদামে ধান বিক্রি করেননি। 

অভিযোগ উঠেছে, কৃষি ও খাদ্য কর্মকর্তারা কৃষকদের কাছে ধান বিক্রির সংবাদ না পৌঁছানোর কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

উপজেলা খাদ্যগুদাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে ৬০০ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান কেনার নির্ধারিত সময় ছিল। 

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে কৃষকদের তালিকা অনুযায়ী উপজেলা ধান ক্রয় কমিটি লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করত। ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে কৃষি অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক নির্ধারণ করার নিয়ম চালু হয়। 

এই নিয়ম চালু করা হলেও কৃষকেরা অ্যাপস সম্পর্কে কোনো ধারণা বা প্রশিক্ষণ না পাওয়ার কারণে অ্যাপসের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। 

কৃষি কার্যালয়ের দাবি, তারা শুধু কৃষকের তালিকা খাদ্য কর্মকর্তাদের কাছে পাঠায়। তাঁরাই কৃষক নির্বাচিত করবেন, কোন কৃষকের কাছ থেকে গুদামে ধান কিনবেন। তবে কৃষি কার্যালয়ের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন খাদ্য কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। তাঁর দাবি, উপজেলা ধান ক্রয় কমিটিই নির্বাচন করবে, কোন কৃষক গুদামে ধান বিক্রি করতে পারবেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষকেরা ধান বিক্রির জন্য আবেদন করবেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রয় কমিটির সভাপতি কৃষক নির্বাচিত করবেন। 

খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি অ্যাপসের মাধ্যমে ২২ জন কৃষক আবেদন করে নির্বাচিত হন। সে বছর ২২ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবারের মৌসুমে ৮৬ জন কৃষক কৃষি অ্যাপসের মাধ্যমে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করলেও কোনো কৃষকই ধান বিক্রি করেননি। 

কৃষকের দাবি, সরকার ডিজিটাল অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করার নিয়ম করলেও এ বিষয়ে কৃষি অফিস অথবা খাদ্য কার্যালয় কৃষকদের কোনো সহযোগিতা করেনি। নিয়ম না বোঝার কারণে তাঁরা কোনো আবেদন করতে পারেননি। 

আমির হোসেন মজুমদার নামে এক কৃষক বলেন, ‘গত দুই বছর ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষক নির্বাচন করা হচ্ছে। এ ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে না; এ কারণে আমরা তালিকাভুক্ত হতে পারিনি।’ 

উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, কৃষক সরকারের দেওয়া মূল্যের চেয়ে খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় তাঁরা গুদামে কোনো ধান বিক্রি করেননি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন বলেন, ‘আমাদের শুধু কৃষকদের তালিকা খাদ্য কার্যালয়ে পাঠানোর দায়িত্ব। কৃষক নির্বাচিত করবে খাদ্য কার্যালয়, আমাদের না।’ 

খাদ্য কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘ধান সংগ্রহ এবং কৃষকের বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব কৃষি কার্যালয়ের। আমরা শুধু তালিকা অনুযায়ী কৃষকদের থেকে ধান-চাল কেনার দায়িত্ব পালন করে থাকি।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। ধান কেন ক্রয়শূন্য রয়েছে, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত